দ্যা ভ্যাকেশান
মাইদুর রহমান রুবেল
প্রথমাংশ:
ড্রইংরুমে বসে কার্টুন নেটওয়ার্কে টম এন্ড জেরি দেখছে মাখন লাল। এদিকে ফটিকের বন্ধুরা এসেছে তার বাসায়। ফটিক তার বন্ধুদের নিয়ে নাইন এক্সএম দেখবে। মাখন লালকে ফকিট বলে তুই বাইওে যা আমরা টিভি দেখবো। মনে হলো মাখন লালের কর্ন কুহরে প্রবেশ করলো না ফটিকের এই কথা। সে তার মতো করে কার্টুন দেখছে। আরো একবার বলার পরের মাখন ফটিকের কথা কানে তুলেলোনা। এবার ফটিক তার বন্ধুদের নিয়ে ফন্দি আটলো কিভাবে তাকে সরানো যায়। মাখন ডিভাইডারে হেলান দিয়ে বেশ আয়েশ কওে কার্টুন দেখছিল। ফটিক তার বন্ধু সমেত চারদিক থেকে ডিভাইডারটি আলগি করে ফেলে দিলো মাখনকে।
মাখন কাঁদছে। মার হাতে মার খেতে হবে সে ভয়ে ফটির ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যায় বাসা থেকে। মাখন কাঁদতে মায়ের ঘরে গিয়ে হাজির। মা বলছে, কি হয়েছে মাখন, কে মেরেছে? ফটকায় মেরেছে। েেপ গেলে মাখন ফটিকটে ফটকা বলে সম্ভোধন করে। মা কাজের ছেলে রতনকে ডাকছে। বলছে যা ফটিককে ধরে নিয়ে আয়। যেখান থেকে পারিস।
রতন বসে আসে স্টেশনে। এর মধ্যে আধা কাঁচা আধা পাকা গোফ ওয়ালা এক লোক রেল থেকে নেমে পিচ্ছি এই ছেলেটাকে দেখে বলে বিসম্বর বাবুদের বাড়ীটা কোন দিকে। ফটিক আকাশের দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলে ঐ দিকে। আমি জানি নাকি।
ফটিক রেল গেটে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতেছে। এসময় রতন এসে ফটিককে ধরে বলে চলুন বাড়ী যেতে হবে। রতন পালানোর চেষ্ঠা করে। রতন ফটিককে চেং দোলা করে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ীর দিকে। ফটিক চিৎকার করছে আমাকে ছেড়েদে না হয় তোর মাথা ফাটিয়ে দেব। রতন নাছোর বান্দা ধরে নিয়ে যাবেই। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। চেং দোলা করে ফাটে নিয়ে এসেছে ফটিককে। এবার রতনের সাথে যোগ হয়েছে ফাটের সিকিউরিটিও। দু’জন ধরে লিফটে করে চৌদ্দ তলায় নিয়ে আসে।
মাখনকে কেন মেরেছে তা জানতে চায় ফটিকের মা। ফটিক কোন উত্তর দিতে পারেনি। মা বকাঝকা করে চলে যায়। মার কাছে নালিশ করার অপরাধে ফটিককে আবার মারতে যায় ফটিক। বাধা দেয় মা।
এর মধ্যে সেই কাচাপাকা গোফওয়ালা লোকটি এসে হাজির হয় ফটিকদের ফাটে। হাতে বিদেশি কিছু খাবারের প্যাকেট।
রাতে খেতে বসে ফটিকের মামা বিসম্বর বাবু ভাগনেদের খোজ নেন। ফটিকের মা অভিযোগ করে বলে ওর বাবা নেই, ফটিককে নিয়ে অনেক আশা ভরসা তার কিন্তু ছেলে কোন কথা শোনে না। দাদার কাছে পরামর্শ চাইলে কোলকাতায় তাকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। অনেক ভেবে চিন্তে মা রাজি হয়। ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে।
দ্বিতীয়াংশ:
কোলকাতায় যাওয়ার খবর শুনে খুশিতে আত্মহারা ফটিক। সে পাড়া ঘুরে দাবড়ে বেড়াচ্ছে আর বলছে আমি কাল কোলকাতা যাচ্ছি। বন্ধূদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে বিদায় নিয়েছে সে। তার যেন খুশি ধরে না আর। বাসায় ফিরে দেখে ছোটভাই মাখন তার খেলনা নিয়ে বসে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। তার ল্যাপটপ, গিটার, মনিপুলি, দাবা, লুডু, ঘুরি, নাটাই, মার্বেল নিয়ে কি যেন ভাবছে মাখন। অন্যসময় মাখন ফটিকের এসব জিনিস ধরলে মেরে ফাটিয়ে ফেলতেন সে। কিন্তু আজ আর তা করছে না। বরং সোহাগ করে বলছে কি ভাবছিস? আজ থেকে এসব তোর । তুই এসব নিয়ে খেলা করবি। আমি ফিরলে আমাকে দিবি।
তৃতীয়াংশ:
যে আগ্রহ কিংবা কৌতহল নিয়ে ফটিক কোলকাতা এসেছে ঠিক সে রকম নয় কোলকাতা। এখন মনে হচ্ছে আশা ভঙ্গ হয়েছে তার। কোলকাতার পরিবেশ এতো ভালো না বাংলাদেশের মতো। কোথাও কোথাও বাংলাদেশ থেকেও খারাপ। তাছাড়া মামা যতটা আদর করে মামী ততটাই খেট খেট করে। সে বলে তার ছেলে পেলেদের মানুষ করতেই তার হিমশিম খেতে হয়। তার উপর এক্সট্রা ঝামেলা বলে মনে করেন তিনি।
কোলকাতা এসে অনেকটা বেখেয়ালী হয়ে পড়ে ফটিক। অপরিচিত পরিবেশ। কাউকে চিনে না। মামাতো ভাইরা তাকে খুব ভালো ভাবে নেয়না। এর কারন মামীর ভয়ে মামাতোভাইরা কাছে ভিরে কম। স্কুলে পড়ালেখার চাপ একটু বেশি। অপরিচিত পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারছেনা সে। একা একা হেটে হেটে কান্ত হয়ে একটি ভাঙ্গা বাড়ীর পাশে বসে সে। এক সময় বেখেয়ালী হয়ে বই রেখে চলে আসে সে।
শেষাংশ :
বই হারিয়ে আজ কাসে টিচারের মার খেয়ে বাসায় ফেরেনি ফটিক। লজ্জা ভয় আর সংকোচে বাসায় ফেরেনি সে। একটি পরিত্যাক্ত বাড়ীর পাশে বসে ঝিমাতে ঝিমাতে খানিকটা ঘুমিয়ে পড়েছে সে। এর মধ্যে টহলরত র্যাব দেখতে পেল তাকে, প্রথমে ক্রিমিনাল মনে করলেও, কাছে এসে দেখতে পায় ১২/১৩ বছরের বাচ্চা শিশু। তারপর তাকে বাসায় ফিরিয়ে দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয় র্যাব। ফটিকের মামাকে পথে পেয়ে তার কাছে ফটিককে হস্তান্তর করে র্যাব।
ফটিকের গায়ে প্রচন্ড জ্বর। ফটিকের মামী অনেকন মাথায় পানি ডেলেও মাথা ঠান্ডা করতে পারছেনা। ফটিক বিরবির করে বলছে এক পা মেলেনা। দু পা মেলেনা। মামা আমি বাড়ী যাব, মায়ের কাছে যাবো। মামা বলে এইতো সামনে ঈদ, তার পর পুজো, ছুটি হলেই তোকে গ্রামে দিয়ে আসবো। ভাগনের এ অবস্থা দেখে ফটিকের মামা ফোন করেছে তার ডাক্তার বন্ধুকে। ডাক্তার বন্ধুর পরামর্শে ফার্মেসি থেকে দুটো সাবোজিটর কিনে আনে। এবং পায়ুপথ দিয়ে প্রবেশ করায়। আট ঘন্টা অন্তর দুটো সাবোজিট প্রবেশের পর ফটিকের জ্বরের মাত্রা কমতে থাকে।
ফটিকের মামার ফোন পেয়ে সকাল হতে না হতে বাসায় হাজির হয়েছে ফটিকের মা। সকালে জ্বর আবার বেড়ে যাওয়ায় কিনিকে ভর্তি করা হয় ফটিককে। কিনিকে স্যালাইন ্আর সাবোজিট দিয়ে রাখা হয়েছে ফটিককে। তিনদিনে আরো ৪ টি সাবোজিটর দেয়া হয়েছে ফটিককে। ডেঙ্গু আতঙ্কে ডাক্তাররা ফটিকের কয়েকটি ব্লাড টেস্ট করেছে। না, পরীায় ডেঙ্গুর ভাইরাস পাওয়া যায়নি। আশংঙ্কা মুক্ত ফটিক।
:বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছুটি গল্পের সিক্যুয়াল।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




