“দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহন কর”। ১৪০০ বছর আগে নবীজি আমাদের এই কথা বলিয়া গিয়াছেন। আমরা চাই বা না চাই প্রতিনিয়ত নানা রকমের “শিক্ষা” গ্রহন করিয়া চলিয়াছি। যেমন আজকে আমি নতুন একখানা শিক্ষা গ্রহন করিলাম।
আমার অফিসে অনেক রুপবতীদের মধ্যে এক রুপবতী মালয়শিয়ান আছে (২ সপ্তাহ হইল আমি একখানা সেমি চাকরী পাইয়াছি। সেমি চাকরী বলিলাম কারণ এখনও ট্রেনিং চলিতেছে। ট্রেনিং শেষ হবার পর চাকরী থাকে কিনা বা ওই পর্যন্ত আমার নিজেরই ধৈর্য থাকে কিনা তা এখনও বলিতে পারিতেছি না)। তো গত ২ সপ্তাহ ধরে ওই মেয়ের সাথে হায় হ্যালো চলিতেছিল। আজকে লাঞ্চের সময় ভাবলাম তাহার সাথে গল্প-গুজব করি। হাজার হোক কলিগ বলে কথা, তার উপর রুপবতী কলিগ, চেনা জানা থাকা প্রয়োজন।
কিন্তু সমস্যা একখানা বাধিয়া গেল। সে আবার ভালো ইংরেজী বলিতে পারে না (অবশ্য আজ পর্যন্ত কোন মালয়শিয়ানকে ভালো ইংরেজী বলিতে শুনি নাই তাহাদের ইংরেজীর দৌড় আই গো, ইউ গো পর্যন্ত সীমাবদ্ধ)। তো তাহার সাথে তাহার “কোনমতে চালিয়া লইবার মত” ইংরেজী দিয়াই বাক্যালাপ চালাইয়া গেলাম, সাথে লাঞ্চ করিতে লাগিলাম। লাঞ্চ শেষ হইবার পর যখন অফিসে ফিরিয়া যাইতেছি তখন সে হঠাৎ বলিয়া বসিল “ইউ হ্যাভ নাইস হ্যামার”। আমি পুরা তব্দা খাইয়া তাহার দিকে তাকাইয়া রইলাম আর বুঝিবার চেষ্টা করিতে লাগিলাম সে কি বলিতে চাইতেছে (তখন ভাবিতেছিলাম আমার হ্যামারের কথা সে জানিল কিভাবে আর তাহা যে নাইস তাহাই বা সে কি করিয়া বুঝিল। আমার যতদুর মনে পরে আমি প্রাকৃতিক কর্ম সারিবার সময় টয়লেটের দরজা বন্ধ করিয়া লই......।) আমি ব্যাপারটা বুঝার জন্য তাহাকে বলিলাম, “এক্সকিউজ মি, হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট টু সে?” উত্তরে সে যাহা বলিল তাহাতে আমার চক্ষু চড়ক গাছ না একেবারে দেবদারু গাছ হইয়া গেল। সে বলিল, এই যে তুমি মজা করে কথা বল (তাহার মত করিয়া ইংরেজী বলবার সাধ্য আমার নাই তাই বাংলাতেই লিখিলাম)। আমি কনফিউশন দূর করিবার জন্য তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, তুমি কি হিউমার বোঝাইতে চাইছ। সে কিছুটা হতবিহবল হইয়া মাথা নাড়িয়া হ্যা বলিবার চেষ্টা করিল।
আমি মনে মনে ভাবিলাম, ইহা কোথায় আসিয়া পড়িলাম। কই হিউমার আর কই হ্যামার। শর্টকাটে ইংরেজী তাহা না হয় মানিয়া লইলাম, কিন্তু কোথায় কোন ওয়ার্ড বলিতে হইবে তাহাও যদি ঠিক মত বলিতে না পারে তো আমার মত অভাগা কি করিয়া তাহাদের সাথে বাক্যালাপ করিবে (আমি নিজেও খুব একটা ভালো ইংরেজী বলিতে পারি না, তাই বলে এদের মত অন্তত আই গো, ইউ গো বলি না)।
আমার আর তাহার সাথে দ্বিতীয় কোন কথা বলার সাহস হয় নাই। খোদাই জানে সে কি বলিতে কি বলিয়া বসে আর আমি কি বুঝিয়া বসি। তাহার চাইতে পুর্বের হায় হ্যালো অনেক ভালো। আমার হ্যামার থুরি হিউমার আমার কাছেই থাক।
(পুনশ্চঃ অফিসে ফিরিবার পর আবিষ্কার করিলাম, এখন আর তাহাকে আগের মত রুপবতী লাগিতেছে না।)
http://maipavel.blogspot.com/

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




