প্রান্তসীমায় দেয়াল
নাসীর মাহমূদ
শিশির ভেজা এক সকালের কথা।
পাখির কুজনের মাঝে দুর্বাঘাসে তখনো
রোদের কণাগুলো ঝরায় আনন্দাশ্রু
বিশুদ্ধ সেই বাতাসেও শ্বাস নিয়ে পেলাম বারুদের ঘ্রাণ
কালের বিগত সোপানে পা রেখে ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিই ডানে
টিক টিক সময়ের মানচিত্রে সর্পিল রেখা ধরে হেঁটে যাচ্ছি
সামনে চেক পোস্ট
তবু থমকে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই......
এ যেন জীবনের অনিবার্য এক রাফা ক্রসিং..
সুহৃদ জনেরা টেনে ধরে পেছনের সূতো
দাঁড়ানো যায় না বলে যেতেই হলো ছিঁড়েখুঁড়ে
কতোবার, কতোজন, ভেতরের, বাইরের আটকে দিলো গতি
তবু যেতেই হলো..জীবন ঘড়ির কাঁটায় বিঁধে..
যেতে যেতে যেতে জীবনের মায়াবি সকাল খেলো সূর্য
খেলো দুরন্ত দুপুর....
সন্ধ্যার দ্রুতগামী কালো ঘোড়ার পিঠে চড়ে এগুতেই দেখলাম
সামনের গলির মুখে প্রকাণ্ড দেয়াল
দেয়ালে আঁকা আছে লাল বৃত্তের মাঝে নিরেট সাদা বাঁ থেকে ডানে
পথের এই প্রান্তসীমা পেরুনোর চাবি আমার হাতে নেই
ঘোড়ার পিঠে চাবুক মেরে ফিরে যেতে চাইলাম ফেলে আসা পথে
বৃত্তাকার আঁধারে যতোটা ফেরা যায়
ফিরে এসে খানিক দাঁড়ালাম পথের ধারে
অচেনা কেউ এসে অতিথি বানালো আমায়....
ফেরারি সকালের দুর্বাঘাসের অপেক্ষায় থাকা শিশির বিন্দুর মতো বসে আছি আমি
একা নই সঙ্গে আমার দুরন্ত কালো ঘোড়া
অতিথির ঘরে বিশাল আয়নায় নিজেকে দেখে চমকে গেলাম
এই আমি কি সত্যিই আমি....
আমার কালো ঘোড়া হ্রেষা তুলে লেজ নাড়ে
পেছনে তাকিয়ে দেখি ফেরার পথে আরেকটি দেয়াল
আরেকটি লাল বৃত্তের মাঝে নিরেট সাদা বাঁ থেকে ডানে
শুধু আকাশের দিকে উড়ে যাচ্ছে যেন এক জ্বলন্ত ফানুস
মায়াবি আঁধারেও তাকে দেখা যায় তারকার মতো জ্বলজ্বলে
আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি সেই সত্যের সোনালী রূপ
আ..হা ! কতো নির্ভেজাল সেই সত্য..
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৫৩