দুই মাস আগে ইউনি মেট জিপি পাপড়ি মেসেজ পাঠালো, দোস্ত রাতারগুল আসছি আগামী বর্ষায় । তাকে ওয়েলকাম জানিয়ে রিপ্লাই দিলাম, কিন্তু ধন্ধে পরলাম, এই রাতারগুলটা কোথায় ? :#> খোজ খবর নিয়ে জানলাম এটা পরেছে গোয়াইনঘাট থানায় । তারপরই সামুতে রাতারগুল নিয়ে কিছু ছবিব্লগ দেখলাম ।
ব্লগার শামীমের পোস্টে এইসব ছবি দেখে কি আর বসে থাকা যায় ? তাও সিলেটবাসী হয়ে ??
কিংবা শামসীর ভাইয়ের পোস্টে এইসব ছবি, স্টেশনের কাছের লোকের ট্রেন মিস করার মত ।
যাই হোক সিদ্ধান্ত পাকা, যাচ্ছি রাতারগুল । কিন্তু বুড়ো বয়সে জবের পাশাপাশি এমবিএ সেমিষ্টার ফাইনাল বেমক্বা বাধা হয়ে দাড়ালো । এক্সাম শেষ করেই ঠিক করলাম ২২ তারিখ যাব, সংগি যথারীতি চার ইয়ারী আর তৎসংশ্লিষ্ট চার ইয়ারনী আর চার জোড়া মাস্টার ইয়ারী । আমাদের চার বন্ধু পরিবারের সম্পর্কটা সময়ের সাথে সাথে এমন মাত্রায় পৌছেছে, যা বলে বুঝানো যাবেনা । জহির ভাই সাস্টের অধ্যাপক, রাজা ভাই বিমানের কর্মকর্তা এবং আনোয়ার ভাই সিলেট শহরকে ঘিরে রাখা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক । আর আমি তথৈবচ
যাই হোক চার ইয়ারি কথা পরে হবে ।
যাত্রা হলো শুরু, যথারীতি উত্তেজনার সর্বোচ্চ ধাপে আমাদের পিচ্ছিকূল
চার ইয়ারনী সারপ্রাইজ দিলো, সিলেটের সুন্দরবনে টাইগার ব্র্যান্ড ড্রেসআপ দিয়ে
পৌছালাম গোয়াইনঘাট নৌকা ঘাটে ।
নিজেদের রান্না করে নিয়ে যাওয়া তেহারীর ডেকচি সামলাতে ব্যস্ত এক ইয়ারী
ঘাটে নৌকার অপেক্ষায়
রাতারগুলের উদ্দেশ্যে নৌকাযাত্রা শুরু
নৌকার ছইয়ে আনন্দিত পিচ্ছিকূল
পোজ দেয়া রত এক ইয়ারী
আন্ডা-বাচ্চা নিয়ে এক ইয়ারী
সারি নদীর প্রাকৃতিক দৃশ্য
নদীর বামতীর ঘেষে বনের আভাস
ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছি বনের দিকে
বিশাল বনের একপ্রান্তে আমাদের ল্যান্ডিং
ঐখানে আরও কয়েকটি নৌকা বাধা, তারমানে অনেক পর্যটক বনের ভিতরে । আমরা নদীর পাড় ধরে উঠলাম, সামনে আদিম জংগল । ছোট দুইটা দেশী বারকী নৌকা পর্যটকের উপস্থিতিতে উদ্দীপিত । নদীর পাড় থেকে অনেকটুকু ঢালু পথ এক দংগল কাদা মারিয়ে উঠতে হবে ছোট নৌকায় । শীর্ন খালে সামান্য পানি ।
কিন্তু এটা দেখার জন্যেতো রাতারগুল আসিনি, কোথাও কি কোন ভূল হলো ? নৌকার মাঝি ভূল ভাংগালো, বর্ষার পানি নেমে গেছে । প্লাবিত জলাবনে এখন শুধু কয়েকটা শীর্ন খাল । বিশাল কাদার দংগল পেরিয়ে ছোট নৌকায় উঠতে পারলেও সামান্য এদিক ওদিক ঘুরিয়েই শেষ । কপাল মন্দ হলে যা হয় ।
মন খারাপ করে সবাই নৌকায় ফেরত এলাম, আবার উল্টো গোয়াইনঘাট যাত্রা । নদীর পাড়ের কিছু ছবি তুলে দুধের স্বাধ ঘোলে মিটালাম ।
না, নৌকাযাত্রার ফিরতি পথে মন খারাপের চেয়ে আনন্দই হলো বেশি । বড়রা একে অন্যকে পানি ছিটিয়ে, কাপলদের ভিতর ঝগরা লাগিয়ে আর পিচ্ছিদের নেচে গেয়ে মাতোয়ারা হয়ে
অবশেষে গোয়াইনঘাট থেকে সিলেট যাত্রা । সন্ধ্যা যেন আবিরে রাঙাচ্ছে পশ্চিম আকাশের চিত্রপটে ।
আশ্চর্য্য, সন্ধ্যার এই রঙ যেন রাঙিয়ে দিয়েছে আমাদের সবার মন । শুরুটা করলো পিচ্ছিরাই, আবার এলোযে সন্ধ্যা.. তারপর মায়েরা-মেয়েরা মিলে এমনি আসর মাতানো সংগীত সন্ধ্যা চলতে থাকলো, কখন যে সিলেট শহরে এসে পড়েছি টেরই পাইনি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




