somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিড নাইট টকিঙ!!! ;) :D B-)

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আহ্ কত দিন হলো রাত জেগে আড্ডা দেয়া হয় না । এক সময় রাত জাগা ছিল আমাদের রুটিন ওয়ার্ক । এখন চাকুরির চিপা আর সংসারের ঠেলায় পড়ে রাতজাগার ফ্যান্টাসি আর হয় না ।

হল লাইফে আমরা কয়েক বন্ধু ছিলাম নিশি জাগা পাখি । তবে রাতের আড্ডায় সমস্যাও ছিল, রাত গভীর হলেই খিদেয় পেট চুচু করত । ইতিমধ্যে দোকানপাট সব বন্ধ । মাঝে মাঝে কারো রুমে চাল-ডাল মিলে গেলে বসিয়ে দিতাম খিচুরি- ইলেকট্রিক হিটারের চুলায় । আহ যেন অমৃত!

সবচেয়ে মুশকিল হতো সিগারেট ফুড়িয়ে গেলে । সেটারও একটা সমাধান ছিল । সিগ্রেটের নেশা মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে হল থেকে দলবেধে বেরিয়ে পড়তাম । ক্যাম্পাসের শিয়াল ডাকা নির্জন রাস্তায় হাটতে হাটতে পেয়ে যেতাম নাইট ডিউটিরত কোন গার্ডমামাকে । আমরা দুইটা চারটা করে ভাংতি সিগারেট কিনি, গার্ডমামারা আমাদের মত ফকির নয় । তাদের পকেটে থাকত বিড়ির পুরো বান্ডেল । শেষ রাতে গার্ডমামার সাথে আকিজ বিড়ি ফুকতে ফুকতে গল্প করার মজাই ছিল আলাদা ।

আগামিকাল চিটাগাঙে শিবিরের হরতাল । কক্সবাজার ট্যুর পিছিয়ে দিয়েছি, কাল সকালের শিপে যাব সন্দ্বীপ । শিপে বসে বসে সাগর আর কত দেখা যায়, তাই ঘুমানোর মাস্টারপ্ল্যান করে রেখেছি । আর এজন্যই আড্ডার পিনিক উঠেছে মাথায় ।

আমাদের বাঙালীর আড্ডা মানেই রাজনীতির ভেতর এক পর্যায়ে পলিটিক্স ঢুকিয়ে ছ্যাড়াবেরা কারবার । তবে পলিটিক্স নিয়ে আম্রিকার পপুলার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির একটা কথা মনে পড়ছে । মিঃ কেনেডি তার প্রতিটা বত্তৃতায় কবিতার উদ্ধৃতি দিতেন । তিনি বলতেন, পলিটিশিয়ানদের আরো বেশি কবিতা পড়া উচিত । এবং কবিদের আরো বেশি পলিটিক্সে আসা উচিত । কারণ কবিরাই ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানে ।

আমাদের দেশে রাজনীতিবিদ কবির কথা উঠলেই বদমাশ বিশ্বলুচ্চা লেজেহোমো'র গাধামার্কা মুখটা ভেসে উঠে । তার শাসনামলে প্রতি রাতে টিনটেড কারে কোন না কোন নায়িকা, গায়িকা, খবর পাঠিকা কিংবা উঠতি সমাজসেবিকা সমবিহারে ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়াত । পেছনে থাকত সিকিউরিটি ফোর্স । লোভী মানুষের তো এদেশে কোন অভাব নেই, তাই তার নতুন নতুন মধ্যবয়সী ড্রাইভ পার্টনার পেতেও কোন সমস্যা হতো না । আধুনিক বারলুসকোনিরা তার কাছে ছিল নস্যি । রাসপুটিন আর ভগবান রজনীশকেও থেমে যেতে হয়েছিল, কিন্তু লেজেহোমো এখনো চলমান । সবচেয়ে মজার খবর হলো, তার কবিতা নাকি লিখে দিত কবি ফজল শাহাবুদ্দিন ।

নাহ বিশ্বলুচ্চার কথা থাক, তারচেয়ে তরুণ সমাজের কথা বলি । আমাদের ছোটবেলায় মাঝরাতের বীভিষিকা ছিলেন প্রতিবেশি দোলন কাকা । গভীর রাতে হেলতে দুলতে নবাব সিরাজউদ্দৌলার ডায়লগ দিয়ে চারপাশ কাঁপিয়ে তিনি বাড়ি ফিরতেন । শুঁড়িখানা থেকেই কয়েকটা কুকুর তার সঙ্গী হত আর কাকার ডায়লগের গ্যাপে গ্যাপে ঘেউ ঘেউ করে ডেকে উঠত । মদ খাওয়ার পর কি অসীম তেজ, কি ঝাঁঝ থাকতো তার কথায় । সিনা টানটান করে নবাবের মত হেটে যেতেন । তখন স্বপ্ন দেখতাম বড় হয়ে তার মত হব । তার মত মানুষ কি চাইলেই হওয়া যায়! তরুণ বয়স থেকেই তিনি ছিলেন কঠিন পানাসক্ত । কিন্তু দেশমাতৃকা যখন ডাকলো ৭১ এ, তিনি ঠিকই ঐ ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলেন । অসীম সাহসী এই মুক্তিযোদ্ধা দেশ স্বাধীন করে তবেই ফিরেছিলেন ।

অথচ আজকালকার পোলাপানদের দেখেন, ডাইল-হিরোইন-ইয়াবা চিবিয়ে একেকটা ফার্মের মুরগীর মত শুধুই ঝিমায় ।

হল লাইফের শেষের দিকে নেতা বন্ধুদের সাথে খুব খাতির হয়েছিল । তখনই দেখেছিলাম দল আর লীগের নেতারা গোপন লিঁয়াজুর মাধ্যমে কিভাবে রাজনীতি করে । তো একবার তাদের রাতের আড্ডায় আমাকে নিমন্ত্রণ করলো । একজন কন্ট্রাক্টর গভীর রাতে কার নিয়ে হলে আসলো । উপঢৌকন হিসেবে ছাত্রনেতাদের জন্য সে তিন বোতল ফরেন নিয়ে এসেছে । গাড়ি থেকে নামার পর ঐখানেই দাঁড়িয়ে আমরা আড্ডা দিচ্ছি । সে গাড়ীর ব্যাকডালা থেকে ফরেন মাল নিয়ে যেতে বললো । নেব নিচ্ছি করে তার সাথে আড্ডা চালিয়ে যাচ্ছি । ফরেন মালের কথা শুনে আমিতো উত্তেজনায় ঘামতে শুরু করেছি । হঠাৎ ইউনিভার্সিটির একটা মাইক্রো এসে কিছুটা দুরে দাড়ালো । নেতারা বললো, সমস্যা নেই প্রক্টর স্যার এসেছে । প্রক্টরের কথা শুনেই ঐ কন্ট্রাক্টর এক লাফে গাড়িতে চড়ে দিলো টান । আমরা পেছন থেকে চিৎকার করতে থাকলাম, কোন সমস্যা নাই ভাই । কে শোনে কার কথা! হায়হায় ব্যাকডালা থেকে তো ফরেন মাল নামানো হয়নি!! একেকজন মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়লো, আপচুচ, আপচুচ!!!

আপচুচের গল্প দিয়েই পোস্ট শেষ করি । তবে আড্ডা চলতে থাক, যে কোন বিষয় নিয়ে..
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১০
৩২৯টি মন্তব্য ৩২৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×