somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনাকাংখিত শনি :(( (ডায়েরীর পাতা থেকে)

১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দিনটি ছিল শনিবার। তখন দুপুর একটা বাজে। আমি পুকুরে গোসল করতে গেলাম। পুকুরে একটা মহিলাকে গোসল করতে দেখে আমাদের প্রজেক্টের (মাছ চাষের জন্য অগভীর পকুর) দিকে পা বাড়ালাম। প্রজেক্টের মধ্যে আমাদের কয়েকখন্ড গাছ ভিজানো ছিল। আমি পানিতে নেমে গাছ থেকে বাকল গুলো আলাদা করতে শুরু করলাম ।গাছ একটু নড়েচড়ে উঠলে মাছ গুলো লাফাতে শুরু করে। গাছের বাকল তোলার ফাঁকে ফাঁকে মাছ ধরতাম। কিছু রাজঁপুটি মাছ ও একটা গলদা চিংড়ি মাছ ধরলাম, পরে অবশ্য এগুলো ছেড়ে দিয়েছি। কারন মাছ গুলো ছোট ছিল। দুইখন্ড গাছের বাকল তোলা শেষ। তৃ্তীয় খন্ড গাছের বাকল তোলার সময় আমার হাতের সাথে একটি মাছের ধাক্কা লাগে। মাছটি গাছের নিচে কাদার ভেতর লুকিয়ে যায়। আমার ধারনা মতে মাছটিকে শৈ্ল মাছ বলে মনে হল। মাছটি প্রায় কেজিখানেক হবে। তাই লোভ সামলাতে না পেরে মাছটি ধরার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। :D

যখন মাছটি ধরলাম, তখন বুঝতে পারলাম আসলে এটা শিং মাছ। হঠাৎ মাছটি ধাক্কা দিয়ে পালাতে চাইল। আর অমনি মাছটার একটা শিং আমার বাম হাতের তালুতে ঢুকে গেল। প্রচন্ড ব্যাথায় মাছটি ছেড়ে দিলাম।তাড়াতাড়ি উপরে উঠে এলাম।হাত রক্তে লাল হয়ে গেল। ব্যাথাটা হাতের কব্জি থেকে উপরে উঠতে লাগলো। আমার মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা করছে। একদৌড়ে ঘরে এলাম। :|

আমাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে চাচি বললো, “ভাবি ভাবি মামুন এমন করতাছে কিল্লাই?” চাচির কথা শুনে আম্মু এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি হয়েছে তোর?” আমি বললাম, “আমাকে শিং মাছে বালা (শিং ঢুকিয়ে) দিয়েছে”। অবশ্য কথাটা খুব কষ্ট করে বলেছিলাম। কারন আমি তখন ব্যাথায় অস্থির। এর পরের অবস্থা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা, তবুও অল্প কথায় শেষ করছি। :((

আম্মু তাড়াতাড়ি কাপড় দিয়ে হাত বাঁধলেন, যাতে বিষাক্ত রক্ত চলাচল করতে না পারে। ক্ষতস্থান গরম পানি দারা ধৌত করলেন। কিছুক্ষন পর ওঝা এলো, তিনি আমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে বিষ নামালেন। আমি এতটকু শান্তির আশায় সব কষ্ট সহ্য করলাম। তিনি বললেন, “যাও এবার গোসল করে এসো”। আমি প্রচন্ড যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে তাড়াতাড়ি বিছানায় শুয়ে পড়লাম। বিভিন্ন স্টাইলে শুয়ে কোন আরাম কিংবা শান্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু চিতল মাছের মতো বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে লাগলাম। ইচ্ছে করছিল হাতটা কেটে ফেলে দিতে। আম্মু এসে জিজ্ঞেস করলেন, “তোর থেকে এখন কেমন লাগছে?” আমি বললাম, “মাথায় তীব্র যন্ত্রনা করছে, হাতে ও প্রচন্ড ব্যাথা করতেছে, আমার মাথাটা একটু ধুয়ে দাও”। উনি ঠান্ডা পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে দিলেন। :|

দুপুরে ভাত খাওয়া হয়নি, ক্ষিদেয় পেট চিৎকার করছে। ঘরে পিঠা বানান ছিল, তা খেয়ে পেটের চিৎকার করলাম। আধাঘন্টা পর ব্যাথা অনেকটা কমে গেল। তখন প্রায় ৩টা বাজে, আমি রেড়িওটা অন করে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম থেকে উঠে খুব আরাম অনুভব করলাম। কারন, ব্যাথা অনেকটা কমে গেছে। তবে অবশ্য ক্ষতস্থানের চারপাশে ফুলে গেছে। একদিন পর ফুলাটা ও কমে এলো এবং আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেলাম। :)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×