somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীতিহীন রাজনৈতিক আন্দোলন আর মুখোশে লুকি্য়ে থাকা বিবেকহীন মানুষেরা

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বর্তমান রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে যা হচ্ছে তার মূল কারণ ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচণ কেন্দ্রিক।জামাত-বিএনপি জোটের বর্জনের জন্য ঐ নির্বাচণ প্রশ্নবিদ্ধ হলেও তার দায় আওয়ামী লীগের একার নয় বরং জামাত-বিএনপির দায়ও অনেক।কারণ তৎকালীণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে জামাত-বিএনপি জোটের প্রধাণ খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং ঐক্যমতের সরকার গঠনে তাদের দাবী অনুযায়ী মণ্ত্রনালয় দেওয়া হবে।কিন্তু তখন খালেদ জিয়া তাতে রাজী হয়নি।বরং নির্বাচণ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে সারা দেশে তান্ডবের রাজত্ব কায়েম করেছিল এবং দেশবাসী দেখল পেট্রোল বোমার ভয়াবহতা।সাধারণ মানুষ,যানবাহন,স্কুল-কলেজ,গরু-ছাগল মানে তাদের আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যাচ্ছিল সারা দেশ।আর ঐ তান্ডবই সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে পড়ে তারা।প্রশ্ন হল কেন খালেদা জিয়া ঐ আলোচণায় গেল না,কারণ ছিল
# নির্বাচণে না যেতে জামাতের চাপ
# দেশের মানুষের উপর বিশ্বাস না রেখে বিদেশী প্রভুদের উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখা।খালেদা জি্য়া বিশ্বাস করেছিল বিদেশীরা ঐ নির্বাচণ মানবেনা এবং সরকারকে বর্জন করবে।কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
এবং
# ভারতের নির্বাচণ।২০১৪ সালের বাংলাদেশের নির্বাচণের কিছু পরই ছিল ভারতের নির্বাচণ এবং সেই নির্বাচণে কংগ্রেসের পরাজয় নিশ্চিত ছিল।খালেদা জিয়ার ভাবনা ছিল বিজেপি জিতলে আওয়ামী লীগ চাপে পড়বে কারণ ঐতিহাসিকভাবে সেই ইন্দিরা-মুজিব থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কংগ্রেস-আওয়ামী লীগের সম্পর্ক খুবই আন্তরিক।সেদিক থেকে বিজেপি জিতে আসলে জামাত-বিএনপি জোট সুবিধা পাবে।
কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচণের পর জামাত-বিএনপির সমস্ত ভবিষ্যত চিন্তা ভুল প্রমাণিত হয়।নির্বাচনের পর বিদেশী দেশগুলি নির্বাচণ সবার অংশগ্রহনে হয়নি বলার পরও আওয়ামী লীগের নতুন সরকারকে মেনে নেয়।যেটা জামাত-বিএনপি মেনে নিতে পারেনি।তবে জামাত-বিএনপি সব থেকে হতাশ হয় ভারতের বিজেপি সরকার গঠণের পর।প্রধাণমন্ত্রী হয়েই মোদী সবার হিসাব উল্টে দি্য়ে এক নতুন মোদী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেন।গুজরাট দাংগা কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির খলনায়ক মোদী হয়ে ওঠেন অসম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিক।আর সেই হিসেবেই মোদী সরকার আকুন্ঠ সমর্থন দেবার ঘোষণা দেয় শেখ হাসিনার অসম্প্রদায়িক সরকারকে।আর তাতেই চুপসে যায় বিজেপি জেতার পর প্রফুল্ল হয়ে নানা বক্তব্য দেওয়া জামাত-বিএনপি। আর পশ্চিমবংগের খগড়াগড়ের বিস্ফোরণ তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে। ঐ বিস্ফোরণে ফাস হয়ে যায় মমতার তৃণমূল কংগ্রেস কিভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে কলকাতায় ঘাটি গাড়তে দিয়েছে জেএমবি-জামাত সন্ত্রাসীদের।কারণ তাতে প্রমানিত হয়ে যায় শেখ হাসিনা যেসব সন্ত্রাসী-জংগিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে তৃণমূল তাদের ভারতের অভ্যন্তরে আশ্রয় দিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশেই তাদের কার্যক্রম চালানোর পথ করে দিয়েছে।আর এই ঘটনার পর সারা ভারতে ব্যপক আলোড়ন তোলে এবং আওয়ামী লীগের সরকার জংগীদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা প্রশংশিত হয়।আর এতেই শেষ হয়ে যায় জামাত-বিএনপির বিজেপি সমর্থনের আশা।
এখন আসা যাক আন্দোলনের নামে সহিংসতা কেন?২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনে জিতে সরকার গঠণের পর আওয়ামী লীগ সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় অর্থনৈতিক অবস্থার উপর।সর্বশেষ কিছু বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল সারা বিশ্বের কাছে বিস্ময়।জিডিপি হিসেবে ৬ বা ৬*৫ এর উপর।সব থেকে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সেরা পাচটি দেশের অন্যতম এখন বাংলাদেশ।বিশেষ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশকে সারা পৃথিবীর কাছে আলাদা অবস্থানে নিয়ে গেছে।একদিকে বিদেশীদের কাছে জামাত-বিএনপির অবস্থান যখন শুণ্যের কোঠায় আর আওয়ামী সরকারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বাধীনতার পর সর্বোচ্চ তখন জামাত-বিএনপি কি বসে থাকতে পারে?পারেনা।আর তাই আবার তান্ডব।
খালেদা জিয়া ডিসেম্বরের শেষে সংবাদ সম্মেলনে যে কয় দফা দিয়েছে তা ছিল নির্বাচনের আগের বিষয়।দেশের সবাই অবাক হয়ে গেল এই সময়ে এমন কথার কারণ কি?কারণ বোঝা গেল কয়েকদিন পর।২০১৫ সালের ৫ই জানুয়ারী জামাত-বিএনপি ঢাকায় এক সমাবেশের ঘোষণা দেয়।তাদের হিসাব ছিল হেফাজতের মত ঢাকায় অবস্থান নিয়ে সারা ঢাকায় তান্ডব চালানো যাতে সরকার পদত্যাগ করে।সেই কারণে খালেদাকে আটকানো হয়।মজার বিষয় হল গত নির্বাচনের আগেও খালেদা বাড়ীতে এমন অবস্থায় ছিল,জনগণ খালেদারে উদ্ধারে রাস্তায় নামে নাই আবার এবারও নামে নাই।আর তাতেই নাখোশ খালেদা সাধারণ মানুষের উপর।তার সেই রাগের কারণেই পুড়িয়ে মারা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।আগুনে কয়লা হয়ে মরছে কারা?সাধারণ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ,শিশু,মহিলা। ট্রাক বা বাস ড্রাইভার কিংবা হেলপার যাদের একদিন কাজে না গেলে ভাত উঠবেনা পরিবারের কারো মুখে,গাজীপুরে নানা বাড়ি বেড়াতে যাওয়া শিশুটা বা আমার বোন মাইশা যে বাবা-মার সাথে বেড়াতে গিয়েছিল কক্সবাজার-তাদের কেউ কি রাজনীতি করত?এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন সাধারণ মানুষ মারা গেল,তাদের অপরাধ কি খালেদার হরতাল-অবরোধ না মেনে বাইরে বের হয়েছে তাই?উত্তর পাওয়া যা্য় বিএনপি সমর্থক সাংবাদিক সাদেক খানের কথায়।৭১ টেলিভিষনে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তিনি এই হত্যাকান্ড সমর্থন করেন কিনা?তিনি উত্তর দিলেন,হ্যা করি।কারণ তাতে সরকারের উপর চাপ বাড়বে।
কেন এই হত্যাকান্ড,উ্ত্তর মিলবে পাকিস্থানী হাইকমিশনের ভিসা কর্মকর্তা মাযহার খানের পাকিস্থানে ফিরিয়ে নেওয়ায়।যিনি বাংলাদেশে আইএস এর সংগঠক এবং বাংলাদেশে জেএমবি,হিযবুত তাহরীর এবং পাকিস্থানের পুরানো বন্ধু জামাতের নাশকতার অর্থ যোগানদাতা।পাকিস্থানী নীলনক্সায় নতুন করে এই তান্ডব চলছে বাংলাদেশে এটা বোঝার জন্য খুব বেশী আলোচনা করতে হয়না।
আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষ হত্যার মিছিলে আরেকটি বিষয় দেখে খুব অবাক হলাম।ব্লগে বা ফেসবুকে থাকা কিছু মানুষের মুখোশ খুলে গেছে,বেড়িয়ে গেছে তাদের কুৎসিত মানসিক রূপ।আমি নিজে সক্রিয় আওয়ামী রাজনীতি করি কিন্তু আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের যে কোন খারাপ কাজে তাদের ধিক্কার জানাই।আমি মনে করি আমি একটি দল সমর্থন করতেই পারি কিন্তু তাই বলে নিজের বিবেক বিসর্জন দিতে পারিনা।ব্লগ বা ফেসবুকে দেখছি সুশীল সেজে থাকা মানুষগুলা কি অবলীলায় সাধারণ মানুষের পুড়ে মারা যাওয়াটা কি সুন্দরভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে মনের মাধুরী মিশিয়ে।যে আন্দোলনের সাফল্য হিসাব করা হয় কতটা বোমা হামলা হল,কতজন মানুষ নিহত বা আহত হল,কতটা যানবাহন পুড়ল-সেই আন্দোলন সমর্থন করতে তাদের বিবেক কিরে সায় দেয় তা ভেবে অবাক হই।


নীতিহীন রাজনীতি আর জনসমর্থনহীন দলের শেষ আশ্রয় সন্ত্রাস আর সহিংসতা,সেটা আবারও প্রমাণ হল বাংলাদেশে।
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×