কাজী নজরুল ইসলাম
ফাতেহা-ই-দোযাজ দহম’ এর আবিবৃাব ও তিরোভাব দুই অংশের কবিতা মাত্রাবৃত্তে রচিত হলেও এর রূপবৈচিত্র বাঙলা কাব্যে অভিনব।
খেযাপাড়ের তরণী’-র ছন্দ ও ভাষা সম্পর্কে মোহিতলাল যে উক্তি করেছিলেন- কাজি সাহেবের ছন্দ তাঁহার স্বতোৎসারিত ভাবকল্লোরনীর অবশ্যম্ভাবী গমনভঙ্গী, কথাটি অগ্নিবীণার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় তাঁর প্রদত্ত বক্তব্রে বলেছিলেন যে রবীন্দ্রনাথ পড়লেও নজরুলের কবিতার ভাব ভাষা ও ছন্দে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব পড়েনি।
বিদ্রোহী কবিতার আমি বিতর্ক।
মোহিতলাল প্রচার করেছিলেন নজরুল তাঁর আমি শীর্ষক লেখার ভাব নিয়ে কবিতাটি লিখেছে, অথচ কোনও ঋণস্বীকার করেনি।
“আমি” ইংরেজি-কবি হুইটম্যানের ংড়হম ড়ভ সুংবষভ কবিতায় ও শব্দের পৌণপুণিক ব্যবহার। যা তিনি করাচীতে থাকতে পড়েছেন।
মুক্তক মাত্রাবৃত্তে রচিত-“বিদ্রোহী”
মুক্তক অক্ষরবৃত্তে রচিত –‘বলাকা’- রবীন্দ্রনাথ।
বিদ্রোহি কবিতা পৃথিবীর বহু মনীষী কবির বিদ্রোহী চেতনার একটি আশ্চর্য রূপায়ণ। এতে রুমী, হাফিজ, খৈযাম, রবীন্দ্রনাথ,শেলী, বাইরন এবং হুইটম্রানের ভাবচৈতন্য প্রশ্রয় পেয়েছে।
শেলির ঞযব সধংশ ড়ভ অহধৎপযু –র
অহফ যব ড়িৎব ধ শরহমষু পৎড়হি;
ওহ যরং মৎধংঢ় ধ ংপবঢ়ঃবৎ ংযড়হব;
ঙহ যরং নৎড়ি ঃযরং সধৎশ ও ংধ-ি
ও অগ এঙউ অঘউ কওঘএ অঘউ খঅড.
নজরুলের- ‘মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ¦লে রাজ-রাজটীকা দ্বীপ্ত জয়শ্রীর’
ঝশুষধৎশ-ংযবষষু
ইরৎফং ড়ভ চধৎধফরংব- গরষঃড়হ
ঞযব সধংশ ড়ভ অহধৎপযু –র
শেষস্তবক-
জরংব ষরশব খরড়হং ধভঃবৎ ংষঁসনবৎ
ওহ টঘ ঠধহয়ঁরংয ধনষব হঁসনবৎ,
ঝযধশব ুড়ঁৎ পযধরহং ঃড় বধৎঃয ষরশব ফবি
ডযরপয রহ ংষববঢ় যধফ ভধষষবহ ড়হ ুড়ঁ?
ণড়ঁ ধৎব সধহু, ঃযবু ধৎব ভবি
নিদ্রোত্থিত কেশরীর মতো
ওঠ ঘুম ছাড়ি নব জাগ্রত!
আয়রে াজেয় আয় অগণিত দলে দলে মরুচারী
ঘুমোঘোরে ওরে যত শৃঙ্খল
দেহ মন বেধে করেছে বিকল,
ঝেড়ে ফেলে সব সমীরে যেমন ঝরায় শিশির বারি!
উহারা কজন? তোরা অগণন সকল শক্তিধারী।
-জাগার তূর্য, ফণিমনসা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বলাকার আগের কাব্যগুলোতে “নৈবেদ্য” থেকে ”গীতালি” আমরা রবীন্দ্রনাথের ভগবত লীলায় মত্ত থাকার প্রবণতাটা বেশি পাই। কিন্তু বলাকায় এসে মানবজীবনের প্রতি প্রীতিবোধ টের পাই। এর পেছনে কিছু কারণ হয়ত আছে, যেমন সতের মাস ইউরোপ ভ্রমণ, আমেরিকা ভ্রমণ, নোবেল প্রাপ্তির মতো ঘটনা। এ ছাড়া ফরাসি দামৃনিক বের্গসঁ এর পৎবধঃরাব বাড়ষঁঃরড়হ বইটি পড়েও তার মধ্যে গতিরাগের সঞ্চার হয়।
বলাকা কাব্যের ৪৫টি কবিতার প্রতিটাতে গতিই সত্যি বলে প্রচার করেছেন।
শুধু ধাও, শুধু ধাও, শুধু বেগে ধাও
উদ্দাম উধাও
পিরে নাহি চাও
যা কিছু তোমার সব দুইহাতে ফেলে ফেলে যাও।
কাল অনাদি এবং অনন্ত, দৃষ্টিও তাই অহরহ ধ্বংসের মধ্য দিয়ে আদি ও অনন্ত।
“যে মুহূর্তে পূর্ন তুমি, সেই মুহূর্তে তব কিছু নাই”
এই পরিবতৃনের নামই জীবন, এই জীবনই গতি। জীবন আর কিছু নয়। অতীতের বর্তমান অবস্থায় নুতন আকারে আগমনমাত্র চবৎংরংঃবহপব ড়ভ ঢ়ধংঃ রহঃড় ঃযব ঢ়ৎবংবহঃ
যদি তুমি মুহুর্তের তরে
ক্রান্তিভরে
দাঁড়াও থমকি
তখনি চমকি
উচ্ছ্রিয়া উঠিবে বিশ্বপুঞ্জপুঞ্জ বস্তুর পর্বতে;
পরিবর্তনই আমাদের কাছে একমাত্র সত্য। বি পযধহমব রিঃযড়ঁঃ পবধংরহম ধহফ ঃযব ংঃধঃব রঃংবষভ রং হড়ঃযরহম নঁঃ পযধহমব
বের্গসঁ-র এই তত্ত্ব মানতেন বলেই রবীন্দ্রনাথ মৃত্যূর মাঝেও গতির চিহ্ন উপলব্ধি করেছেন-
‘মৃত্যূর অন্তরে পশি, অমৃত যদি না পাই যদি না পাই খুঁজে
সত্য যদি নাহি মেলে দুঃখ সাথে যুঝে’
আমাদের মধ্যেকার এই প্রাণবেগ সত্যকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি প্রজ্ঞান বা বোধির দ্বারা, বুদ্ধির দ্বারা নয়। ওহঃবষষবপঃ বা বুদ্ধির দ্বারা বস্তুর আকারপ্রকার বোঝা যায় কিন্তু প্রাণের স্বরূপ প্রজ্ঞান ছাড়া বোঝা যায না। সেই প্রজ্ঞান দিয়েই রবীন্দ্রনাথ ৬সংখ্যক কবিতা“ছবি”তে ছবিকেও দেখিয়েছেন প্রাণপ্রতিষ্ঠার ভেতর দিয়ে। ছবিকে ঘিরে ঘুরে এসেছেন জবিনের স্মৃতি-পেলব-আনন্দ-রূপরহস্য থেকে
“তুমি কি কেবল ছবি শুধু পটে লিখা
ওই সুদূর নীহারিকা
যারা করে আছে ভিড়
আকাশের নীড়
ওই যারা দিনরাত্রি
আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী
গ্রহ তারা রবি
তুমি কি তাদের মতো সত্য নও!”
কেবল চেতনের মধ্যেই পরিবর্তনশীলতার গুণ আরোপ করে তিনি বলেছেন- বি ভরহফ ভড়ৎ ঃযধঃ ভড়ৎ ধ পড়হংপরড়ঁং নবরহম, ঃড় বীরংঃ রং ঃড় পযধহমব রং ঃড় সধঃঁৎব ধহফ ঃড় সধঃঁৎব রং ঃড় মড় ড়হ পৎবধঃরহম ড়হব ংবষভ বহফষবংংষু.
শাহজাহান কবিতায় কবি তাকে আবিষ্কার করলেন দুইভাবে রুদ্ধ, ব্যক্ত এবং মুক্ত ও অব্যক্ত-
যতদূর চাই
নাই নাই সে পথিক নাই
প্রিয়া তারে রাখিল না, রাজ্র তারে ছেড়ে দিল পথ
রুধিল না সমূদ্র পর্বত
আজি তার রথ
চলিয়াছে রাত্রির আহ্বানে
নক্ষত্রের গানে
প্রভাতের সিংহদ্বার পানে
চলবে...

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




