২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর ইলন মাস্ক টুইটার কিনে নেন। আর এর পর টুইটার নিয়ে তার নানা ধরণের পাগলামির কথা আমরা কম বেশি সবাই জানি। ইলন মাস্কের পাগলাটে স্বভাব যাদের কাছে পরিচিত ছিল না তারাও অলরেডি জেনে গিয়েছেন তার এই স্বভাবের কথা। কর্মী ছাটাই থেকে শুরু করে ব্লু টিক্ কি করেননি তিনি। আর এর সাথে তার পাগলামির সর্বশেষ সংস্করণ, এক্স ডট কম। আজকে আপনাদের ইলন মাস্ক এবং এক্স এর গল্প বলবো।
আমার সম্পূর্ণ লেখাটি ভিডিও আকারে দেখতে পাবেন এখানে - ইলন মাস্কের X
যারা এখনো ঘটনা জানেন না তাদের জন্য ছোট্ট করে বলে নিই, ইলন মাস্ক টুইটার কে এক্স ডট কম নামে রিব্র্যান্ড করেছেন। এখন থেকে এক্স ডট কমে ভিজিট করলে তা আপনাকে রিডাইরেক্ট করে টুইটার এ নিয়ে যাবে। শুধু এখানেই থেমে থাকেননি এই মহারথী। ২০০৭ সাল থেকে ব্যবহার করা এক ব্যক্তির @এক্স উজারনেমও নিয়ে নিয়েছেন তিনি। আর সাথে এক্স এর লোগো তো আছেই। সব কিছু মিলায়ে, ইলন মাস্ক টুইটারকে এক্স নামে রিব্র্যান্ড করে ফেলেছেন। আর এই সাথে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, এক্স হবে একটা Everything App । যেই ধারণাকে সুপার App ও বলা হয়ে থাকে। আর এইটার মধ্যে তিনি তার সবকিছু ঢুকাতে চান।
ওকে, এবারে বলি এক্স এর গল্প।
১৯৯৯ সালে ইলন মাস্ক, এক্স ডট কম নামে একটা অনলাইন ব্যাঙ্ক চালু করেন। আর সে সময় থেকেই তার এক্স লেটারটির প্রতি অন্য রকম একটা ফ্যাসিনেশন কাজ করতো। পরে ২০০০ সালে এক্স ডট কম পেপাল এর সাথে মার্জ হয়ে যায়। এবং ইলন চেষ্টা করেন পেপাল এর নামের সাথে এক্স ব্যবহার করতে। কিন্তু তিনি তা পারেন নি।
আবার অনেকেই ধারণা করেন, ১৯৯১ সালে ডগলাস কোপল্যান্ড এর লেখা জেনারেশন এক্স নামক একটা নভেল এর থেকে এক্স লেটার এর প্রতি ইলন মাস্কের এই ফ্যাসিনেশন। তবে ফ্যাসিনেশন যেভাবেই হোক, সেটা যে তাকে খুব ভালভাবে ধরেছে তা বোঝা যায় তার কাজ কর্মে। যেমন ধরেন, তার রকেট কোম্পানিটির নাম - স্পেসএক্স, টেসলার গাড়ির একটা মডেলের নাম, মডেল এক্স, AI লঞ্চ করেছেন তার নাম দিয়েছেন xAI , ইভেন তার একটা সন্তানের নামই দিয়েছেন এক্স দিয়ে। তিনি তার সবকিছুতে এক্স এর ছোয়া দিয়ে ফেলেছেন বা দিতে শুরু করেছেন অলরেডি।
শোনা যাচ্ছে, ইলন মাস্ক তার এক্স ব্র্যান্ডকে "এভরিথিং app " বা সুপার App হিসেবে দাঁড় করা চান। এবারে আসি সুপার App এর ধারণা নিয়ে। সুপার App হচ্ছে এমন একটা মোবাইল কিংবা ওয়েব App , যার মধ্যে অনেকগুলো সার্ভিস একসাথে প্রোভাইড করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সার্ভিস হচ্ছে, ব্যাংকিং, ফিনান্সিয়াল ট্রাঞ্জেকশন, মেসেজিং, অডিও, ভিডিওসহ আরো নানা ধরণের সার্ভিস। তারমানে ধরে নেয়া যায়, ইলন মাস্ক তার X ব্র্যান্ড এর মধ্যে এই সবকিছু যুক্ত করবেন। টুইটার এ অলরেডি কিছু সার্ভিস আছেই, এর সাথে অন্য আরো অনেক সার্ভিস যুক্ত হবে হয়ত খুব দ্রুতই। তাই আমাদের আপাতত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
হঠাৎ করে ইলন মাস্ক এমন সিদ্ধান্তে কেন আসলেন তা বলাটা বেশ মুশকিল। তবে ধারণা করা যায়, ইলন মাস্ক মেটার সাথে হয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। দেখেন, ইলন মাস্ক না চাইলেও, তার এবং মার্ক জাকারবার্গের মধ্যে একটা অঘোষিত প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়ে গিয়েছে টুইটার কেনার পর। আর জাকারবার্গ থ্রেডস লঞ্চ করার পর যেন আগুনের মধ্যে খানিকটা ঘি পড়ে যায়। দুজনের খেলা হয়ত শুরু হয়ে গেছে। চলেন আমরা পপকর্ন নিয়ে দর্শক গ্যালারিতে বসে পড়ি এর পর কি কি ঘটে দেখার জন্য।
বাই দ্যা ওয়ে, ইলন মাস্কের আরেকটা খবর আমাদের দেশের মিডিয়াতে বেশ ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। আর তা হলো বাংলাদেশে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা দেবে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান ষ্টারলিংক। এবিষয়ে কথা বলবো অন্য কোনোদিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:৪৪