মাথা নিচু করে শুধু ঘাস খেয়ে যাচ্ছে। প্রথমে দেখাযায় কিছু ছাগল-ভেড়া তারপর গরু। মহিষের অবস্থান অাগের চেয়ে কমে গেছে। বাংলাদেশের দ্বীপরাণী খ্যাত ভোলা জেলার সর্বদক্ষিণের একটি চর ঢালচর। চারদিকে নদী ও বঙ্গোপসাগরের বেষ্টনী এবং এক-ষষ্ঠাংশে মানুষের বসতি রয়েছে এ চরটিতে, বাকী অংশে ম্যানগ্রোভ বন ও চারণভূমি। প্রাকৃতিক দিক থেকে চরটিতে পশুপালনের এক বিস্তর জায়গা রয়েছে। স্থানীয় লোকেরা তা ব্যবহার করছে কিন্তু এক অবাক করা, অদ্ভুত উপায় অবলম্বনে চারণভূমিতে পশুপালন করছে । গর,মহিষ, ছাগল-ভেড়া কোনটাই যেন বাদ নেই। যাদের গরু রয়েছে তারা ম্যানগ্রোভ বনে গরু ছেড়ে দেন, রাতে এসব গরু এ বনে থাকে এবং দিনের বেলা ভাটার সময় চারণভূমি বা ঘাস অছে এমন জায়গায় গিয়ে খাদ্য খুঁজে নেয়। তাতে না হলে গাছের পাতা খেয়ে থাকে। এগরু সংখ্যা একটি দু'টি নয়, অসংখ্য। এ চরে প্রায় ঊনিশ শত পরিবার রয়েছে, হাতে গুনা কয়েকটি পরিবার ছাড়া সবাই কোন না কোন ভাবে পশু পালনের সাথে যুক্ত।
হাজার গরুর মাঝে গরুর মালিক তার প্রকৃত গরুটি কিভাবে খুঁজে বের করে তা নিয়েও মঝার ব্যাপার অাছে। গরু সহ অন্যান্য পশুদের কানের দিকে লক্ষ্য তার রহস্য বের করা যায়। গরুর কান ছিদ্র করা অথবা কাটা দাগ দেখা যায়। এ কাজটি গরুর মালিক যখন গরু বাচ্চা প্রসব করে তার দু'এক মাস পর বাচ্চাটিকে এ চিহ্ন দিয়ে দেন । এ ক্ষেত্রে চরে পারিবারিক সূত্রে অাত্মীয় এমন কিছু গোষ্ঠী আছে। প্রত্যেক গোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন চিহ্ন দিয়ে থাকে গরু চিনবার জন্য।
Click This Link
চরের দক্ষিন অংশেই বন পুরো বনেই গরু ছাগল-ভেড়া আর মহিষের বিচরণ। মহিষের ঘাস বেশি প্রয়োজন হয়। কিছু সময়ে বাগানে ঘাস কমে যায় আর তখন মহিষের পাল মানুষের বসতিতে এসে কৃষি শস্যখেতে হানা দেয়। এসব কারণে মহিষের মালিকরা বাধ্য হয়ে বসতিহীন চর ঢালচরেরর ঠিক পূর্বে আবস্থান করছে আরেকটি চর স্থানীয়রা পূবের চর বলে চিনে। সেখানে মহিষ পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
পশুপালনের এ অদ্ভুত পদ্ধতি কিছু বিষয় পরিষ্কার না করলেই নয়। বনে পশুরাই থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু পশুর মালিক যে নিদিষ্ট কোন ব্যক্তি হবে তা নিশ্চিত কারণ কেউ না কেউ এটাকে বনে রেখে গেছে । গরু-মহিষ বনে এ বনে থাকতে থাকতে অনেক সময় পুরো বন্য হয়ে যায়। তখন ধরার জন্য অনেক সময় গরু বা মহিষের মালিক বাজেট ঘোষণা করেন। আবার দু'জন এক পশুর দাবি করে। বিচার ফয়সালাও হয় সাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২৭