somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মক্কা,মিনায় হাজ্বীদের মৃত্যুতে জাগছে মানবতা না ধর্ম?

০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পবিত্র মক্কায় ক্রেন দুর্ঘটনায় হাজ্বীদের মৃত্যু ও মিনায় শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর ছুড়ে মারতে গিয়ে অসংখ্য হাজ্বীদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ায় তুমুল আলোচনার ঝড় উঠেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগে কোন কোন নাস্তিক বা মানবতাবাদীদের এক ধরণের উল্লাস/সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা যায়।আবার কোন কোন নাস্তিক/মানবাতবাদী এটাকে ভুল হিসাবে দেখছেন,তারা বলছেন এভাবে মানুষের মৃত্যুতে কোনভাবে উল্লাস প্রকাশ /সন্তুষ্টি দেখানো মানবতা বিরোধী।তাদের মৃত্যুতে তারা সমব্যাথী।

অন্যদিকে ধর্মবিশ্বাসী মানুষ এটাকে অাল্লাহর গজব,আল্লাহর খুশিতে সরাসরি বেহেস্তে যাওয়া মনে করে কেউ কেউ তৃপ্তি বা সান্ত্বনা নিচ্ছেন।আবার সচেতন মুসলিস সমাজ বা অন্য ধর্মাবলম্বীরা এটাকে সৌদি সরকারের চরম অব্যবস্থাপনা বা সৌদি যুবরাজের বিশাল গাড়ীবহর নিয়ে যাওয়ার পথ করে দিতে ঠেলাঠেলি ও পদদলিত হয়ে মৃত্যুের কারণ বলে চরম ধিক্কার দিচ্ছেন।

আবার যে সব হাজ্বীরা দুর্ঘটনার স্থান থেকে ভাগ্যক্রমে বেচে গিয়েছেন এবং চোখের সামনে অন্য হাজ্বীদের মৃত্যু দেখেছেন বা দূরে থেকে সৌদি সরকারের অব্যস্থাপনা,যুবরাজের গাড়িবহরের যাতায়াত, কয়েকটা গেট বন্ধ করে দেওয়া ....তারা দেশে ফিরে চরম অস্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।মৃতদের কেউ সৌভাগ্যবান বলতে তারা রাজী নয়।মৃতদের পরিবারে সন্তুাষ্টির পরিবর্তে চলছে কান্নার রোল,তীব্র হতাশা, ক্ষোভ।

পবিত্র মক্কা বা মিনায় মৃত্যু বিশেষ করে হজ্ব করতে যেয়ে মৃত্যু ইসলাম প্রিয়দের কাছে আনন্দের ব্যাপার এই ভেবে যে এখানে মরলে সরাসরি বেহেস্তে যাওয়া যাবে।তবে এই কামনা বৃদ্ধ হাজ্বীদের ক্ষেত্রে দেখা গেলেও বৃদ্ধ থেকে একটু কমবয়সী বা যুবকদের কাছে তা মনে হয না।তাদের পরিবার হয়ত হয়ত সাত্বনা খোজে কিন্তু নিহতেদের পরিবার তীব্র মানসিক কষ্টে ভোগে।

কিন্তু এখানে স্বয়ং আল্লাহর কোন ব্যাখ্যা বা আগ্রহ নেই।

ধর্মবিশ্বাসীসদের কথা বাদ দিলাম।তারা তাদের বিশ্বাস নিয়ে থাক।পবিত্র স্থানে পদদলিত হযে মৃত্যুকে আল্লাহর ইচ্ছা বলে সন্তুষ্টে থাকুক! সরাসরি বেহেস্তে যাওয়ার আনন্দ উপভোগ করুক ! আল্লাহর ঘরে শয়তান বেশি শক্তিশালী তা তারা নাই মানুক! শয়তানকে পাথর ছুড়ে মারতে যেয়ে একজন শয়তানকে না মরতে পারলেও সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রিয় শত শত বান্দারাই নিজেরাই মরুক! শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে,সাতসমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে,জীবনের মূল্যবান সময় ফেলে,তার সবচেয়ে প্রিয় গৃহে বা স্থানে যেয়ে তারাই মরুক! তাতে নাস্তিক বা মানবতাবাদীদের কী যায় আসে?

তাহলে মানবতাবাদীরা কী আনন্দ করবে না উল্লাস প্রকাশ করবে না শোকে মূহ্যমান হবে?

মানবতাবাদীদের/নাস্তিকদের কাছে এটা স্রেফ একটি দুর্ঘটনা এবং এর জন্য দায়ী সৌদি সরকারের চরম অব্যবস্থনা।আর কে কীভাবে দায়ী তা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।দায়ীদের উপযুক্ত শাাস্তি কাম্য।যে কোন অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সবার খারাপ লাগা উচিত। মানবতাবাদীদের কাছে মানুষ এবং মানবতা সবার উপরে ।সেই মানুষের করুন মৃত্য যা আমাদের অব্যস্থপনার কারণে সংঘটিত হয়-তা কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।

কিন্তু সেই মানবতাবাদী/নাস্তিকরা কেউ কেউ উল্লাস প্রকাশ করছে কেন?

আমরা দেখছি পৃথিবীতে যত মানবতা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে তার অধিকাংশের সাথে ধর্ম জড়িত। সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইসরাইল, মিশর, ইরাক, ভারত, সৌদি আরব,বাংলাদেশ-সর্বক্ষেত্রে ধর্ম জড়িত।এই ধর্ম এত অন্ধ যে,ধর্মের নামে মানুষ হত্যা,ধর্মের নামে ধর্ষণ,ধর্মের নামে যুদ্ধ,ধর্মের নামে বলি,ধর্মের নামে জাতিভেদ,ধর্মের নামে লিঙ্গভেদ,ধর্মের নামে বর্ণভেদ,ধর্মের নামে আঞ্চলিকভেদ সসকল নৃশংসতা বৈধতা পেয়ে যাচ্ছে।ধর্মান্ধ মানুষ সব মেনে নিচ্ছে।

কিন্তু এগুলো কোনভাবেই সমর্থন করা যায় না।সবই মানবতা বিরোধী কাজ।অথচ ধর্মের নামে সব বৈধ হয়ে যাচ্ছে।সেই ধর্ম যখন বিপদে পড়ে,ধর্মের বিশ্বাসীগণ তাদের সর্বোচ্চ নিরাপদ ও পবিত্র স্থানে যেয়েও নির্বিকারে মারা যায়,ধর্মের সর্বশেষ আশ্রয়,সর্ব ক্ষমতার অধিকারী,সর্বশ্রেষ্ঠ মহান বিন্দুমাত্র কোন ভুমিকা রাখে না, তখন কল্পিত সর্বশেষ আশ্রয়,সর্ব ক্ষমতার অধিকারী,সর্বশ্রেষ্ঠ মহান অাল্লাহর অসার ও কাল্পনিক রূপটিও ফুটে ওঠে।তাইতো মানবতাবাদীরা তাদের যুক্তির পক্ষে উপকরণ খুজে পায়।ধর্মের অসারতা প্রকটভাবে ফুটে ওঠে।তখন কাল্পনিক ধর্মগুলো মৃত হয়ে ওঠে,মানবতা জেগে ওঠে।

নাস্তিক বা মানবতাবাদীরা বিশ্বাস করে পৃথিবীতে ধর্মের কারণে অধিকাংশ অমানবিক নৃশংস কাজগুলো সংঘটিত হয়েছে ও হচ্ছে।অথচ তারা যে অাল্লাহ,খোদা,ঈশ্বর বা ভগবান নামক সর্বশক্তিমানের উপাস্য করে , মানুষের বিপদে তারা কোন ভূমিকা রাখেন না।বার বার এইসব শক্তির অসরতার প্রমাণ আমাদের সামনে উপন্থিত হচ্ছে।তারপরেও মানুষ তাকে বিশ্বাস করে অমানবিক ও নৃশংস কাজগুলো করে যাচ্ছে।সম্প্রতি মক্কা ও মিনায় ঘটে যাওয়া ঘটনা তার আরেক জলন্ত প্রমাণ।তখন নাস্তিক/মানবতাবাদী না হেসে পারে না।তাদের সকল উল্লাস ধর্মের প্রতি মানুষের মিথ্যা বিশ্বাসের জন্যে।যারা মারা যাচ্ছে তাদের জন্য নয়।বরং তাদের এভাবে মৃত্যুতে এইসব ধর্মই দায়ী।
অামরা অার কতদিনে সত্যকে উপলব্ধি করেত পারো?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:০৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×