হিটলার ও ইভা ব্রাউন
উইকির মতে ইভা ব্রাউন হল হিটলারের দীর্ঘসময়ের সঙ্গী আর সল্প সময়ের জন্য স্ত্রী । মিউনিখে কাজ করার সময় হিটলারের সাথে প্রথম দেখা , হয়ত প্রথম দেখায় প্রেম। ইভার নিত্যদিনের কাজের মধ্যে ছিল সিনেমা দেখা, রোমান্টিক উপন্যাস পড়া, শরীরচর্চা ইত্যাদি। ইভার মিডিয়া জগতের প্রতি ব্যপক আগ্রহ ছিল, ১৭ বছর বয়সে ফটোগ্রাফির মডেল থেকেই তার যাত্রা শুরু। কিন্তু হিটলার সাহেব এইগুলা চরম অপছন্দ করতেন তাই রিলেশন বিল্ডআপ করার পর ইভা'র এগুলা রংবাজি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কই ইভা আপা একটু ধূমপান করতেন, হাল্কা মেকাপ লাগাইতেন, ছোট ছোট কাপড় পইড়া ভিটামিন ডি শরীরে মাখতে চাইতেন তা না হিটলার সাহেব এর উপর সমন জারি করলেন, এগুলান চলবো না । ইভা আপা আবার ফটোগ্রাফী খুব পছন্দ করতেন , তার বদ্দৌলতে হিটলারের কিছু রঙিন ছবি আমরা দেখতে পাই। রিলেশনশিপের প্রথম অবস্থায় হয়তো মনমালিন্য হওয়ায় ইভা আপা দুইবার আত্নহত্যার অ্যাটাম্প নেন, বাট ফেইলড। ১৯৪৪ সালের আগ পর্যন্ত তাকে জনসম্মুখে খুব কমই দেখা গেছে। তার কর্মকান্ড সবই হিটলারের নির্দিষ্ট বেধেঁ দেওয়া গন্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, ১৯৪৪ এর পর তার বোনের সাথে হিটলারের এক সহকর্মীর বিয়ের পর দুইজনকে জনসম্মুখে একটু দেখা গেছে।
ইভা ব্রাউন
বিবাহ পুর্ববর্তী অবস্থায় হিটলার-ইভা তাদের সংসার বারগৌফে গুছিয়ে নিয়েছিল। হিটলার ইভাকে একটু বেশীই মনেহয় ভালোবাসতেন, তার লেখা ইভাকে দেওয়া চিঠি পড়লেই তা বুঝা যায়। ইভা আপাও কম যান না, ১৯৪৪ সালে হিটলারকে লেখা তার চিঠি টা দেখেন----
"Geliebter,
I am beside myself. I am dying of anxiety now that I know you are in danger. Come back as soon as possible. I feel as if I am going insane.
The weather is beautiful here and everything seems so peaceful that I am ashamed of myself ... You know I have always told you that I would die if anything happened to you. From our first meeting on, I have promised myself to follow you wherever you go, even to death. You know that I live only for your love.
Yours Eva"
হিটলার যখন বার্লিনে যুদ্ধের চরম অবস্থায় , ইভা তখন মিউনিখ থেকে ছুটে আসে হিটলারের এই বিপদে। হিটলার তাকে চলে যেতে বললে ইভার প্রতিৎতুর ছিল এরকম--
"I will let you die alone??"
হ্যাপ্পী ফ্যামেলি : হিটলার, ইভা, হিটলারের কুকুর ব্লন্ডি, আর ঐ কালা বিড়ালটার নাম জানি না
হায়রে প্রেম , শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ এমন অবস্থায় ২৯ এপ্রিল ১৯৪৫ সকালে হিটলারের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাদের শুভ বিবাহ সম্পুর্ন হয়, এসময় ইভার বয়স ছিল ৩৩ আর হিটলারের ৫৬। বিয়া হইয়াও কি , ৪০ ঘন্টা যাইতে না যাইতে সব শেষ। হিটলারের শেষ ভরসা স্তেইনের বাহিনী যখন আত্নসমর্পন করলো তখন হিটলারের মনের আশা ভরসাও উড়ে গেল। বার্লিনের এক বাংকারে এই রকম বিপদে ইভা কে তিনি পালিয়ে যেতে বলেন কিন্ত ইভা যায়নি, ভাগ্যের পরিহাস মেনে নিয়ে হিটলারের সাথে থেকে যায়। এর পর দিন ৩০ এপ্রিল হিটলার আত্নহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে তার আদরের কুকুর ব্লন্ডি কে বিষ দিয়ে মেরে ফেলেন, এরপর হিটলার ও ইভা সায়ানাইড পানে মৃত্যকে ডেকে আনেন, হিটলার হয়ত মৃত্য আরোও নিশ্চিত করতে নিজের ৭.৬৫ মিমির ওয়ালথার পিস্তল দিয়ে মাথায় শ্যুট করেন।
আমাদের জাতীয় কবি লিখেছিলেন যে " বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর" , তবে এক্ষেত্রে ইভার কি অবদান তা বুঝা গেল না। হিটলার আর যাই হোক নিজে অস্ট্রিয়ান হয়ে জার্মানি কে একটু বেশীই ভালোবাসত, জার্মানীর জন্য তার দেশপ্রেমের কোন ঘাটতি ছিল না, ঐ সব ইহুদী নিধন বাদে। তিনি তার আদর্শ থেকে সরে যেতে পারেন এজন্যই ইভা ব্রাউন কে আগে বিয়ে করেন নি, শেষ সময়ে মূলত ইভার অনুরোধ রাখতে হিটলার তাকে বিয়ে করেন।
আর এর মধ্যদিয়ে শেষ হয় একনায়কতন্ত্রিক বীরের মৃত্যু, সাথে সাথে অসম্পুর্ন থেকে যায় এক না বলা ইতিহাস, এক চিরন্ময় প্রেমকাহিনী।
সংযুক্তি :
হিটলারের বাংকারে থাকাকালিন শেষের দিন গুলো কিছু মুভি বানানো হইছে। জার্মান পরিচালক অলিভার হির্খবিগের এর ছবি Downfall হিটলারের বার্লিনে বাংকারের শেষ দশ দিনের উপর বেস করে বানানো হয়েছে। এছাড়া তার জীবন নিয়ে করা Hitlar : The Rise Of Evil টাও দেখতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১১ রাত ৯:১২