আলহামদুলিল্লাহ।
ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মদ ﷺ।
প্রতিদিন আমরা অনেক ভালো কাজ করার চেষ্টা করি এবং করেও থাকি। যেমন: কিছু টাকা পয়সা দান করা, কাউকে পানি চাইলে পানি দেওয়া, মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করা, গাড়িতে উঠে দাড়িয়ে বয়স্কদের বসতে দেওয়া, ক্ষুধার্তকে আহার করানো প্রভৃতি। আমরা যারা মুসলিম আমরা এই ভালো কাজগুলো করি কারো নিকট বাহবা পাওয়ার জন্যে নয় কিংবা অন্যে আমাদের ভালো বলবে তার জন্যে নয় আমরা ভালো কাজগুলো করি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে। ঈমানের অন্যতম একটি শাখা পরকালের প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলে পরকালে তার উত্তম বিনিময় পাওয়া যাবে। এই ভালো কাজগুলো কিভাবে করলে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে তা আমাদের প্রিয় নবী রাসূল ﷺ আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন।
যে নামায পড়ে না তার কোন ভাল কাজই মহান আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না, হোক সেটা যাকাত, রোযা, হজ্জ্ব অথবা অন্য কোন ইবাদত। সহীহ আল বুখারীতে, বুরাইদা কর্তৃক বর্ণিত: আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন: “যে ব্যক্তি আছর নামায পড়লো না, তার ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হবে।”
“তার ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হবে” দ্বারা বুঝাচ্ছে বৈধ বলে বিবেচিত হবে না এবং এই ভালো কাজগুলো দ্বারা সে লাভবান হবে না। এই হাদীস দ্বারা বুঝাচ্ছে, যে ব্যক্তি নামায পড়ে না তার কোন ভাল কাজই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং যে নামায পড়বে না সে তার ভাল কাজের বিনিময়ে কোন সওয়াব পাবে না এবং তারা ভাল কাজগুলো মহান আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না।
এই হাদীস থেকে আমরা দুই ধরণের মানুষের বিষয়ে অবগত হচ্ছি তারা হলো: যারা একেবারেই নামায পড়ে না ও তাদের সমস্ত ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হবে এবং যারা কোন এক নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ওয়াক্তের নামায পরিত্যাগ করে যার ফলে ঐদিনের সকল ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হয়। সুতরাং ভাল কাজগুলো বাতিল বলে পরিগণিত হয় যে একেবারেই নামায পড়ে না তার জন্যে এবং যে কোন এক নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ওয়াক্তের নামায পড়ে না তার জন্যেও।
রাসূল ﷺ বলেছেন: “কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দাহর নামাযের হিসাব নেওয়া হবে। যদি এটা(নামাযের হিসাব) ঠিক থাকে তাহলে তার বাকি কাজগুলো সঠিক(গ্রহণযোগ্য) বলে পরিগণিত হবে আর যদি এটা ঠিক না থাকে তাহলে বাকি কাজগুলো খারাপ(বাতিল) বলে পরিগণিত হবে।"(আত তাবারানী, আল জামী, হাদীসটি সহীহ)
আবু হুরাইরা (রা) কর্তৃক বণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন: "কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব গ্রহণ করবেন। যদি এই হিসাব ঠিক থাকে তাহলে সে সফল হল আর যদি সেই হিসাব সঠিক না থাকে তাহলে সে ব্যর্থ এবং ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যদি ফরজ নামাযে কোন অপূর্ণতা থাকে তাহলে আল্লাহ তাআলা বলবেন, দেখ আমার বান্দাহর কোন নফল নামায রয়েছে কিনা যা দিয়ে ফরজ নামাযের ঘাটতি পূর্ণ করা যায়।" (তিরমিযী, আবু দাউদ, আন নাসাঈ, ইবনে মাযাহ এবং আহমদ)
রাসূল ﷺ বলেছেন: “নামায হচ্ছে দ্বীন ইসলামের খুটি। যে এটাকে প্রতিষ্ঠিত করলো সে দ্বীন ইসলামকেই প্রতিষ্ঠিত আর যে এটাকে ধ্বংস করলে সে দ্বীন ইসলামকেই ধ্বংস করল।” (আত তাবারানী)
কাজেই হে মুসলিম ভাই এবং বোনেরা, আসুন আজ থেকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হই যে, আমরা এক ওয়াক্ত ফরজ নামায ছেড়ে দিব না। যত যাই হোক, যে পর্যন্ত আমরা নিজেদের নাম স্বরণ করতে পারব সে পর্যন্ত আমরা ফরজ নামায পরেই যাব, ইনশাল্লাহ। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায সহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী নিয়মিত আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৩৪