somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেট ক্রাইমের বিরুদ্ধে এখন জাতি হিসেবে আমাদের করণীয় কী?

১৮ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৩:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্রাইস্টচার্চের হামলার সময়ে আমাদের এখানে বৃস্পতিবার গভীর রাত। আমি যখন ঘুমাতে যাই তখন কেবল শোনা যাচ্ছিল ১২ জন নিহত হয়েছেন। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
সকাল হতে হতে সেই সংখ্যা ৪৯ এ গিয়ে ঠেকলো।
আমাদের তখন শুক্রবার সকাল। জুম্মার প্রস্তুতি চলছে।
স্বপরিবারে গেলাম জুম্মায়। বৌ বাচ্চা সহ। খুৎবা শুরু ১:৪৫ এ, গাড়ি পার্ক করে মসজিদে যেতে যেতে দেখি অনেকেই উল্টো পথে ফেরত আসছেন। পুলিশ ছিল অনেক, ছিল অনেক প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ডও। তাঁদেরই একজন বললেন, "মহিলাদের ইবাদতখানায় তিল ধারণ ঠাঁই নেই। পুরুষদের স্থানে দশ বারোজনের জায়গা হবে খুব বেশি হলে। একটু দেরি করলে সেটাও মিস হবে।"

আমাদের দেশে যেমন কোন দালানে সর্বোচ্চ কতজন মানুষের জায়গা হওয়া সম্ভব সেই ব্যাপারে কোন আইন কানুনের প্রয়োগ নেই, অ্যামেরিকা বা ওয়েস্টার্ন দেশগুলোতে কোন দালানে যদি সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা একশো মানুষের হয়, তাহলে সেখানে একশোর বেশি আর একজনকেও ঢুকতে দেয়া হয়না। এখানে যেমন সাফ জানিয়ে দিল, "তুমি দেরি করে এসেছো, কিছু করার নেই। পরের জামাতে শরিক হও, অথবা অন্য কোন মসজিদে নামাজে যাও।"

বৌকে গাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে আমি এবং ছেলে ঢুকে গেলাম মসজিদে। ঈমাম খুৎবা শুরু করে দিয়েছেন। চিনবেন হয়তো তাঁকে, ওমর সুলাইমান। বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলার। আমি এবং ছেলে মসজিদের অন্য হল ঘরের দরজার ফাঁকে নামাজ পড়ার স্থান পেলাম। এতই মানুষের সমাগম।
অথচ নিউজিল্যান্ডের ঘটনা অ্যামেরিকার কোন মসজিদে ঘটাটা ছিল অতি স্বাভাবিক।
কারন "হোয়াইট সুপ্রিমেসি" আন্দোলনের তীর্থভূমি আমাদের এই পুণ্যভূমি অ্যামেরিকা। টেক্সাস এখনও রেসিস্টদের আখড়া। ডালাস মেট্রোপ্লেক্সের একটু বাইরে গেলেই "রেডনেকদের" দেখা যায়। যারা কালো বা বাদামি বর্ণের মানুষতো দূরের কথা, নিজেদের ফিলোসফির বাইরের সাদা চামড়ার লোকজনদেরই দুচোখে দেখতে পারেনা। এই ডালাসেরই আশেপাশের কিছু কিছু শহরে ওরা বর্ণবাদী পোস্টার লাগিয়ে বেড়ায়। গোপনে সভা সম্মেলন করে।
আমার এলাকার বাচ্চাদের পার্কেই সেদিন দুই বাচ্চাকে সাদা দুই বাচ্চা "ম্যাক্সিকান ডগ" বলে গালি দিয়েছিল। প্রথম কথা, ঐ দুই বাচ্চাও ম্যাক্সিকান না, বরং ওদের মতই সাদা। এবং দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এই শিশুগুলো আপনাতেই এইসব বর্ণবাদী গালি শিখেনি। নিশ্চই তাদের বাড়িতে তাদের বাবা মা এইসব বলে থাকে।
যাই হোক, এই বিষয় নিয়ে আমাদের এলাকার ফেসবুক গ্রূপে বর্ণবাদীগুলোকে সেদিন খুব পিন্ডিচটকানো হয়েছিল। কিন্তু এইরকম সামগ্রিক তিরস্কারে ওরা যদি শুধরে যেত, তাহলে পৃথিবীটা আসলেই স্বপ্নের দেশ হতো।
হেট ক্রাইমের আরেকটা কারন হচ্ছে আমাদের প্রেসিডেন্ট, জনাব ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং এই হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট বর্ণবাদীদের নেতা, গুরু, প্রতিভূ। নিউজিল্যান্ডের খুনি নাম ধরে এর জয়জয়কার করেছে - আর কী প্রমান লাগবে এর বদমাইশির?

গত দেড় বছরে অ্যামেরিকায় যাবতীয় সন্ত্রাসী হামলার শতকরা ১০০ ভাগ করেছে এই হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট বর্ণবাদী জানোয়ারগুলো। এদের হাতে মরেছে সিনাগগের মানুষ, সিনেমা হলের মানুষ, চার্চের মানুষ, স্কুলের শিশুরা পর্যন্ত রেহাই পায়না। এদের বিশ্বাস, দুনিয়ায় ওরা ছাড়া আর কারোর বাঁচার কোন অধিকার নেই।

তো যা বলছিলাম, এমন একটি শ্বাসরুদ্ধকর দিনে মসজিদে এতটা ভিড় হবে আমি আশা করিনি। কিছুদিন আগেই সিনাগগে বন্দুকধারীর হামলায় একদল ইহুদি মারা যাবার পরে পুরো দেশজুড়ে ইহুদি পাড়াগুলোয় বেশ থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল। সিনাগগগুলো হয়ে গিয়েছিল শুনশান। তখন পুরো দেশের মুসলিমরা তাঁদের "কাজিন ব্রাদার" ইহুদিদের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। টাকা, রক্তদান, ফিউনারেল থেকে শুরু করে মোরাল সাপোর্ট - সবকিছুতে সবার আগে তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল মুসলিমরা।
আমার ধারণা ছিল, মসজিদে গিয়ে দেখবো ভিড় কম, আতঙ্কিত চেহারায় মুসলিমরা বসে থাকবেন। আমাদের সাহস দিতে হয়তো মসজিদে হাজির হবেন ইহুদি rabi, গির্জার পাস্তুর, উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার, এবং আমরাও কোনরকমে জুম্মা আদায় করেই বিদায় নিব।
পুরো ধারণা উল্টে দিয়ে দেখি এই অবস্থা। কেন? সেটা ঈমামের খুৎবায় তিনি উল্লেখ করেছেন।

"ওরা যদি ভেবে থাকে রাইফেলের গুলির ভয়ে আমাদের আতংকিত করতে পারবে, তবে জেনে রাখুক, আমরা বিশ্বাস করি, আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ মৃত্যু আর কিছু হতে পারেনা। আমরা ভীত নই, আমরা আমাদের রবের ইবাদতে লজ্জিতও নোই।"
"মাত্র দুইটি মসজিদে মাত্র একটি বন্দুকধারীর হামলায় এত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি, অথচ এইটা সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছি যে ফিলিস্তিনের গাজ্জায়, সিরিয়ায় প্রতিদিন এয়ার স্ট্রাইক হচ্ছে। গতরাতেও তাঁদের ওপর হামলা হয়েছে। রকেট লঞ্চার দিয়ে আক্রমন করা হচ্ছে তাঁদের উপর। তাঁরা এই পরিস্থিতিতেও চিন্তা করে জুম্মার আয়োজন নিয়ে।"

নাইন ইলেভেনের পর বর্ণবাদী হামলায় যখন দেশব্যাপী নিরাপত্তার খাতিরে মসজিদ বন্ধ হবার উপক্রম দেখা দিয়েছিল, তখন এক কালো বিশালদেহী বলশালী খ্রিষ্টান পুরুষ এগিয়ে এসে বলেছিলেন, "আমার লিগ্যাল রাইফেল আছে। তোমরা তোমাদের প্রার্থনা চালিয়ে যাও, আমি তোমাদের মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে পাহারা দেব।"
সবাই অবাক হয়েছিল লোকটির পাগলামো দেখে। পরে সে ব্যাখ্যা করে যে সে ছোটবেলায় লুইজিয়ানায় (আমাদের টেক্সাসের পাশের রাজ্য, আমার বাড়ি থেকে তিন ঘন্টাও লাগে না গাড়িতে যেতে) একবার এই হোয়াইট সুপ্রিমিস্টদের (কু ক্লাক্স ক্ল্যান) খপ্পরে পরে। ওরা সেই শিশুটিকে গ্যাসোলিন দিয়ে চুবিয়ে আগুন ধরাতে যাবে, এমন সময়ে সে বুদ্ধি করে এবং ভাগ্যক্রমে কোন রকমে নিজের প্রাণ নিয়ে পালাতে পেরেছিল।
আরেকবার যখন সে বড় হয়েছে, ট্যাক্স ফাইল কিভাবে করতে হয় সেটা সম্পর্কে জানার জন্য পাবলিক লাইব্রেরিতে যায় - এবং সেখানেও তাঁকে এই হোয়াইট সুপ্রিমিস্টদের দল বেধড়ক মারধর করে লাইব্রেরি থেকে বের করে দেয়। অল্পের জন্য সেযাত্রায়ও তাঁর প্রাণ রক্ষা পায়।
সে তাই বিশ্বাস করে মানবতায়। সে বিশ্বাস করে মানুষের স্বাধীনতায়। শুধুমাত্র কালো চামড়ার জন্য সে যা কিছুর মধ্য দিয়ে গিয়েছে, সেটার মধ্য দিয়ে অন্য কারোর যাওয়া রুখতেই আজীবন লড়ে গেছে। অ্যামেরিকার কনস্টিটিউশন বলে ফ্রীডম অফ স্পিচ, ফ্রীডম অফ রিলিজনের কথা। সাদা চামড়ার ঐ নোংরা নরকের কীটগুলো যা মানেনা।
বলাই বাহুল্য, এরপর মুসলিমদের সাথে মিশতে মিশতে, তাঁদের জানার পরে লোকটি কলিমা পাঠ করেছিল।

খুবই অবাক হলাম বাঙালি এক মহিলার একটি স্ট্যাটাস দেখে। যিনি নিজে বাঙালি হয়েও, নিজে "মানবতাবাদী" দাবি করেও এই ঘটনায় আনন্দিত স্ট্যাটাস দিলেন। তিন চারজন বাঙালি নিহত হয়েছেন, অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন আমাদের পুরো ক্রিকেট দল, তারপরেও "মুসলিমদের" বিরুদ্ধে এই মহিলার ঘেন্না এতটা বেশি যে ওর অন্তরে বিন্দুমাত্র রেখাপাত করলো না। মানুষ এতটা অমানুষ হয় কিভাবে? শিশুরা, মহিলারা নিরস্ত্র মানুষেরা যেখানে মারা গেছেন, সেই পরিস্থিতিতে এত নোংরা মানসিকতা দেখায় কিভাবে? এরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের কী শিক্ষা দিবে? সে নিজেও কী জীবনে স্কুল কলেজে গেছে? গন্ডমূর্খ বেকুব গাধীটা বুঝেও না যে এই যে তার হিরো ঐ আততায়ী, খোলা রাস্তায় পেলে তাকেও ঝাঁঝরা করে দিত। কারন তার চামড়াও বাদামি। এই নরাধমকে কে বুঝাবে যে আজকে একটি অন্যায়কে বাহবাহ দিয়ে বগল বাজাচ্ছে, কালকে সেই একই অন্যায় তার বিরুদ্ধেই হবে, হতে বাধ্য। এই সমস্ত হিপোক্রেট "মানবতাবাদীর" কান্ড দেখে দেখে বিরক্ত হওয়ার ক্ষমতাও হারিয়েছি।

যাই হোক। মসজিদে গুষ্ঠিসহ হাজির হয়ে তো আমরা দেখিয়ে দিলাম যে আমরা ভীত নই। এখন জাতি হিসেবে আমাদের করণীয় কী?

প্রথম করণীয় হচ্ছে, "সালাম" পৌঁছে দেয়া। এবং এর প্রথম পদক্ষেপ হবে, নিজের "কালো" "বাদামি চামড়া" এবং "মুসলিম পরিচয়" নিয়ে বিন্দুমাত্র লজ্জিত বা ভীত না হওয়া।
আপনি সাধারণভাবেই সবার সাথে মেলামেশা করুন। অফিসের হ্যাপি আওয়ারে যখন মদ সাধা হয়, বিনয়ের সাথেই বলুন আপনি কোক বা পেপসি খান। লজ্জার কিছু নেই, অনেক সাদা চামড়ার খ্রিষ্টান, বাদামি চামড়ার হিন্দুও এলকোহল খায় না। "ওখানে মদ পরিবেশন করা হয়" - বলে যাওয়া থেকে বিরত হবেন না। আপনি ওদের সাথে না মিশলে ওরা আপনাকে চিনবে কিভাবে?
আপনি যে খাবারে শুকরের মাংস বা হারাম মাংস এড়িয়ে চলেন, বলুন স্পষ্টভাবেই। আমার দেখা প্রবাসী ইন্ডিয়ান হিন্দুদের প্রায় ৮০% এমনকি সাদাদেরও অনেকেই ভ্যাজিটেরিয়ান, তাঁরা মাছ মাংস এড়িয়ে চলে। ইহুদিরা "কোশার মাংস" (আমাদের মতই আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করা মাংস) ছাড়া স্পর্শ করেনা - আপনি লজ্জিত হবেন কেন? আপনি বুঝিয়ে দিন আপনার কিছু রেস্ট্রিকশন আছে, তবে সেটা এমনও না যে আপনি একই টেবিলে বসে খেতে পারবেন না।
অফিসের কোন কলিগের, অথবা প্রতিবেশীর কারোর কোন রকমের সাহায্য লাগলে সবার আগে এগিয়ে যান। হোক সে সাদা, হোক সে কালো। আপনাকে এইটা বলতে হবেনা যে "দেখো আমি বাদামি চামড়ার মুসলিম/হিন্দু/ইমিগ্র্যান্ট, তোমার সাহায্য করছি।" ওটা ওরা আপনাতেই বুঝবে। আপনি কেবল মন থেকে সাহায্য করুন। যা বুঝার সে নিজেই বুঝবে।
আপনি যদি ভাল হন, তাহলে সেটাই আপনার পরিচিতি তুলে ধরবে।
আমার বৌ এমনিতেই হিজাব না পড়লেও চার্চে কোন সাহায্য করতে যাবার সময়ে আমি তাঁকে বলি অবশ্যই হিজাব পড়ে যেতে। বুঝুক এক দল মুসলিম ওদের ক্ষুধা মেটাতে এগিয়ে এসেছে। ওরা "সবাই" খারাপ নয়। আমাদের গিয়ে গিয়ে জনে জনে কুরআনের আয়াত, রাসূলের হাদিস বলার প্রয়োজন নেই। অ্যাকশন দিয়েই যা বুঝানোর বুঝাতে হবে। কেউ জানতে আগ্রহী হলে তখন বসা যাবে। কেউ না চাইলে তাঁর ব্যাপার। আমার কী?
আমাদের দেশের একদল মানুষের এই আচরণটাই বিরক্তিকর। চিনে না জানেনা বিধর্মী লোকজনকে ধরে অপমানজনক কথাবার্তা জুড়ে দেয়। ওরা ভাবে এতে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে দিচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, এতে ওদের মনে ক্ষোভ তৈরী করা হচ্ছে। এই অসভ্যতামি করবেন না।

নিজের জীবনের একটি অভিজ্ঞতা আমি আগে বহুবার শেয়ার করেছি। প্রসঙ্গ উঠায় আবারও করছি।
আমার এক কালে এক মহিলা বস ছিলেন যিনি ছিলেন সাবেক মিলিটারি, এবং লেসবিয়ান।
একদিন তিনি ভয়ংকর রাগে গজগজ করতে করতে কাজে এলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, "ক্রিস্টাল, তোমাকে খুব বিক্ষুদ্ধ মনে হচ্ছে, ঘটনা কী?"
আমি ভেবেছি কাজে কেউ হয়তো ঝামেলা পাকিয়েছে। যা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ক্রিস্টাল আমাকে জানালো সে এই মাত্রই তাঁর আপন ভাইবোন এবং খালার সাথে ঝগড়া করে এসেছে। ওরা চাইছিল তাঁকে তাদের সিক্রেট গ্রূপে যোগ দেয়াতে, যার নাম "We hate muslims."
খুবই ভাল। তা সমস্যা কোথায়?
ক্রিস্টাল জানালো, "আমি ওদের সাফ জানিয়ে দিয়েছি - আমি সারা জীবনে মোট তিনজন মুসলিমকে চিনি, সবাই আমাদের সাথে একই দোকানে কাজ করে। এক তুমি, এক আমাদের ম্যানেজার মিতুল (বাঙালি, আমাদের এডমিন তারেকের মামা শ্বশুর, "মন কি যে চায় বলো" গানের রচয়িতা, সুরকার ও গায়ক), এবং আরেকটা ওয়াসিম (মিডল ইস্টার্ন ছেলে)। তোমাদের তিনজনের মধ্যে আমি এমন একটাও কোয়ালিটি পাইনি যে তোমাদের ঘৃণা করতে হবে। তাই আমি শুধু শুধু ওদের ফালতু (ও "ফ" দিয়ে আরেকটা শব্দ উচ্চারণ করেছিল, বুঝে নিন) গ্রূপে জয়েন করবো কেন?"
এইটাই কথা। আমরা কিছুই এক্সট্রা করিনি। যা আমরা, তাই সে দেখেছে। এতেই সে বুঝেছে চামড়া, খাদ্যাভ্যাস জাতীয় কিছু বেসিক পার্থক্য ছাড়া আমরাও মানুষ, ওদের মতোই আমাদেরও পরিবার আছে, ভালবাসারও মানুষ আছে।

টেলিভিশন নিউজ মিডিয়া এবং প্রেসিডেন্ট সাহেব ওদের সামনে আমাদের যেভাবে উপস্থাপন করছেন, সেটাকে টক্কর দিতে গেলে আমাদের কেবল সামাজিকভাবে একটিভ হলেই চলবে।
নিজেদের মধ্যে দাওয়াত, হাহাহিহি ছাড়াও স্থানীয় সমাজকল্যাণমূলক কাজে অংশ নিন। পারলে ঈদে বা অন্যান্য অকেশনে তাঁদের নিমন্ত্রণ করুন। দেখবেন ধীরে ধীরে এইসব বুদ্ধিহীন বিবেকহীন হেটক্রাইম কমতে শুরু করবে।
ওদের একটি ব্যাপার ভাল। ওরা যদি বুঝে আপনি সঠিক এবং ওরা ভুল, তখন ওরা ভুল শুধরে শুধু আপনার পাশেই দাঁড়াবে না, স্বজাতির ভুলগুলোকেও শুধরাতে উঠেপড়ে লাগবে।
এই যে ঘটনাগুলো আশেপাশে ঘটছে, এইগুলোকে সতর্ক সংকেত হিসেবে নিন। সামনে ঘোর অন্ধকার সময় আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। নিজে না হলেও নিজের বাচ্চাদের ভবিষ্যতের জন্য আমাদের এখন থেকেই অ্যাকশন নিতে হবে। নাহলে, ওদের জেনারেশন পর্যন্ত রোগটিকে বাড়তে দিলে বড্ড দেরি হয়ে যাবে।

*** কিউই প্রধানমন্ত্রীর যে সহমর্মিতা, হিজাব জড়িয়ে মুসলিম পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে দুইচারটা ভাল কথা বলা - এইসবই প্রমান করে তিনি কতটা ভাল মানুষ ও আদর্শ নেত্রী। যে সমস্ত উগ্রবাদী মানসিক ভারসাম্যহীন উন্মাদ "পুরো খ্রিষ্টান" জাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার ধান্ধাবাজি করছে, তারা জেনে রাখুক জেসিন্ডা আরডেনও একজন খ্রিষ্টান মহিলা। তাঁর দেশের সাধারণ জনগণও এখন মুসলিমদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁরাও বেশিরভাগই খ্রিষ্টান। এই মুহূর্তে কোনরকম উজবুকীয় কর্মকান্ড ওদের এই ভালবাসা ও বিশ্বাসেরই অপমান করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:৪২
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×