somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাফন করতে না পাইরা লাশ পুড়ায়া দিল ক্যান?

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বোন অস্ট্রেলিয়া থাকে। সিডনিতে। করোনা নিয়ন্ত্রণে ওদের কী করা হচ্ছে মাঝে মাঝে বলে। আমি শুনি আর আফসোস করি।
সবাইকে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। কোন বাড়ির সামনে যদি অতিরিক্ত গাড়ি দেখে, পুলিশ এসে দরজা ধাক্কা দিয়ে জিজ্ঞেস করে, বাড়িতে পার্টি চলছে কিনা। যদি পার্টি চলে, তাহলে মোটা অংকের জরিমানা। এই মোটা অংক মানে কয়েক হাজার ডলার।
রাস্তায় এক গাড়িতে দুইজন যাত্রী দেখলেই পুলিশ গাড়ি থামিয়ে জেরা করে। উল্টাপাল্টা কিছু শুনলে মোটা অংকের জরিমানা।
আউটডোরে কোথাও কোন গ্যাদারিং করতে দিচ্ছেনা পুলিশ।
আরও অনেক কিছু। যা আমরা আমেরিকানরা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছি। যেকারনে এখন হাত কামড়ে লাশ গুনছি।
আমাদের কালো আমেরিকান সম্প্রদায় বিশ্বাস করতো, করোনা ওদের কিছু করতে পারবে না। কারন, ওদের চামড়া ভারী, ওদের ত্বকে মেলানিন আছে। ওদের মাস্কের প্রয়োজন নেই। উল্টো, কেউ মাস্ক পড়লে হাসি তামাশা করতো। এখন বুঝতে পারছে করোনা কি জিনিস। করোনা আক্রান্ত মৃতের মাঝে সিংহভাগই আফ্রিকান আমেরিকান সম্প্রদায়ের লোকজন। এখন আর ওদের মোটা চামড়া, ত্বকে মেলানিন থিওরি কোন কাজে আসছে না।
ধরা খেয়েছে আমাদের বাঙালিরাও। করোনা সংক্রমণের দিনেও এরা চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়েছে, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক নানান দলের আড্ডাবাজি, মহড়া ইত্যাদি চলেছে। এমনকি করোনা থেকে মুক্তি পেতে বিরাট আয়োজন করে দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করেছে। ইতিমধ্যেই বাঙালি কমিউনিটিতে দাবানল ছড়িয়ে গেছে। এখন শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলা।
সাদা চামড়ার লোকেরাও কম বেয়ারা নন। প্রথমে এরাও মিডিয়া হোক্স বলে উড়িয়ে দিল। যারা সতর্ক হচ্ছিল, তাদের উপর মহাবিরক্ত ছিল। WHO বিশ্ব মহামারী ঘোষণা করাতেও এদের অনেককে বিরক্ত হতে দেখেছি। আমার এলাকাতেই আছে এমন কিছু উজবুক। ইচ্ছা করে এমন সব কাজ করেছে যে এই রোগটি ছড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। এখন কাতারে কাতারে মরছে। লাশের স্তুপ জমা হচ্ছে সর্বত্র। গোটা দেশে ছড়াচ্ছে।
আর বাংলাদেশের কথা কি আর বলবো। আমাদের সরকার "ছুটি" ঘোষণা করেছেন, তাই সবাই ছুটি পালনে ব্যস্ত। আড্ডাবাজি, সোশ্যাল গ্যাদারিং ঠিকই চালু আছে। বাড়িতে বোরিং লাগছে, তাই তিন বন্ধু মিলে মোটরসাইকেল চড়ে এলাকায় লীলা করতে বেরিয়ে পড়েছেন। চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে আড্ডা দিতে বেড়িয়েছেন। ত্রাণের নাম করে লোকজন ছবির ফ্রেমবন্দি হবার ধান্দায় জড়োসড়ো হয়ে ছবি তুলছে। সাংবাদিকরাও গাদাগাদি হয়ে ক্যামেরা ক্লিক করছেন। কারোর মাথাতেই নেই করোনা ক্যামেরায় পোজ দিতে দাঁত ক্যালাবে না। সে ঠিকই তার কাজ চালিয়ে যাবে। হ্যা, গরিবদের সোশ্যাল ডিস্টেনসিং ঠিকই শেখানো হচ্ছে। ওরা সুশৃঙ্খলভাবে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিচ্ছেন।
মসজিদ বন্ধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে বাড়িতে নামাজ পড়তে। আমাদের ঈমানে লেগে গেল। আমরা শবে বরাতের রাতে বাড়ির ছাদে নামাজের আয়োজন করলাম। আহারে ঈমান! ধর্ষণের সময়ে, দুর্নীতির সময়ে, চিটারি বাটপারির সময়ে, ত্রাণ চুরি, নকল হ্যান্ডওয়াশ তৈরী, মিথ্যা বলার সময়ে যদি এই ঈমানটা দেখাতো - তাহলে আজকে আমাদের দেশ কোথায় চলে যেত! চোখে পানি চলে আসে!
যাই হোক, চিল্লায়ে লাভ নাই। ঈমান দেখতে থাকেন, আর লাশ গুনার প্রস্তুতি নেন। ভ্যান্টিলেটর কই? ডাক্তার কই? চিকিৎসা করলো না ক্যান? কবরে জানাজা হইলো না ক্যান? গণ কবর দিল ক্যান? দাফন করতে না পাইরা লাশ পুড়ায়া দিল ক্যান? এইসব প্রশ্ন যেই হারামজাদা করবে, তার মুখ বরাবর জুতা মেরে বলবেন, "হারামি কোথাকার। তুই সোশ্যাল ডিস্টেন্স মেইনটেইন করিস নাই ক্যান?"
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:০৫
৯টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×