কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা কর্মকর্তা পদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া একজনের এমবিবিএস ডিগ্রি ও চিকিৎসাবিষয়ক সনদ ভুয়া বলে অভিযোগ উঠেছে। মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি চৌদ্দগ্রামের হিছাচর গ্রামে। সম্প্রতি অ্যাডহকভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের একজন তিনি।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন মো. আবদুল মতিন পাটোয়ারী গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আজই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানিয়েছি। তদন্ত করে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সফিকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ৩ জুলাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন। পরদিন ফেনী থেকে আসা একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে তাঁর চিকিৎসা সনদ নিয়ে সন্দেহ হয়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, এর আগে ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালে তিনি চাকরি করতেন।’
এ ব্যাপারে ফেনীর সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ফরিদ উদ্দিন ২০০৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। আবেদনপত্রে তিনি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২০০৫ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন বলে উল্লেখ করেন। তাঁর চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তিনি গা ঢাকা দেন। পরে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমঅ্যান্ডডিসি) থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়, এই নামে কোনো চিকিৎসক নেই।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. হামিদুল হক খন্দকার বলেন, ‘এই নামে কোনো ব্যক্তি এ কলেজে অধ্যয়ন করেননি এবং ২০০৫ সালের মে মাসের এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশও নেননি।’
বিএমঅ্যান্ডডিসি সূত্রে জানা গেছে, ফরিদ উদ্দিনের দাখিল করা নিবন্ধন নম্বরের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর দেওয়া নিবন্ধন নম্বরের (৪৬১৯৫) বিপরীতে যে চিকিৎসকের নাম রয়েছে, তিনি সোনিয়া আক্তার। তিনি ২০০৭ সালের ২ অক্টোবর ওই সনদ নেন। তদন্তের পর গত ২৮ এপ্রিল বিএমঅ্যান্ডডিসির রেজিস্ট্রার ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ফেনীর সিভিল সার্জনকে চিঠি দেন।
অভিযোগের ব্যাপারে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে সরাসরি দেখা করব। এখন লিখবেন না।’ তাঁর সনদ ও এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জানালে ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘দয়া করে কিছু লিখবেন না।’ এরপর তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
কুমিল্লা জেলা বিএমএর সভাপতি শহীদুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তাঁরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান।
http://www.prothom-alo.com

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




