খন্দকার আলী আব্বাস ও সাইফুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন সৈয়দ আমিরুজ্জামান।
সদ্য পদত্যাগকারী বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আমিরুজ্জামান ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জাতীয় দৈনিকসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, খন্দকার আলী আব্বাস ও সাইফুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে দলত্যাগী কতিপয় ব্যক্তি উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে বিপ্লবী মতাদর্শ ও শৃঙ্খলাকে ভুলুণ্ঠিত করে শ্রমিক শ্রেণীর রাজনীতিকে বিপথে পরিচালনা করে আসছেন। তাদের এই অপতৎপরতায় শ্রমিক শ্রেণীর রাজনীতি নিদারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়েছে বামপন্থীদের নেতৃত্বে গণআন্দোলন-গণসংগ্রাম জোরদার করার কাজ।
অসংখ্য নেতা-কর্মীর সংগ্রামী আত্মত্যাগ আর শ্রমে-ঘামে মেধার-মননে গড়ে ওঠা শ্রমিক শ্রেণী রাজনীতি ও মতাদর্শিক মূল ধারার পার্টি ত্যাগ করে পার্টি বিভক্ত করে বিপ্লবী সত্ত্বা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সুবিধাবাদী নেতৃত্বের শ্রমিকশ্রেণীর রাজনীতিবিরোধী আত্মঘাতি নানা অপতৎপরতায় বিপ্লবী সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। জীবনবাজি রাখা লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত ওয়ার্কার্স পার্টির সুনাম ও ভাবমূর্তিকে বিদেশী এনজিও নির্ভর গবেষণার নামে বিকিয়ে দিয়ে পার্টির গুটি কয়েক নেতা নিজেদের ভাগ্য গড়ার কাছে লিপ্ত রয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিপদগামী সাইফুল হক তার নিজের পারিবারিক সুযোগ-সুবিধা আদায় ও ভাগ্য গড়ার কাজে জড়িত রয়েছেন। মূল ধারার পার্টি থেকে দল ত্যাগের পর বিদেশী উৎস হতে প্রাপ্ত অনুদান নিজের পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের প্রয়োজনে কিছু রুটিন ওয়ার্ক চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অর্থের উৎস সম্পর্কে কখনই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বালাই নাই। পার্টির পদ-পদবীকে ব্যবহার করে এই সব নেতা ব্যক্তিস্বার্থ নির্ভর চরম সুবিধাবাদী রাজনৈতিক লাইন গ্রহণ করেছেন। এটা তাদের চরম এক অধঃপতনের চূড়ান্ত বহির্প্রকাশ। এসব নেতার তৎপরতা কমিউনিস্ট ও বাম রাজনীতিকে সামনে থেকে ছুরি মারার সামিল। স্রেফ সুবিধাবাদ ও মতলবতাড়িত এই সব ব্যক্তি দেশের কমিউনিস্ট ও বাম আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে চলেছে। তাই এসবের বিরুদ্ধে পার্টির আদর্শপ্রাণ, ত্যাগী, নির্লোভ, সংগ্রামে পোড়খাওয়া দৃঢ়চিত্ত নেতা, কর্মী ও সদস্যদেরকে বলিষ্ঠ অবস্থান গ্রহণের নিমিত্ত মূল ধারায় ফিরে আসার মধ্য দিয়ে বিপ্লবী দায়িত্ব পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিপ্লবী রাজনীতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে এসে মূল ধারার রাজনীতিতে সামিল হওয়ার মাধ্যমে বিপ্লবী জীবন রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। নানামূখী অপতৎপরতা, মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে পার্টির কিছু নেতা-কর্মীকে বিভ্রান্ত করে যারা পার্টির আদর্শ, রাজনীতি ও গঠনতন্ত্রকে নাকচ করে চলেছেন তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিপ্লবী সত্ত্বা রক্ষায় অর্থাৎ মূল ধারার ওয়ার্কার্স পার্টিতে ফিরে আসা বৃহত্তর শ্রমিকশ্রেণীর রাজনীতির ও মতাদর্শের বিপ্লবী বিকাশের প্রয়োজনে সকল স্তরের কর্মী সংগঠকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যাভিমুখী জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইকে এগিয়ে নেয়ার তাগিদে খন্দকার আলী আব্বাস ও সাইফুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে তিনি স্বেচ্ছায় ও সচেতন বিপ্লবী দায়িত্বের অংশ হিসেবে পদত্যাগ করেছেন। তিনি দলত্যাগী আব্বাস-সাইফুল হক চক্রের দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়ার জন্য আত্ম-সমালোচনা করেছেন এবং আব্বাস-সাইফুল হক চক্রের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। এবং তাঁর মতো বিপ্লবের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ সকল বিপ্লবী ব্যক্তিত্বকে বাংলাদেশের মেহনতী জনতার আকাংখাকে বুকে ধারণ করে সমাজ পরিবর্তনের বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বেগবান করার বিপ্লবী জীবন ও সত্ত্বা রক্ষায় ঐসব কু-চক্রীদের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে মূলধারার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিতে ফিরে আসার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
তথ্যসূত্র: প্রেসবিজ্ঞপ্তি, ৩০ জুলাই ২০০৮
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




