দেখ আপু, এমনিতেই মেজাজ গরম ।বকবক করে মেজাজ আরো গরম করিস না।
-সন্ধ্যা হওয়ার আগেই ভালই ভালই মোমবাতি নিয়ে আস।না হয় তোর গরম মেজাজের ১৪গুষ্টি কিলিয়ে ঠান্ডা করে যদি না দিয়েছি তাহলে আমার নাম..
আমার ঝগড়াটনী দ্যা গ্রেট প্রিয় বোনটির কথা শেষ হওয়ার আগেই কারেন্ট চলে গেল মোমবাতির কথা ভুলে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ১৪গুষ্টি উদ্ধারে মেতে উঠল আপু।মোমবাতির জন্য আপুর মেজাজ চরমে উঠার আগেই পাড়ার মোড়ের দোকানের উদ্দ্যেশে বাসা থেকে বের হলাম।রাস্তায় পা রাখতেই সিএনজি চালক আর পাশের বাসার রহিম চাচার মধ্যে ভাড়া নিয়ে গরম গরম সংলাপ কানে এল।সিএনজি চালক আর রহিম চাচার ভাড়া নিয়ে গরম সংলাপের শেষ হল সিএনজি চালকের চড় খাওয়ার মধ্য দিয়ে।বেচারা সিএনজি চালক ভাড়া না নিয়েই চোখ মুছতে মুছতে চলে গেল।ইচ্ছা হল রহিম চাচার কলার ধরে ঠাস ঠাস কয়েকটা দিয়ে বলি,'যখন ঘরে থাকেন তখনতো দজ্জাল চাচীর ভয়ে ইঁদুর-বেড়াল খেলেন।আর রাস্তায় আসলেই রিক্সাওয়ালা, সিএনজিওয়ালাদের সাথে মরদগিরি দেখান;টেন্ডার নিয়ে মারামারি করেন ।'কিন্তু বলা হলনা।মনের কথা মনেই রয়ে গেল।কারণ একটি ডিজিটাল শ্রমিক সংগঠনের নেতা রহিম চাচাকে চড় দেওয়া তো দুরে থাক সালাম না দিলেই কাল বাসায় পুলিশ হাজির হবে।বউহীন শ্বশুর বাড়ির ভয়ে চাচাকে সালাম দিয়ে বললাম,'চাচা,আপনার মত সম্মানিত মানুষদের কদর সিএনজি চালকের মত বাটপারেরা কি বুঝবে?আমি আর একটু আগে এলেই দেখতেন কি করতাম।'
চাচাকে খুশি করে 'ভাল ছেলে'র উপাধী পেয়ে মোড়ের দোকানে গেলাম।৪টা মোমবাতি নিয়ে দোকানী চাচাকে ২০টাকা দিতেই চাচা চোখ লাল করে বলল,'সরকারী মাল না যে ২০টাকা দিয়া লইয়্যা যাইবা।আরো ১০ টাকা দিয়া যাও।'
অবাক হয়ে বললাম,গতকাল ৪টা নিয়ে গেলাম ২০টাকা দিয়ে আর আজকে বলছেন ৪টা ৩০টাকা।দোকানী চাচা একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা দেখিয়ে দিয়ে বলল,'ভাল করে পড়ে দেখ।যে দেশের দেশ মাতার জন মানবহীন 'সুদাসদনে' প্রতি রাতে হাজার হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ অপচয় হয় সে দেশে ১দিনের ব্যবধানে যে ৪টি মোমবাতির দাম ১০টাকা বেড়েছে তাতে আল্লাহর কাছে শোকর কর।'ডিজিটাল শোকর বলে আরো ১০টাকা দিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে আসতেই মোবাইল বেজে উঠল।স্ক্রীনে বান্দরনী দ্যা গ্রেট খালাত বোনটির নাম্বার দেখে রিসিভ করে বললাম,কিরে বান্দরনী আজ এতক্ষনে মনে পড়ল আমাকে?
-এখন থেকেই মোবাইলে ফুতুর ফুতুর কম করতে হবে।বুঝেছিস?
-ঘটনা কি?
-ঘটনা হচ্ছে গ্রীস্মের গরম,নেতা নেত্রীদের কথার গরম,বাজারের গরম আর মশার চরম কামড়ের আচর মোবাইল ফোন কোম্পানীতেও লেগেছে।
-ঠিকই হয়েছে ।বিকেল ৪টার পর থেকে পরেরদিন সকাল সকাল পর্যন্ত প্রতি মিনিট কলচার্জ ১০টাকা হওয়া উচিত ।পাবলিকের অনেক টাকা তো বাচঁবেই সাথে তোর মত বান্দরনীদের বকবক ঘন্টার পর ঘন্টা শোনার হাত থেকে আমার মত অনেকে রক্ষা পাবে।
-কি বললি আমি বকবক করি?আজকে আর ফোনে না আমি আসছি ।আজ সারারাত মশার কামড় খেয়েই আমার বকবকানি শুনতে হবে ।বুঝেছিস আমার প্রিয় বান্দর?
-জ্বী বুঝেছি... . . . .
আমার দেশের ভিমরুলে প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১০