বিশাল অঙ্কে ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের অনুমোদন, যা দিয়ে আরেকটি শহর নির্মাণ সম্ভব
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
এয়ারপোর্ট থেকে সাতরাস্তা মোড়, মগবাজার হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড (কুতুবদিয়া) পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করা হবে বলা হয়েছে। অথচ যতদূর জানি এয়ারপোর্ট থেকে সাতরাস্তা হয়ে মগবাজার দিয়ে পুরান ঢাকা পর্যন্ত বাস রাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) হওয়ার কথা। একি এলায়েনমেন্ট দিয়ে কিভাবে দুই ধরনের অবকাঠামো বানাবে বুঝি না। এমনিতেই মহাখালি ফ্লাইওভার থাকাতেই এটি নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা চলছে।
আরেকটি বিষয় কোনটি জরুরী? পাবলিক পরিবহন না প্রাইভেট পরিবহন? এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রাইভেট গাড়ি নির্ভর অবকাঠামো, অথচ বিআরটি (পাবলিক পরিবহন) বাদ দিয়ে মোটা অঙ্কের (আঠারো হাজার কোটি টাকা) টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণের জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে।
আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামতে হবে না নাকি বুঝি না। ওঠা-নামার জন্য রাম্পগুলিতে যে জটলা তৈরি হবে তার প্রভাব পড়বে সারা শহরে।
যাই হোক, আবারও বলি দুই শতাংশ মানুষের প্রাইভেট গাড়িওয়ালার জন্য যে যানজট তা দূর করার জন্য এত টাকা ব্যয় করা কি যুক্তিসঙ্গত। এত টাকা দিয়ে আরেকটি শহর তৈরি করা যায়।
আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকালীন মানুষের যে ভোগান্তি হবে, যে আর্থিক ক্ষতি হবে তা কে দেবে? ঢাকায় এর আগে ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় মানুষের দূর্ভোগ দেখেছি।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নীচে কমপক্ষে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ জায়গা নষ্ট হয়। আর এ ধরনের অবকাঠামো প্রাইভেট গাড়ি বাড়াবে যা শহরে দূষণ, দূর্ঘটনা, তাপমাত্রা, জ্বালানী নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি করবে। শহরে পথচারীদের প্রতিবন্ধকতা বৃদ্ধি করবে।
বিশ্বের বিভ্ন্নি শহরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙ্গা হচেছ। আর আমাদের এখানে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও গাড়ি কোম্পানির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ঋণ ব্যবসায়ীদের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙ্গার উদাহরণ দেওয়া হলো-
বর্তমান
পূর্বে
২১ শতকে নগর ব্যবস্থাপনায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। সিউলে CheongGyeChon Restoration প্রকল্পের অধীনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (দোতলা সড়ক) ভেঙ্গে লেক তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্প শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর ২০০৫ পর্যন্ত উৎসব উদযাপনের মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিক পানিপ্রবাহ পুনরায় চালু হওয়ায় পরিবেশ ও সংস্কৃতিগত দিক থেকে শহরটির পুনর্জন্ম হয়েছে। এর লেকটির উপর দিয়ে পথচারী ও সাইক্লিস্টদের পারাপারের জন্য ২২টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মূল লক্ষ্য ছিল উপরিভাগের পানির ব্যবহার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ করা। এছাড়া দূর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙ্গার অন্যতম কারণ। উল্লেখ্য ১৯৬০ এর দশকে জলাধারের উপর কংক্রীটের আচ্ছাদন দেয়া হয়। কিন্তু এর উপর নির্মিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে ১৯৮০ এর দশকে দূষণ এবং দূর্ঘটনা ভীষণভাবে বেড়ে যায়।
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(
আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।
ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন
কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন