somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘ওয়াটার বাস' সচল থাকা অনিশ্চিত

২৮ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকার যানজট নিরসনে বহুমাত্রিক যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে কাজে লাগিয়ে বৃত্তাকার নৌপথ চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা ও কিছু কিছু পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিন্ত তার অগ্রগতি খুব সামান্যই হয়েছে। ইতিপূর্বে বৃত্তাকার নৌপথ প্রকল্পে শুরুতে ৩৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। কিন্তু নিয়মিত খননের অভাবে নদীতে নাব্যতা না থাকাসহ সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাবে পৌনে দুই মাসের মধ্যে প্রথম দফায় ওই পথে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিআইডব্লিউটিএর হিসাব থেকে জানা যায়, এর মধ্যে নদীখননে ব্যয় হয়েছিল আড়াই কোটি টাকা। কিন্তু নিয়মিত খনন না করায় লঞ্চ চলাচল ব্যাহত হয়। এ কারণে দু-একজন বেসরকারি উদ্যেক্তা এগিয়ে এসেও পরে তাঁদের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

আজ থেকে সদরঘাট-গাবতলী নৌপথে নিয়মিতভাবে ‘ওয়াটার বাস’ চালু করা হচ্ছে। কিন্তু নাব্যতা ঠিক না থাকলে এই সার্ভিস সচল রাখা সম্ভব হবে না। তাছাড়া মাত্র দুইটি ওয়াটার বাস দিয়েও এই সার্ভিসকে চালু সম্ভব নয়। এছাড়া যাত্রী যেখান থেকে ওঠা-নামা করবে সেখানকার সঙ্গে অন্যান্য বাহন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আমিন বাজার-এ অবস্থিত ল্যান্ডিং স্টেশনে যাওয়ার জন্য ভালো ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই যেতে চায় না। এছাড়া এই রুটে মানুষকে চলাচলে উতসাহী করতে ভাড়াও কমাতে হবে, প্রয়োজনে সরকারের নিকট থেকে ভর্তূকি দিতে হবে। এর জন্য নদী থেকে যত আয় সেখান থেকে কিছু অংশ এই সার্ভিস পরিচালনার জন্য ব্যয় করা যেতে পারে। প্রয়োজনে নদীর পারে বিনোদনের জায়গা তৈরি করে দোকান-পাট বরাদ্দ দেওয়ার মাধ্যমে আয়ের উতস সৃষ্টি করা যেতে পারে। উল্লেখ্য বর্তমানে ওয়াটারের বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ত্রিশ টাকা, আর সময় লাগবে ত্রিশ মিনিট।

আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, শুধুমাত্র নদীগুলো দিয়ে ওয়াটার বাস চালু করলে শহরের যানজট কমাতে অন্য বাহনের উপর নির্ভরশীলতা কমানো যাবে, যদি না শহরের অভ্যন্তরীন খালগুলিকে চারপাশের নদীগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে সমন্বিত নৌ-নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়। কেননা মানুষতো ঢাকার চারপাশ দিয়ে ঘুরবে না। তাদের প্রয়োজন পড়বে শহরের ভেতরে একস্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়ার। তাই শহরের ভেতরের খালগুলিকে কাজে লাগিয়ে উপযোগী নৌ-পরিবহনের মাধ্যমে নৌ-যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরুপ বলা যায় হাতিরঝিল প্রকল্পের অধীনে বেগুনবাড়ী খালের সংস্কার চলছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে টঙ্গী পর্যন্ত নৌপরিবহনে যাতায়াত করা সম্ভব। কিন্তু এজন্য আরো একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে। নৌ-পরিবহন চলাচলের সুবিধার্থে সেতু নির্মাণের সময় প্রয়োজনানুসারে উচু করতে হবে। যাতে বর্ষাকালেও যাতায়াতে কোন সমস্যা না হয়। ইতিপূর্বে নদী এবং খালের উপর নির্মিত অনেক সেতুই উচু করার প্রয়োজন পড়বে।

আশা করি, সরকার ঢাকার চারপাশের নদীর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ খালগুলিকে কাজে লাগিয়ে কার্যকর নৌ-যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যা শুধুমাত্র আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থাকে কার্যকর করবে না, পানির উতস সংরক্ষণ, মতস সম্পদের বৃদ্ধি, জলাবদ্ধতা হ্রাস, নদী ও খালের ধারে বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি, শহরের তাপমাত্রা কমানো ও জীববৈচিত্র রক্ষাসহ আমাদেরকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করবে।

ছবি: মনিরুল আলম, প্রথম আলো
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×