যেদিন
হায়েনারা নেমেছিলো দুর্বৃত্তের ত্রাসে
কী ভয়াল আর কালো-ই না ছিলো সেই রাত।
চকচকে ধারালো বেয়োনেট উঁচিয়ে
কালো বুটে বাংলার বুকে নেমেছিলো
বর্বর পশুর দল অসুর-এর মতো।
দুই কানে হাত চেপেও শুনতে পাচ্ছিলাম-
আতঙ্কিত মানুষের ভীত আর্তনাদ;
অতর্কিতে ঝরেছিলো হাজারো পাখির পালক।
তোমার কিশোরী কন্যা-কে ও’রা যখন-
জলপাই রঙা জীপে তুলে নিলো বুভুক্ষু হুল্লোড়ে
নিষ্পাপ সাদা রাজহংসী-র কী সকরুণ ছটফটানি আর-
বাঁচার সে কী দারুণ আকুতি - তোমারই সামনে, মাগো!
তুমি নিষ্প্রাণ পড়ে রইলে উঠোনে
তোমার গাঢ় সবুজ আঁচলে টকটকে রক্তিম সূর্য;
আমি তখন কান্নাচাপা বোবা-র মতো-
চোখের জল মুছতে মুছতে দৌড়াচ্ছি শুধু।
অস্ত্রহাতে দৌড়িয়েছি দিগ্বিদিক নয়টি মাস
ভাগাড়ের গলিত মানুষের মিছিলে-
বাবার মুখ আর বোনের দেহ আমি সনাক্ত করতে পারিনি, মাগো!
লাখো প্রাণ আর সম্ভ্রমের বিনিময়ে-
স্বাধীন একটি পতাকা আমরা ছিনিয়ে এনেছিলাম ঠিকই; কিন্তু-
সেই পবিত্র পতাকাও কলঙ্কিত হয়েছে কালের আবর্তে।
আজ এতোগুলো বছর পেরিয়ে এসেও
হিসেবের খাতাটা শুধুই ভুলে ভরা বলে মনে হয়;
সেদিনের স্বপ্ন আর আজকের বাস্তবতা-
মেলাতে পারিনা কিছুতেই ...
[কাব্যগ্রন্থঃ মানুষ-মন্ত্র]