আজ প্রথম আলো প্রত্রিকার প্রথম পাতায় হেডিং এর অর্ধেক পাতা জুড়ে এক কিশোরীকে ধর্ষন করা নিয়ে মর্মান্তিক একটি খবর পড়লাম। খবরে প্রকাশ, বিচারের নামে উল্টা তাকেই বেত্রাঘাত করে হতা করা হয়েছে।
ছবির নিচে আবেগী ক্যাপশন:
এত্তটুকুন একটি মেয়ে। তাকেই সইতে হযেছে আদিম বর্বরতা। তারপর সমাজপতিদের 'বিচারের দোররা' পড়েছে ধর্ষকের সঙ্গে তার শরীরেও। মায়াবি মুখটির দিকে তাকিয়ে এতটুকু দয়া হয়নি কারোরই?
বিস্তারিত পত্রিকার বর্ণনা শুনুন:
হেনার ফুফাতো বোনসহ আত্মীয়রা জানান, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা গ্রামের দরিদ্র কৃষক দরবেশ খাঁর মেয়ে হেনা। গত রোববার দিবাগত রাতে মেয়েটি প্রাকৃতিক কাজে ঘরের বাইরে যায়। এ সময় তার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই মাহাবুব (৪০) তার মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে পাশে তার পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
==> এই ভাবে কদর্য বর্ণনার কোন প্রযোজন আছে কি? নাকি বিকৃত মনস্ক পাঠকদের ধরে রেখে মনরঞ্জন করার অপ চেষ্টা? মতির মতিভ্রম এতটা হয়েছে তা আশা করিনি।
নড়িয়া থানা ও এলাকার সূত্র জানায়, ঘটনা জানাজানি হলে পরের দিন সোমবার চামটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইদ্রিস ফকিরের নেতৃত্বে সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিসে উপস্থিত হন চামটা আবুল বাশার মাদ্রাসার শিক্ষক সাইফুল ও গ্রামের মসজিদের ইমাম মফিজ উদ্দিন। ইদ্রিস ফকির, লতিফ মীরমালত, আক্কাস, ইয়াসিন ও জয়নাল মীরমালতের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের বিচারক বোর্ড গঠন করা হয়। তাঁরা ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে ধর্ষণকারী ও ধর্ষণের শিকার কিশোরী উভয়কেই দোররা মারার রায় দেন।
==> খেয়াল করে দেখুন ঘটনার মূল হোতার সাহায্যকারী একজন ওয়ার্ডের সদস্য। অবশ্যই আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা জামাতের সমর্থনপুষ্ট কেও হবে। অর্থাত এখানে ধর্মীয় সংশ্লিষ্টতা দেয়াটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর ভাবে মনে হচ্ছে দেশের সব রাজনীতিবিদ ধর্মীয় গুরুদের কথা খুব মান্য করে চলে!
'দোররা' (দেশি শব্দ বেত্রাঘাত) শব্দটা ইসলাম ধর্মকে হেয় করার জন্য নিয়মিত ব্যবহার হয়। মোবাইল বদলে হয়ে যায় 'মুঠোফোন'! তবু দোররা বদলায় না!
অপর দিকে সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে নিহত "ফেলানী হত্যাকান্ড" নিয়ে প্রথম আলো ছিল ভয়ংকর সন্দেহজনকভাবে নিরব! জাতীয় ভাবে গুরুত্ব পাবার মত ইস্যুতে প্রথম আলোর প্রথম পাতার অর্ধেকটা জুড়ে না হোক, ভিতরের পাতায় ছবিটা একটুও স্থান পেল না?
ওদের মতই বলি,
ফালানী একটি মেয়ে। তাকেই সইতে হলো আধুনিক বর্বরতা (গুলি দিয়ে ঝাঝরা!)! তারপর সুশীল ভেকধারী দালালদের 'নিরবতার দোররা' পড়েছে নিহতের সঙ্গে আমাদের দেশের শরীরেও। মায়াবি মুখটির দিকে তাকিয়ে এতটুকু দয়া হয়নি কারোরই?
ধিক! প্রথম আলো। ধিক! তাদের অনুসারী সকল পক্ষকে ধিক!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




