somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাখি পর্যবেক্ষণ (পর্ব-১): উপকরণ, কলাকৌশল ও নীতিমালা

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাখি পর্যবেক্ষণ খুব উপভোগ্য ও মজাদার শখ হিসাবে সারা পৃথিবীতেই অনেক জনপ্রিয় একটি বিষয়। প্রকৃতিবিদ ও পাখি প্রেমিকদের কাছে এই পাখি পর্যবেক্ষণ একটি অতি পরিচিত শব্দ। পক্ষী বিশারদ সালীম আলী যাকে ভারত সরকার পদ্মভূষণে ভূষিত করা হয়েছিল তার নাম শোনেন নাই এই রকম মানুষ খুব কমই আছেন। সালীম আলী পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য চষে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশ সহ সমগ্র ভারতবর্ষ এবং পাখি বিষয়ে রচনা করেছেন অনেক বই। তিনি পাখিকে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় করতে আমৃত্যু কাজ করেছেন। বাংলাদেশের পাখি পর্যবেক্ষকদের কথা বললে সর্বপ্রথম আসে ইনাম আল হকের নাম। তিনি বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে পাখি পর্যবেক্ষণকে বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় করে তৈরি করেছেন অনেক পাখি পর্যবেক্ষক।



উপকরনঃ
পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন হল বাইনোকুলার, ফিল্ড-গাইড, নোটবুক ও পেন্সিল। বাংলাদেশের বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের নিচতলায় ভাল মানের কিছু বাইনোকুলার পাওয়া যায় বলে শুনেছি। অধিকাংশের মতে পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য এই দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ভাল ফিল্ড-গাইড হল রিচার্ড গ্রিমেট, ক্যারল ইন্সকিপ ও টিম ইন্সকিপ এর ‘পকেট গাইড টু দা বার্ডস অব ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ বইটা। গতবছর বাংলাদেশের পাখি পর্যবেক্ষকদের জন্য বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য রোনাল্ড আর হালদার ‘এ ফটোগ্রাফিক গাইড টু বার্ডস অব বাংলাদেশ’ নামে একটি বই বের করেন। ৭৩৫টি ফটোগ্রাফসহ মোট ৪৭২টি পাখির বাংলা, ইংরেজি, বৈজ্ঞানিক নামসহ এই বইটি ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। এই সকল উপকরণ ছাড়াও পাখি পর্যবেক্ষণ করতে যাওয়ার সময় পকেটযুক্ত হালকা ওজনের গাঢ় রঙের জামা, টাউজার ও ক্যাপ পরতে হবে। জঙ্গলের ক্ষতিকর পোকামাকড় জোঁক, সাপ থেকে প্রতিরক্ষার জন্য জঙ্গল বুট আদর্শ হতে পারে। সঙ্গে শুকনা খাবার পানির বোতল রাখা আবশ্যক।


কলাকৌশলঃ
পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য অবশ্যই সেই প্রাকৃতিক পরিবেশে যেতে হবে যেখানে পাখিরা থাকে। যেই এলাকাতে পাখি পর্যবেক্ষণে যাওয়া হবে সেখানকার বাস্তুসংস্থান এবং সেই অঞ্চলের পাখিদের চেকলিস্ট সংগ্রহ করে সেই পাখি সম্পর্কে যেমন সেখানে কি কি পাখি পাওয়া যায়, পাখিদের আচরণ, বাসস্থান ও স্বভাব সম্পর্কে ভাল ধারনা নিয়ে যাওয়া উচিত। সূর্যকে পাখির বিপরীত দিকে রেখে পাখি দেখতে হবে যাতে সূর্য আপনার পিছনে এবং আপনার ছায়া পাখি ও আপনার মাঝখানে থাকে এতে পাখির রঙ ও পাখির সবকিছু বিস্তারিতভাবে দেখা যাবে। আর পাখি পর্যবেক্ষণ করার সময় অবশ্যই নিশ্চুপ ও যতটুকু সম্ভব নিঃশব্দে চলাফেরা করতে হবে এতে পাখি চমকে উড়ে যাওয়ার আগেই পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। প্রথমেই বাইনোকুলার ব্যাবহার করা যাবে না, খালি চোখে পাখির অবস্থানকে নিশ্চিত করে তারপর বাইনোকুলার ব্যাবহার করতে হবে পাখিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে দেখার জন্য এবং কোন প্রজাতির পাখি তা শনাক্ত করার জন্য।

নীলকন্ঠী (Indian Roller)

নীতিমালা:
১) পাখি পর্যবেক্ষণের সময়টুকু একদম নিশ্চুপ থাকতে হবে। যে কোন প্রকার কোলাহল সৃষ্টিকরা ও পাখিকে বিরক্ত করা যাবে না।
২) পাখির প্রজনন ঋতুতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এই সময় একটু বিরক্তি তাদের প্রজননকে ব্যাহত করতে পারে।
৩) পাখির নীড় দেখতে পেলে ভিতরে বাচ্চা বা ডিম আছে কিনা তা দেখার জন্য কাছে যাওয়া, পাখির ডিম বা বাচ্চা হাত দিয়ে ধরা একেবারেই নিষিদ্ধ।
৪) জাতীয় উদ্যান বা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের সকল নিয়মকানুন জানা ও মানার চেষ্টা করতে হবে।
৫) অধিক মানুষ একসাথে বড় দলে পাখি পর্যবেক্ষণে যাওয়া যাবে না। দল বড় হলে ছোট ছোট অনেকগুলি দল গঠন করে বনে বা জঙ্গলে ঢুকতে হবে।
৬) বনে কোন ময়লা, আবর্জনা বা খাবার ফেলা যাবে না কারণ পাখি এই ফেলে দেওয়া ময়লা বা খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারে।


আজ এই পর্যন্তই আগামী পর্বে থাকবে “পাখি চিনার সহজ উপায়”

তথ্যসূত্র ও ছবিঃ ইন্টারনেট
****** মাইন রানা
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×