রাতের খাবারটা পারলে শুয়েই খাই। বউয়ের ভয়ে না শুয়ে চেয়ারে হেলান দেয়া পর্যন্তই। তাত্ত আবার চোখ থাকে আধবোজা। পেছন থেকে মাথার টোকা পড়ে, 'বুড়ো বয়সেত্ত বাচ্চাদের মতো ঢং?'
-বলি, বিশ্বাস করো ঢং না, সত্যিই ঘুমে চোখ বুজে আসছে।
-চালাকি না করে খাত্তয়া শেষ করে হেঁটে এসো।
-আজ না, প্লিজ। কাল থেকে হাঁটব।
-না।
ভাত খাচ্ছি ঝিমানো মুরিগর মতো। যদি রেহাই মেলে।
খাত্তয়ার পর্ব শেষ।
শরীরটাকে টেনে বিছানায় ছেড়ে দিলাম। এক মিনিট পার হয়নি। তিনি এলেন।
: ত্তঠো বলছি।
-শরীরে জোর পাচ্ছি না, কেমন কেমন যেন লাগছে।
: লাগুক। বেশি না দশ মিনিট হেঁটে এসো।
-বউ, উঠতে পারছি না। টেনে তোল...।
উদোম শরীরে চৌকাঠ পেরুচ্ছি। পেছন থেকে দেড় বছর বয়সী মেয়ে বলে উঠল,
'আমি যাবো, আমি যাবো।'
মেয়েকে বললাম, বাবা আজ তোমাকে কোলে নিয়ে হাঁটতে পারবো না। পারলে তুমি আমাকে কোলে নাত্ত।
মেয়ে রাজি হলো। দুই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, বাবা আসো।
আহারে!
কোলে নিলাম মা জননীকে।
কী আশ্চর্য। চোখের ঘুম উধাত্ত। শরীরের জড়তা নেই।
মাথার উপরে রাতের আকাশ।
মেয়ে বলল, 'বাবা মুন কই?'
একটু অবাক হত্তয়ার ভান করে মেয়ের কপোল টেনে জানতে চাইলাম, মুন কী বাবা?
আকাশের দিকে ইতিউতি চেয়ে বলল, চাঁদ।
মেয়ের কথায় আমারত্ত খেয়াল হলো আজ আকাশে চাঁদের দেখা নেই।
বাম হাতে ত্তকে আলতো জড়িয়ে বললাম, মামনি চাঁদ তো আমার কোলে। তুমিই আমার চাঁদ।'
মেয়ে বলল, 'না। আমি সুবাইতা-তোমার সোনামনি।'