somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বউ এবং শাশুড়ি নারী চরিত্র দুটির ভেতর কেন চিরায়ত দন্দ? আসুন মানসিক বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করি!!

১২ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বউ এবং শাশুড়ি নারী চরিত্র দুটির ভেতর কেন চিরায়ত দন্দ? কেন নিজেরাই মেকি প্রশংসায় ডুবে থাকে এবং স্বকামী হয়ে ওঠে?

এর উত্তর নিহিত একজন মেয়ে বাচ্চার প্যারেন্টিং এর ধরনে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি ছেলে বাচ্চাকে মূল্যবান, সাবলম্বি, সাহসী, নিরাপত্তা প্রদানকারী হিসেবে বড় করা হচ্ছে, সেখানে একটি মেয়ে বড় হতে থাকে মূল্যহীন, পরনির্ভরশীল, অবলা, অনিরাপদ এই শব্দগুলির বোঝা নিয়ে অনিশ্চিত ভাবে। একটি ছেলে শিশুর চেয়ে মেয়ে শিশুটিকে আদরে, খাবারে, পড়ালেখায়, খেলাধুলায় আপনি বৈশম্য করলেন, আর আশা করবেন এই বাচ্চটির স্বাভাবিক মানসিক বিকাশ হবে, অসম্ভব। যাকে আপনি বুঝিয়ে এসেছেন, মূল্যহীন, পরনির্ভরশীল, সে নিজেকে রেস্পেক্টই করা শিখবে না। ছোটাছুটি করা যাবে না, ওভাবে হাসা যাবে না, ওখানে যাওয়া যাবে না, এটা বলা যাবে না--এই সব বাঁধা নিয়ে মেয়েটি বৈশম্যের ভেতর প্রশ্নবোধক মনভাব নিয়ে পারিবার ও সমাজকে শত্রু ভেবে, মুখ বুঝে, কষ্টে ঘাপটি মেরে একটা অজানা ক্ষোভ নিয়ে বড় হয়। তার ইমোশনাল কোপ আপ-মেকানিজম-এ যুক্ত হয় নিজেকে আঘাত করা, ঘৃনা করা, নিস্তব্দতা, অবিশ্বাস, আতংক, ভাংচুর এবং কাল্পনিক সুখের জগত। এই মানসিক ভাবে ভংগুর মেয়েদের নিজেদের বিশেষ ভাললাগার বা শখের বস্তু খুব একটা থাকে না, তাই তারা উদ্যেশ্যহীন, উদাসীন, এবং ডিপ্রেসড। এভাবেই আপনি বাবা/মা হয়েও নিজের বাচ্চাটিকে অজান্তেই একজন অস্বাভাবিক পরনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুললেন, যে নিজের ইমোশন নিজে রেগুলেট করতে পারে না। বউ এবং শাশুড়ি যেহেতু দুজনই মেয়ে মানুষ, এবং পারিবারিক এবং সামাজিক বৈশম্যের কারনে এদের একজনও যদি এধরনের বাজে প্যারেন্টিং এর ভেতর দিয়ে যায়, তারা এবুউসিভ রিলেশনশিপ ডেভেলপ করবে, এটাই স্বাভাবিক।

যাই হোক, এই বঞ্চিত এবং অনেক ক্ষেত্রে ট্রমাটাইজড মেয়ে শিশুটি বয়সন্ধির পর নিজেকে তৈরী করতে থাকে কাল্পনিক এক রাজপুত্রের জন্য যে কিনা তাকে এই আজন্ম লালিত কষ্ট থেকে উদ্ধার করবে। ধরলাম তার জীবনে সত্যি সত্যি একজন ছেলে আসল, যে স্বাভাবিক, সাবলম্বি, সাহসী, হাই-ভ্যলু একজন পুরুষ। পুরুষটি মেয়েটিকে ভালবেসে মর্যাদা দেয়, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেয়, সাহস দেয় সব কিছু জয় করার। এখন দুখের বিষয় হল, মেয়েটি এর কোন কিছুই ভালভাবে গ্রহন করতে পারবে না। তার ভেতর এক অবিশ্বাস কাজ করবে। কারণ সে তো বড় হয়েছে বঞ্চিত হয়ে। সে গ্রহন করতে ভয় পায়। সে ধন্যবাদ দেয়া শিখেনি, কারণ তাকে ছোট থেকে কেউ এমন কিছু দেয় নি যার জন্য সে ধন্যবাদ দিবে। সে কৃতজ্ঞ হওয়া সেখেনি, কারন সে চির বঞ্চিত। তার আলোচনা করার মত মানসিকতা তৈরি হয়নি, কারন সে একটা আতংকের ভেতর বড় হয়েছে। সে ভেবেই নেয় তাকে দোষী করা হচ্ছে, এজন্য অহেতুক আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সে ব্লেম শিফট করে। হীনমন্যতা থেকে জন্ম নেয়া নকল আত্মবিশ্বাসের মোড়কে নিজেকেই নিজেরা প্রসংশা করতে করতে স্বকামী হয়ে ওঠে। এদিকে স্রষ্টা প্রদত্ত তার ভেতরের উন্নত ফেমিনিন বৈশিষ্ট্যগুলিও বিকাশিত হয় না, কারন সে যে পরিবারে বড় হয়েছে সেখানে মাসকুলিন আচরনকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। একটি মেয়ের কোমলতা, মমতাময়ী ধারক হওয়া, সহানুভূতিশীল, যত্নশীল হত্তয়া এবং পরিবারকে ভালবাসায় আগলে রাখার যে অনন্য গুন আছে সেগুলিকে ছোট করে দেখা হয়েছে এবং প্রশংসিত করা হয় নি। এজন্য আজকের দিনে, একটি মেয়ে যতটা পুরুষ হতে পারবে সে যেন ততটাই সফল এবং স্বাধিন। জেনেটিক কোডিং এর বিরুদ্ধে যেয়ে, অভিনয় করে কি জীবনে ভাল থাকা যায় না।

মানুষ মাত্রই কান্না এলে কাঁদতে হয়, হাসির কথায় হাসতে হয়। প্রতিটি বাচ্চাকে তাদের ভাল-লাগা এবং খারাপ-লাগা প্রকাশ করার সুযোগ দিন। পরিবার সৃষ্ট যে অপুর্নতা নিয়ে একজন মেয়ে কোন একজন পুরুষের সংগে সংসার বাঁধে, সে পুরুষ কি তার শৈশব/কৈশরের অপুর্নতা এবং ট্রমা দুর করতে পারে?????? দিনশেষে সবকিছুই ভেঙ্গে পড়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×