somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Whole Life Is A Game of Luck!

১৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটি দুনিয়াজুড়ে সাড়া জাগানো “টাইটানিক” ছবি’র একটি ডায়লগ! আমার প্রোফাইল কোট!
১৯৬৯-এ “আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা” দায়ের করা হলে ঘটনা প্রবাহের উত্তাল তরঙ্গ মুজিবকে ঠেলে দিয়েছিল নেতৃত্বের শিখরে। রাতারাতি অবমৃশ্যতার তমশ্যা থেকে আগরতলা মামলাই শেখ মুজিবকে বানিয়ে দেয় কিংবদন্তীর নায়কে। অথচ তার মাত্র ৬ বছর পর সেই - শেখ মুজিবর রহমান’রই মর্মান্তিক ও করুন পরিনতি! একি শুধুই -
–নির্মম হত্যাকান্ড ??
-নাকি নিয়তির নির্মম পরিহাস???
কেন বললাম??
পড়ুন তাহলে উনবিংশ শতাব্দীর "ফরচুনেস্টস মিউটিনি"-র অমর কাব্যগাঁথা!
১/ ১০ আগস্ট তারিখে ছিল মুজিবের প্রিয় ভাগ্নির বিয়ে। এ উপলক্ষে ঢাকায় মুজিবের জ্ঞাতি–গোস্টীর সবাই জড়ো হয়েছিলো। তারা সবাই ঢাকায়ই অবস্থান করছিল কারন ১৪ই আগস্ট ছিলো আবার সেরনিয়াবাত এর মায়ের চেহলাম। ফলে ঘটনার সময় তারা সবাই ধানমন্ডিতেই, মাত্র আধা-বর্গমাইল এলাকার মধ্যে অবস্থান করছিল।
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড; পৃষ্ঠা -৬৯]
২/ রক্ষিবাহিনীর কমান্ডার ব্রিগ্রেডিয়ার নুরুজ্জামান ছিলেন ইউরোপে ভ্রমনে। তার অবর্তমানে যার হাতে দায়িত্ব ছিলো,তার রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া কোন ক্ষমতা ছিলোনা!
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড,পৃষ্ঠা -৬৮]
৩/ ডিজিএফআই প্রধান ব্রিগ্রেডিয়ার রউফ কে সরিয়ে মুজিবের নির্দেশে, শফিউল্লাহ, পাকিস্তান ফেরত কর্নেল জামিলকে নতুন ডিজিএফআই প্রধান বানানোতে রউফ স্পষ্টতই ক্ষিপ্ত ছিলেন। ব্রিগ্রেডিয়ার রউফ রাত ২/৩ টায় তার সোর্স থেকে এই মর্মে খবর পান – একটি ক্যু হতে যাচ্ছে কিছুক্ষনের মধ্যেই! কিন্তু তিনি তা, প্রেসিডেন্ট মুজিব বা শফিউল্লাহ কাউকে না জানিয়ে পরিবার নিয়ে বাসার পাঁচিল টপকে বেরিয়ে পরেন নিজেকে সেইভ করতে। ১৫ই আগস্টই ছিলো নতুন প্রধান কর্নেল জামিল(প্রেসিডেন্ট এর জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসা একমাত্র ব্যক্তি) এর দায়িত্ব বুঝে নেয়ার দিন।
যদিও ১৬ই আগস্ট ব্রিগ্রেডিয়ার রউফ সাংবাদিকদের জানান, তিনি খবর পেয়েই শফিউল্লাহকে জানিয়েছিলেন।
[সূত্র- তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা,পৃষ্ঠা -৬৮]
৪/ ডিএমআই লেঃ কঃ সালাউদ্দিন ট্যাংক মূভ করার খবর পান ৪:৩০ মিনিটে। তিনি সাথে সাথে নিজেই শফিউল্লাহ’র কাছে ছুটে যান এই খবর নিয়ে। কিন্তু শফিউল্লাহ জানান সালাউদ্দিন তাকে খবর দিলে তিনি সাথে,সাথে তাকে শাফায়াৎ জামিলের কাছে পাঠান ট্রুপ মূভ করার জন্য।
[সূত্র- তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা,পৃষ্ঠা -১১০]
৫/ মুজিবের ব্যক্তিগত স্টাফদের মাঝে রুহুল কুদ্দুস ছিলেন সৌখিন হস্ত-রেখাবিদ এবং মুজিবের ঘনিস্ট জন। জুলাইয়ে মুজিব তাঁকে অনেকটা খেয়ালের বশেই হাত দেখান। তিনি মুজিবের হাত দেখে এতটাই ভড়কে গিয়েছিলেন যে, কিছুদিন পর স্ত্রী সহ লম্বা চিকিৎসা ছুটি নিয়ে তিনি দেশত্যাগ করেন। বাংলাদেশ সরকার পরবর্তীতে অনেকবার তলব করেও তাকে দেশে ফেরাতে পারেনি। মুজিব ভাগ্যে বিশ্বাস করতেন খুব বেশী! কিন্তু তাঁর কাছের মানুষ, তাঁর আগাম মৃত্যু বার্তা পেয়েও তাঁকে না জানিয়ে নিজেই পরিবারসহ পালিয়েছে!
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড, পৃষ্ঠা-৬৯]
৬/শেখ কামাল ছিলেন নারায়নগঞ্জের শামীম ওসমান এর ঘনিস্ট বন্ধু। ১৪ই আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত তিনি শামীমের বাসায়ই ছিলেন। যেহেতু তার পরের দিন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেখ মুজিব এর আগমনের কথা, তাই বন্ধুর বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি বাসায় ফিরে আসেন!
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড, পৃষ্ঠা -৬৯]
৭/ শেখ জামালও ঐ রাতে ছিলেন পাশের বাসায় বন্ধুর বাড়ীর ছাদে।জামালের বন্দধু ডাঃ ফয়সাল, যিনি মুজিব হত্যাকাণ্ডের চাক্ষুষ সাক্ষী! তার বয়ানেই শুনুন –
“ ঐ রাতে আমি,জামাল এবং আরও ২জন বন্ধু পাশের বাড়ীর দোতলায়, বারান্দায় বসে একসাথে গল্পগুজব করছিলাম আর ক্যারাম খেলছিলাম। আনুমানিক ভোর ৪টায় শেখ সাহেবের বাসার গেটে হট্টগোল শুরু হয়!এসময় আমাদের নিষেধ সতবেও জামাল পিছনের দেয়াল টপকে ঘরের দিকে ছুটে যায়।আমরা জামালকে যেতে বারণ করেছিলাম। সে বলেছিল “বাসায় নতুন বউ।একা ভয় পাবে!
জামাল চলে যাবার পরই প্রচন্ড গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়।
[সূত্র- বলেছি,বলব- শাহ্‌ মোয়াজ্জেম হোসেন- পৃষ্ঠা-১১৭]
৮/ ১৯৭৫ এর অগাস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এই মর্মে একটি নিউজ আসে যে, আওয়ামীলীগের একজন সিনিয়র নেতা জুলাই-এ বৌ এর শাড়ী কেনার কথা বলে একদিনের জন্য কলকাতায় যায়! কিন্তু সেই নেতা কলকাতা'র দমদম এয়ারপোর্ট -এ যথাসময়ে পৌছলেও এয়ারপোর্ট থেকে একটি বারের জন্যও বের হননি এবং এসময় তিনি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে একজন পশ্চিমা কূটনীতিক এর সাথে দীর্ঘক্ষণ মিটিং করেন! তারপরই তিনি দেশে ফিরে আসেন!
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড,পৃষ্ঠা -৭৪]
৯/ দুর্ভাগ্য হলেও যা সত্য - ১৯৭৩- সাল এর- অক্টোবর, শেখ মুজিব আরব-ইসরাইল যুদ্ধে আরবদের পক্ষে সমর্থনের নিদর্শন সরূপ বিমান-ভর্তি উত্কৃষ্ট মানের চা পাঠান। প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত এহেন আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে যুদ্ধশেষে ৩০-টি T-54 ট্যাংক ও ৪০০ রাউণ্ড ট্যাংকের গোলা বাংলাদেশে উপহার পাঠান!
১৯৭৪-সালের জুলাই-এ সে ট্যাংক-বহর বাংলাদেশে পৌঁছালে,ফার্স্ট বেঙ্গল এর পক্ষ থেকে সেগুলো গ্রহন করেন মেজর ফারুক রহমান।
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড,পৃষ্ঠা -৮৩]
১০/ ১৫ আগস্ট ফারুক এই ট্যাংক নিয়েই শুরু করে তার শতাব্দী কাঁপানো ভয়ঙ্কর মিশণ! কিন্তু সেই ভয়াল রাতে কর্নেল ফারুক এর ট্যাঙ্কে কোন গুলিই ছিলোনা। কর্নেল ফারুকের ভাষ্যমতে ভোরবেলা, সুসজ্জিত তিন হাজার রক্ষী বাহিনীর নাকের ৬ ইঞ্চি সামনে দিয়ে সামনে দিয়ে ব্যারেল ঘুরিয়ে তিনি শুধুমাত্র শো-ডাউন করেই সে পার হয়ে যান!
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড,পৃষ্ঠা -৬৯]
১১/ শেখ মুজিবের বাড়ীর সামনের লেক-এর উল্টা দিকে যুগোস্লাভিয়ার হাউইটজার(কামান) নিয়ে অবস্থান গ্রহন করেছিলেন আর্টিলারির মহিউদ্দিন। ৩২ নম্বরের বাড়ীটিতে হঠাৎ করে প্রচন্ড গোলাগুলি এবং চিৎকার শুরু হলে মহিউদ্দিন প্রথম যে গোলাটি নিক্ষেপ করেন তা গিয়ে লেক-এর পানিতে পরে।পরের বার কামানের নজাল ইন্ডিকেটর অল্প একটু উঁচু করে পুনরায় ফায়ার করেন। এবার গোলাটি মুজিবের বাড়ীর উপর দিয়ে গিয়ে মোহাম্মদপুর -এ গিয়ে পড়ে।অথচ তখন ঐ বাড়ীর ভিতর সৈন্যরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল।একটি মাত্র গোলাও যদি ঐ বাড়িতে গিয়ে পড়তো,মারা যেতো অনেকজন সৈন্য।
প্রকৃতি যেনো তার সমস্ত সৌভাগ্য সেদিন ঢেলে দিয়েছিলো তার মুজিব অ্যাসাসিনেশন বাহিনীর সৈনিকদের পক্ষে!!!
আর পৃথিবীর সমুদয় দুর্ভাগ্য যেনো ১৫ই অগাস্ট ১৯৭৫ ভর করেছিলো শেখ মুজিবর রহমান ডাইন্যাস্টির উপর!!
পুনশ্চঃ- “ফরচুন ফেভারস দ্যা ব্রেইভ”!!!
[সূত্র- তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা]
[সূত্র- বাংলাদেশ, এ লিগ্যাসি অফ ব্লাড]
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×