নারী দিবসে নারীর অধিকার নিয়ে কিছু কথা বলি: নারীরা পরিবারের সদস্য ভিন্ন করে দেখার কিছু নেই। নারী ছাড়া কোনো পরিবার গড়ে ওঠে না। একজন পুরুষ যেমন হাত ছাড়া নড়াচড়া করতে পারে কিন্তু একজন নারী ছাড়া কিছুতেই চলতে পারে না। নারী ছাড়া পুরুষ সম্পূর্ণ হয় না। ইসলামের দৃষ্টিতে আদম মা হাওয়াকে তার সঙ্গী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আদিকাল থেকে বর্তমান নারীরা কখনোই সকল পুরুষের কাছে অবহেলার স্বীকার হয়নি। অবহেলা স্বীকার হয়েছে কিছু বদমেজাজি পুরূষের কাছে। নারীর অবহেলা মেনে নিয়েছে কিছু অশিক্ষিত, অজ্ঞ, নীতিহীন কাপুরুষ। একজন নারী ঘরের প্রধানমন্ত্রী এবং ঘরের শিল্পী যিনি নিজের মতো হস্তশিল্পের মাধ্যমে ঘরকে সাজিয়ে তোলেন। যারা বলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাতে আমার খুব খারাপ লাগে কারণ পুরোপুরি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল পুরুষ আদর্শবান হতে হবে। তারপরও গ্রামগঞ্জে অজানা নারী বৈষম্য স্বীকার হয় কেউ জানে না দিনের পর দিন গোলামি খেটে তার শারীরিক নির্যাতন করে মানুষ শুনবে বলে মুখ ফুটে কেউ কে বলতে পারে না। একটা বাস্তব উদাহরণ দেই মাসখানেক আগে স্কুলের তরমুজ চাষ দেখতে গিয়েছিলাম। পাশের আক্তার সাহেব স্ত্রী গগনবিদারীর চিৎকার শুনে থমকে গেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম কে মারছে? একজন উত্তর দিল না। তখন বুঝতে পারি আক্তার সাহেব তার স্ত্রীকে মারধর করছেন।
নারীর অধিকার: (১) একজন স্ত্রীর স্বস্তির জন্য, তবে তাকে অবশ্যই পুরুষদের গৃহস্থালির কাজে সাহায্য করতে হবে। (২) নারীর শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করুন। একটা কথা মনে রাখবেন একজন ভালো মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে যখন সে রেগে যায় তখন নারীদের কষ্ট দেয় না। কিছু অশিক্ষিত, অজ্ঞ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন জাতি নারীদের আঘাত করে।
(৩) নারী অধিকার বাস্তবায়ন হচ্ছে ভাবলে ভুল হবে। দেশে কর্মরত নারীদের বেশির ভাগই পরিবার সচেতন পরিবার। তাদের পরিবার তাদের লেখাপড়া করতে দেয়। তাদের চাকরির অধিকার দিলেই পুরোপুরি অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়না। আমি মনে করি, যেসব পরিবার লেখাপড়া করতে দেয় না, তাদের শিক্ষিত করে চাকরি দেওয়া গেলে নারীর অধিকার পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়।
চাকরির ব্যবস্থা সুষ্ঠু না হলেও নারী পুরুষের অধিকার খর্ব হয়।
(৪) নারীদের ইচ্ছার স্বাধীনতা দিতে হবে। যদি তার ইচ্ছামত চলতে পছন্দ করে। যেটা সমাজের ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
(৫) নারীদের প্রতি কুদৃষ্টি বন্ধ করতে হবে। যে আমি আপনি সকলে। নারী আমার মেয়ে, নারী আমার মা, নারী আমার বোন। যেমন কেউ আমার বোন সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করলে আমাদের খারাপ লাগে। অন্য কারো বোন সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করলে তার ভাইর খারাপ লাগে।
(৬) সমস্ত পুরুষের উচিত তাদের বোনদের প্রতি ভাল দৃষ্টিতে দেখা। ফেসবুকে অনেককেই দেখেছি মজার ভিডিওতে বলছে সবাই বোন হলে কাকে বিয়ে করব? আরে ভাই, বিয়ের আগ পর্যন্ত আপনি তার কেউ না ততক্ষণ পর্যন্ত বিয়ে না করছেন। তাহলে সেই মেয়েকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন কেন?
(৭) নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করা। গত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অনেক মেধাবী মেয়ে চাকরি পায়নি। নারীর অধিকার আর কি? তাহলে পেয়েছে?
(৮) রাষ্ট্র নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করবে। পিতার সম্পত্তিতে পুত্র ও কন্যার সমান অধিকার রয়েছে। পিতার পুত্র না থাকলে কন্যা সকল সম্পত্তি পাবে। এই আইন বাস্তবায়ন চাই।
(৯) নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি যে সমস্ত বাড়ির সমস্ত নারী সঠিক পথে রয়েছে। এ কারণে মায়েরা সৎ পথের পথপ্রদর্শক শিক্ষার প্রথম স্তর।।
(১০) আমি পুরুষদের দেখেছি নারীর জন্য নিঃস্ব। নারীকেও দেখেছি পুরুষের কাছে নিঃস্ব হতে। তাই নারী ও পুরুষকে আলাদা করে দেখার কোনো মানে নেই। আমি মনে করি দেশের সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা। কেউকে বেশি দিয়ে বৈষম্য নীতি বাদ দিতে হবে। হোক পুরুষ হোক নারী।
( ১১) বিবাহবিচ্ছেদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, নারী-পুরুষ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে এবং ভুল বোঝাবুঝি করছে। রাগ করে তালাক দেওয়া উচিত নয়।
(১২) বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে হবে এবং বাল্য প্রেম বন্ধ করতে হবে।
(১৩) বিয়ের সময় যৌতুক সোজাসুজি না চেয়ে নানা কিছু আবদার রক্ষা করা যৌতুক সমতুল্য। বিয়ের সময় অনুষ্ঠানে ভোজন কেনাকাটা এইসব মেয়েদের বাবা অনিচ্ছাকৃত ভাবে দিতে বা করতে বাধ্য এটা বন্ধ করতে হবে। কোন রকম অনুষ্ঠান চলবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১৮