somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারপরও কি আমাদের ঘুম ভাঙ্গবে না?

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তারপরও কি আমাদের ঘুম ভাঙ্গবে না?

হত্যাকারী নিজে ফেলনীকে গুলি করে হত্যা করার স্বীকারোক্তি দিলেও বিএসএফের নিজস্ব আদালত তাকে নির্দোষ ঘোষণা করে। কি তামাশা। প্রতিবাদের প্রসঙ্গে পরে আসি। আগে কেন এমন রায় দেয়া হলো তা একটু বর্ণনা করি। ভারতের আইন অনুযায়ী নাকি কেউ রাতে বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হলে তাকে গুলি করা জায়েজ আছে! সরকারের এই আইন অনুযায়ী আমরা যাকে অপরাধী বলে ধীক্কার জানাচ্ছি ভারত সরকার তাকে নির্দোষ বলবে এটাই তো স্বাভাবিক!

এ কি ধরণের আইন রে ভাই? ১৫ বছরের একজন কিশোরীকে কাটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় গুলি করে ঝুলিয়ে রাখা ভারত সরকারের আইন? শুনলাম ভারতেও নাকি অনেক মানবাধিকার সংগঠন আছে। তাদের মধ্যে মাসুম নামের একটি সংগঠন নাকি চরম প্রতিবাদ জানিয়েছে। আর বাকিগুলো কি ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় আদালতে মাছি মারছিল?

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারির কথা। সকাল ছয়টার দিকে ১৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি ফেলানী খাতুন তার বাবা নুরুল ইসলামের সঙ্গে দিল্লি­ থেকে বাড়ির উদ্দেশে ফিরছিল। স্বামীর সাথে ঘর বাঁধার উদ্দেশ্যে। কোনো বৈধ পাসপোর্ট না থাকায় তারা দালালের সরণাপন্য হয়। সেই দালালের মাধ্যমে সীমান্তের কাঁটাতারের মধ্যে Felani Khatun, Indian channel, ফেলানী ও ভারতীয় টিভি চ্যানেলবাঁশের মই দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করে। তার বাবা নুরুল ইসলাম কাঁটাতারের বেড়া পার হতে পারলেও আটকে পড়ে ফেলানী। ওই সময় টহলরত বিএসএফের কনস্টেবল অমিয় ঘোষ ফেলানীকে গুলি করে। কাঁটাতারে সঙ্গে গায়ে থাকা সোয়েটারে আটকা পড়ে ফেলানী। এরপর টানা ৪ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকার পর নামানো হয় ফেলানীর মৃতদেহ।

অপরাধ সনাক্ত না করেই কাউকে গুলি করে হত্যা করা কোন আইন হতে পারেনা। ঝুলে থাকা ফেলানী তো ফেলানী না। ও বাংলাদেশ। ফেলানী ঝুলছে না। ঝুলছে বাংলাদেশ। এই স্লোগান দিয়ে ছাপানো পোস্টারটি ঐ সময় আমাকে খুব ভাবিয়েছিল। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেক তোলপার হয়েছে। কিন্তু প্রতিবাদের সেই ভাষাটা কি শুধুই পত্রপত্রিকায়, দেয়ালে, স্লোগানে কিংবা ফেসবুকে সীমাবদ্ধ থাকবে? ভারত কি এসব প্রতিবাদের মূল্য কোনদিনও দিবে? মনে হয় না। কারণ তারা জানে দেয়ালে চিকা মেরে ঘরে ফিরে আবার সেই ভারতীয় চ্যানেলই বাংলাদেশীকে দেখতে হবে। মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়ে আবার ভারতীয় পণ্য কিনেই বাড়ি ফিরবে। অবস্থানগত দিক থেকে যেমন বাংলাদেশকে ঘিরে রেখেছে ভারত তেমনি আচার-সংস্কৃতি, ব্যবসা এমনকি রাজনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করে আসছে ভারত।

আফসোস। আমাদের মস্তিস্ক গোল্ডফিসের মতো ভুলো মনা। সবকিছু ভুলে যাই। অথবা জেনেও না জানার ভান করে এগিয়ে চলি। এভাবে কতদিন? কেউ বলতে পারবে বাংলাদেশের কোন্ পণ্যটি ভারতের থেকে কম মানসম্পন্য। বাংলাদেশের পেয়াজ, আদা, রসুন থেকে শুরু করে অসংখ্য পণ্য যা আমরা ভারত থেকে আমদানি করি সেসব পণ্যের সাথে একবার বাংলাদেশের পণ্যের তুলনা করুন। বলিউডের সাড়াসাগানো চলচ্চিত্র দেবদাস -এর নায়িকার শাড়ি ক্রয় করা হয়েছিল টাংগাইল থেকে।

ফেলানী হত্যার বিচার নাকি পুনরায় শুরু করা হয়েছে। নতুন তামাশা দেখানোর আয়োজন চলছে। কোন দ্বিধা নাই। যে আদালত একজন মানুষকে গুলি করে মারে কাটাতারে ছুলিয়ে রাখার রায় দিয়েছিল বেকুশুল খালাস সেই আদালত কিভাবে এই মামলার বিচার করবে। যে আইন মানুষকে গুলি করে মারা সমর্ধন করে সেই আইন দিয়ে আবার কিভাবে এই বিচার হবে। গুরু পাপে লঘু দণ্ডের কোন দরকার নাই। বাংলাদেশের মানুষ যেরকম আবেগী আর এভাবে ইণ্ডিয়ান আগ্রাসন চলতে থাকলে ১৬ কোটি আবেগের হাওয়ায় ইণ্ডিয়া তুলাই মিসে যাবে। শুধু একবার ঐক্যবদ্ধ হলেই হয়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×