খুব তাড়াহুড়ো করাটা রঙের একটা বদ
অভ্যাস।
এই কারণে সে অনেক কিছুই
সামনে রেখে খুঁজে পায় না।
আজকেও ঠিক তাই।
-এই তুলি তুমি কোথায় গেলে?
একটু এদিকে আসো তো।
আমি আমার মোবাইল টা খুঁজে পাচ্ছি না।
-(রান্নাঘর থেকে জোরে)
উফ্ আমি কি তোমার মোবাইলের ম্যানেজার
নাকি যে ঐটার সাথে সাথে থাকি?
ঘুমানোর সময় কোথায় রেখেছিলে?
-উম্ উম্!!!উফ জানি না তো।
-বালিশের নিচে দেখো পেয়ে যাবে।
-আরে তুমি একটু এইদিকে আসো তো!!
-(আঁচলটা ঠিকমতো গুঁজে দিতে দিতে এসে)
হুম বলো।
এই যে তোমার মোবাইল।
আর এই যে টেবিলের উপর তোমার ঘড়ি আর
টাই।
-(আহ্লাদ করে)
টাই টা একটু বেঁধে দাও না।
-আহা!!শখ কত!!
আমার এতো টাইম নেই।
রান্নাঘরে মা একা।ছাড়ো তো!!!
-ওপস!!ওকে মহারাণী।
যাও তাড়াতাড়ি নাস্তা করে বের হতে হবে।
.
ওহ!!তুলির কথা তো বলাই হয় নি।
রঙের জীবনটা কে যে এতো সুন্দর
রাঙিয়ে দিয়েছে সেই তুলি।
রঙের একমাত্র স্ত্রী।
এখন ওদের শুধু একটাই ইচ্ছে এই রঙ তুলির
মাঝে যেন ছোট্ট একটা সাতরঙের আবির্ভাব
ঘটে।
আর কয়েকটা দিন পরে ঠিক সেই ইচ্ছের ই
অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
.
আজকে খুব দুশ্চিন্তায় আছে রঙ আর
পুরো পরিবার।
হ্যাঁ।আজকেই তাদের সাতরঙের রংধনুর
জন্ম হতে যাচ্ছে।
সবাই অপারেশন রুমের
বাইরে অপেক্ষা করছে।
এই তো ডাক্তার আসছে।
রঙের হার্টবিট বেড়ে ফেটে যাচ্ছে অবস্থা।
.
-কি ব্যাপার ডক্টর কি অবস্থা?
--ডোন্ট ওরি।রিল্যাক্স।
আপনাদের একটি ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে।
-আলহামদুলিল্লাহ!!আর ও?
--ভালো আছে।যেয়ে দেখতে পারেন।
আর দেরী করতে পারে না।সাথে সাথেই সেই
রংধনুকে দেখতে চলে যায়।
-(বাচ্চার দিকে তাকিয়ে)
এই যে গুলু গুলু রংধনু!!
আমাদের ঘর রাঙাতে মা'কে তো খুব কষ্ট
দিলি।
হা হা হা হা।
কি ব্যাপার তুলি?
-যাহ্!সব জায়গায় ফাজলেমি।
.
---তুলিইইইইইইইই!!!!!!!!
[হঠাত্ করেই মায়ের ডাকে তার কল্পনায় ছেদ
ঘটে]
-আসছি মা বলেই গীটারের
টুংটাং টা বাড়িয়ে দেয় সে।
হুম!!!
এইসব ই এখন তুলির কল্পনা।
যা আর কখনোই সে বাস্তবে পাবে না।
কারণ সেদিন বাসায় ফেরার পথেই দুর্ঘটনায়
সবাই মারা যায়।
ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সে।
সেটাও না বাঁচার মতোই।
পাগলের মতো হয়েছিল।
ইদানীং বাসায় আনা হয়েছে।
আর ডক্টরের কথা মতোই তার প্রিয় কাজ
গুলো তাকে করতে দেয়া হয়।
আর সেই সুবাদেই গীটার নিয়ে গান গাওয়ার
নামে পুরনো স্মৃতিগুলো চিন্তা করে।
কল্পনা করে তার রঙ আর সাতরঙের রংধনুর
কথা
যা আর কখনোই সে ফিরে পাবে না।
কারণ রঙ ছাড়া যে তুলি অচল!