somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাস থেকে দেশে ফিরে সামু ব্লগের যে দুটি মুখ প্রথম দেখলাম

০১ লা মে, ২০১০ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সঠিক টাইমেই আমাকে বহনকারী সৌদি এয়ার লাইন্সের বিমান হজরত শাহ্জালাল বিমান বন্দরে অবতরণ করেছিল। কিন্তু গেট না পাবার কারণে রানওয়ের মধ্যেই আমাদের ১৩ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তখন আমি বিমানের ভিতর থেকে ফোন দিলাম.......................................

হ্যালো, এইমাত্র বিমানটা ল্যান্ড করলো। তবে নামতে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। আপনি কোথায়?

সে বললো আমাদের পৌঁছতে আর ২০ মিনিট লাগবে।
‘ওকে’ বলে রেখে দিলাম।

এরপর সব ফরমালিটিজ সেরে অপেক্ষা করতে থাকলাম ল্যাগেজের জন্য। আর এই অপেক্ষা করতে হয়েছিল মাত্র ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট। অথচ আমাদের আসতে সময় লেগেছে ৪ঘন্টা ৫০মিনিট। আসলে যে ভাবে বেল্টে ল্যাগেজ আসতেছিল তাতে ১০/১৫ টা ব্যাগেজ আসার পর আবার ৫/১০ মিনিট পর অপেক্ষা করতে সবাই অধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছিল। আর এভাবেই ধৈর্য পরীক্ষা দিচ্ছিলাম।

এর মাঝে সে আমাকে ফোন দেয়, আমি পৌঁছে গেছি এয়ারপোর্টে।
আমি বলি আমার মনে হয় অনেক দেরী হবে কারণ এখনো ল্যাগেজ আসা শুরু হয় নাই।
সে বলে লাগেজ নিয়ে বাহির হবার আগে আমাকে ফোন দিয়েন।
আমি ‘ওকে’ বলে রেখে দিলাম।

তখন আমার কাছে মনে হচ্ছিল, আমি কোন স্টেজে লাইভ কনসার্ট দেখছি হুমরি খেয়ে। কারন ১/২টা করে ল্যাগেজ আসতেছিল। বেল্টের সাইডে এতো মানুষের ভিড় যে খুব কষ্ট করে সবাইকে চিনে নিতে হচ্ছিল কার লাগেজ কোনটি। যেমন করে লাইভ কনসার্টে গায়ক বা গায়িকাকে সবাই দেখতে চায় অতি কাছ থেকে-তেমনি করে হুমড়ি খেয়ে দেখছিল সবাই। আবার কেউ কেউ ট্রলির উপরে দাড়িয়ে চিনে নিতে চাইছিল নিজ ল্যাগেজ কোনটি।

সবশেষে যখন আমার লাগেজ পেলাম সব ক্যালেক্ট করে গ্রীন চ্যনেল দিয়ে বাহির হচ্ছিলাম। গেটে এসে বাধা আবার পড়লো।
আমাকে কাস্টম ইন্সপেক্টর জিজ্ঞেস করলো- ওটা কি ?
আমি বললাম মনিটর।
উনি বললেন-এলসিডি ?
আমি বললাম, হ্যাঁ।
কত ইঞ্চি?
১৯”।
তা’হলে কাস্টম ডিউটি লাগবে।
আমি বললাম যতদুর জানি মনিটরের জন্য ডিউটি লাগেনা।
এরপর আমাকে যেতে হলো কাস্টম অফিসারের কাছে। তার কাছে জানতে চাইলাম শুল্ক আরোপিত পণ্যের লিস্টটা দেখান। আমি সেই লিষ্টের তালিকায় দেখলাম ১৭" পর্যন্ত শুল্ক নাই, ১৯" তে আছে।
বললাম কত দিতে হবে?
সে বললো ৩ হাজার।
ওকে আমাকে কত ইন্চিতে কত টাকা শুল্ক দিতে হবে সেই লিষ্টটা দেখান।
সে বলে আমাকে পাসপোর্ট দিতে। আমি ফর্ম পূরণ করতে থাকি।
আমি তখন বলি আমাকে আগে বলেন কত টাকা দিতে হবে?
সে বলে আবারো বলে ৩ হাজার টাকা লাগবে।
আমি বলি এত টাকা দিব না, আপনি লিষ্ট দেখান।
কাস্টম অফিসার বলে কত টাকা দিবেন?
বলি, আপনি লিষ্ট দেখান আর দিলে খুব বেশী হলে এক হাজার টাকা দিতে পারি।
শেষ পর্যন্ত অনেক কথা, যুক্তি-তর্ক করে ১৫০০ টাকা আমাকে দিতে হলো।
কিন্তু সে অনেক বাহানা করে আমাকে আর লিষ্টটা দেখালো না।

আমি বাহির হচ্ছি আর সেই ব্লগারে ফোনাইতেছি।
সে বললো আপনি বাহির হন আর আমি গাড়ী নিয়ে গেটে আসতেছি।

এরপর গেটের সামনে এসে আবার ফোন দিই।
সে বলে সাদা কোষ্টারের পিছনে যে কার টা ঢুকছে ওইটাতে আমি আছি।

কিন্তু বড় আশ্চর্ষের ব্যাপার সে আমাকে কোন দিন না দেখেও হাত দিয়ে গাড়ীর মধ্যে থেকে ইশারা করলো।
আমি ব্লগে তার ছবি দেখেছি। এই প্রথম স্বচক্ষে তাকে দেখলাম।
আর সে কে জানেন, তিনি মাসু ব্লগের সবার পরিচিত মুখ আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই “কালপুরুষদা”।
তার সাথে আর একজনকে দেখলাম। প্রথমে তাকে চিনতে পারিনি। কালপুরুষদা তাকে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আর সেই ব্লগার হলেন শ্রদ্ধেয় “ক্যামেরাম্যান” ওরফে রঞ্জু ভাই।

শুধু ব্লগে লেখা আর মন্তব্যের কারণে একজন মানুষ আরেকজন মানুষের কত কাছের মানুষ হতে পারে সেই কথাই ভাবছিলাম। যে মানুষটিকে আমি কখনো নিজের চোখে দেখিনি কিংবা কোন রক্তের সম্পর্ক নাই সেই মানুষ শুধু ব্লগীয় সম্পর্কের কারণে কতটা আপন হতে পারে সেটা তার সাথে পরিচয় হবার পরই বুঝলাম। সেই দুজন মানুষ শত ব্যস্ততার মাঝেও আমার জন্য ৪/৫ ঘন্টা কষ্ট করে এয়ারপোর্টে ছিলেন এবং আমাকে রিসিপশন জানালেন তাতে আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের আন্তরিকতায় আমি অবিভূত। আমি তাদেরকে অন্তর থেকে মঙ্গল কামনা করি।

৩৭টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×