আলফ্রেদো, তুই আসলে ভালো আছিস।
সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম ইচ্ছে পূরণ করে, নিজেকে নিয়ে,
ভালো আছিস অবিশ্বাস, অনুরাগ আর অভিশাপ নিয়ে।
অথচ দ্যাখ এই আমি কতটা অপূর্ণ হয়ে বেচে আছি।
আমাকে কিছু ছোঁয় না, কেউ না, অচ্ছুৎ হয়ে গেছি।
তুই বলেছিলি খুব কষ্ট হলে চোখ বুঁজে থাকতে।
এভাবেই নাকি বেচে থাকতে হয়!
আমি চোখ বুঁজে থাকি, প্রাসাদের ঘোর লাগা আলোয়
শ্যানেল রুজে আঁকা অমোঘ আহবান যখন
জারজ সন্তানের থেতলানো মাংসপিন্ড মনে করিয়ে দেয়,
চোখ বুঁজে থাকি, কড়কড়ে দুপুরে
শহরের অভিজাত হাসপাতালের উন্মুক্ত দরজা থেকে বের হওয়া সুশীতল বাতাস
যখন মৃত্যুকে প্রলুব্ধ করে, চোখ বুঁজে থাকি,
প্রসিদ্ধ রেস্তোরার সামনে খাবারের সুবাস যখন আমার নাড়িভুঁড়ি উলটে দেয়,
পয়সার অভাবে বাকি নিতে গিয়ে কিশোরী বোনটার আঙুল
যখন দোকানীর আঙুল ছুঁয়ে যায়
কিংবা অপুষ্ট শুক্রাণু যখন এই পৃথিবীতে কোন চিহ্ন রেখে যেতে অক্ষম,
আমি চোখ বুঁজে থাকি।
তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এখন আমার মধ্যবিত্ত সংসার।
পাঁচ বছর পর পর এখানে উন্নয়নের রজঃস্রাব হয়।
সে জোয়ারে আস্তিক-নাস্তিক সব ভেসে যায়
ডুবে যায় নগরীর সুউচ্চ বিলবোর্ড।
প্রতি রাতে সে জোয়ারে আমি ভেসে যাই
কাজলকালো বুড়িগঙ্গা থেকে পাড়ভাঙ্গা মেঘনা, তারপর বঙ্গোপসাগর।
আমার স্থির দুচোখ তাকিয়ে থাকে নীল আসমানের দিকে।
তখন তারাগুলোকে অনেক কাছে মনে হয়।
আমার খুব তারা হতে ইচ্ছে করে।