নতুন মাফিয়া বর্তমান ব্যাংক ব্যবস্থা
ব্যাংক গুলোর সার্ভিস চার্জের আর্থিক নির্যাতনে অতীষ্ঠ জনসাধারণ আর তামাশা দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ঘটনা ১
এখন যে ব্যাংকের কথা বলছি সে ব্যাংকে আমার কোনো একাউন্ট নেই। কারণ বহুদিন আগে আমার এক জুনিয়র ভাই শখ করে সে ব্যাংকের মার্কেটিং এর চাকরী করতে গিয়েছিলো। কিন্তু তার সিনিয়র ভুল বশত তাকে সেলস এর এনালাসিস হয় এরকম একটা মিটিং এ নিয়ে যায়। সেখানে যিনি বস তিনি একে একে সবার কাছ থেকে জানতে চাচ্ছে কেন ফাইল ক্লোজ হয়নি? সম্ভবত তিনি ভালো জবাব দিতে পারেনি। তাই শুরু হলো অশ্রাব্য ভাষায় গালি। কেন ফাইল ক্লোজ হয়নি। তুই ক্লায়েন্টের বউরে ..... গেছস। আরো অনেক এরকম অশ্লীল শব্দচয়ন।
এবার আরেকজনের পালা। তারও তিনটা ফাইলের একটাও ফাইল সাকসেস হয়নি। আরেকজনকে বলা হলো ‘‘ওই ওরে পাশের রুমে নিয়া যা। .... খুলে. .... শুরু কর। ভাবছেন কোন ব্যাংক। বড়ো বড়ো এড দেয়। নীতিকথার ফুলঝুরি ছুটায় এরকম একটি ব্যাংকের গল্প।
ঘটনা ২
এই ব্যাংকেও আমার একাউন্ট নেই। কিন্তু আমার সাথে লেনদেন আছে এমন কারো একাউন্ট আছ্ েআমি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে পছন্দ করি। তাই ক্লায়েন্ট এর পাওনা টাকা ব্যাংকের একাউন্টে দিতে গেলাম। চেক জমা দিয়ে আসলাম। ২ দিন পর ফোন এলো সিটি ব্যাংক চেক ফেরত দিয়েছে কারণ থাউজেন্ট এর টিএইচ এর সাথে লেগে গেছে। ভাবলাম হতেই পারে। সিটি ব্যাংক একটু বেশী ভাব দেখায়। চেক ফেরত আনতে গেলাম। কিন্তু এই ব্যাংকে কি কি বলবো। সাউথ ইষ্ট ব্যাংক আমার হাতে ১১৫ টাকার একটি জমা রিসিড ধরিয়ে দিলো। অপরাধ আমার চেক ফেরত আসলো কেন? আমি বললাম এটা কোন যুক্তি?
১. চেকতো ফেরত দিয়েছে সিটি ব্যাংক জরিমানা আমি দেব কেন?
২. তাছাড়া চেক ইস্যু হলে লাভবান হতো আরেকজন আমি জরিমানা দেব কোন যুক্তিতে?
৩. চেক জমা দিলেতো আমার কাজ শেষ। আমিতো চেক নিতে নাও আসতে পারতাম সেক্ষেত্রে আপনারা কাকে জরিমানা করতেন। এমনকি এখন আমি চেক ফেরত না নিলে আপনারা কি করবেন?
৪. তিনহাজার টাকার একটা ড্রিলিংস আমারতো ১১৫ টাকা লাভই হয়নি। আমি ১১৫ টাকা ফিস কোন কারণে দেব?
৫. আপনি যদি দোকানে কেনাকাটা করতে যান তাহলে যদি দরদাম না বনে, বা মালে কোনো সমস্যা থাকে, পন্য না কেনার জন্যও কি আপনাকে দাম দিতে হয়? বিষয়টাতো সেরকম। কারণ আপনি কাস্টমারের সাথে প্রতিটি কথার জন্য ফি ধরতে পারেন না। দশজন কাস্টমার আসবে এর মধ্যে ২ জন কিনবে সেখানে আপনার লাভ হলে ব্যবসায় পোষাবে। আর এখানেও তাই। কিছু লেনদেন ফেল হবে কিন্তু সাকসেস লেনদেন হলে লাভ উঠে আসবে। ফেল লেনদেন এর জন্য টাকা নেয়া এক ধরনের অর্থণৈতিক নির্যাতন।
তারা আমার কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি। বলেছে এটা তাদের ব্যাংকের নিয়ম।
তিন
এবারের ঘটনা আরেকটি ব্যাংকে। এই ব্যাংকে আমি একটা কারেন্ট একাউন্ট খুলেছি। ২ হাজার টাকা দিয়ে। ২ বছর পর আমি লেনদেন করার জন্য। ব্যালেন্স কত জানতে চাইলাম। ব্যাংক জানালো তারা আমার কাছে টাকা পায়। ২ বছরে বার্ষিক চার্জ বাবত আমার ২ হাজার টাকা খেয়ে ফেলেছে ব্যাংকটি।
চার
ব্যাংকের অনলাইন এবং আরো যত সেবা আছে সেগুলো আপনার জন্য নয়। সেগুলো হলো ব্যাংকের নানারকম সেবা দিয়ে সেখানে বিভিন্ন বাড়তি ফি আদায় করার ধান্ধা। আমি ব্রাক ব্যাংকে অনলাইন ব্যাংকিং করতে চাইছিলাম। তারা ফি চাইলো ১২শ টাকা। আমি আরেকটা ব্যাংকের নাম বললাম যে ব্যাংকে কোনো ফি চাড়াই আমার মোবাইল মেসেজ ও অনলাইন ব্যাংকিং চালু করে দিয়েছে। শুনে তারা ফোন রেখে দিল।
প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ ব্যাংক কি জনগণের স্বার্থের জন্য নাকি মহাজনদের সুদের আর সার্ভিস চার্জের ব্যবসা জমজমাট করার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




