আকাশটা মেঘলা করে আছে আজ। মনে হচ্ছে যেন মুখ ঘোমড়া করে আছে কারো উপর অভিমান করে। হয়তো সূর্যদেবের উপর। কাল অমন বলা নেই কওয়া নেই টুপ করে ডুব দিল যে! তার নাকি ঘুম পেয়েছে। সারাদিন রোদ বিলাতে বিলাতে সে নাকি ভীষণ ক্লান্ত। কিন্তু তাই বলে সন্ধ্যাগগনের সাথে দুয়েকটা দুঃখ-সুখের কথা বলে যাবে না! না এ ভীষণ অন্যায়। আকাশনীলা তাই ঠিক করেছে রৌদ্দুরের সাথে আজ কোন কথা নেই।
ভোরের আকাশে মেঘ দেখে এই সব কথা ভাবতে ভাবতে সাবওয়ের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলাম। গতকাল রাতে আমার ওমন সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়া আর তোমার শুকনো মুখের টেক্সট রিপ্লাই দেখে ঠিক বুঝে নিয়েছি মুখটা বানিয়ে রেখেছো। আচ্ছা যাই হোক, হেঁটে যাচ্ছিলাম তোমার কথা চিন্তা করতে করতে। কানে আমার প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজছিল। পথ চলতে গিয়ে দেখি এক জায়গায় একটা চেরী গাছ, আর তার চারপাশে মাটিতে ছড়ানো ছিটানো চেরী ফুল সব। মুহুর্তের জন্য মনে হচ্ছিল যেন কাল সারারাত ফুলগুলো আনন্দনৃত্য করতে করতে গাছ থেকে নেমে পড়েছিল এখন ঘাশের নরম বুকে শুয়ে আরামের নিদ্রা দিচ্ছে। একটা দৃশ্য ভেসে উঠলো কল্পনায়-
দেখি তুমি শাড়ীর আঁচল বিছিয়ে বসে আছো চেরী গাছটার ঠিক নীচে। একটা একটা করে ফুল ঝরে পড়ছে তোমার উপর। তোমার শাড়ীর আঁচলে, তোমার এলো চুলে, তোমার মুখে, আর এক একটা চেরী ফুলতো দেখি সাহস করে তোমার ঠোঁটও ছুইয়ে দিয়ে গেল। এত্ত সাহস! আমার প্রেয়সীর ঠোঁট ছুঁই! ফুলটাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে যাব কিন্তু মন অন্য একটা ফুলের দিকে ছুটে যাওয়ার জন্য দুহাত বাড়িয়ে দিয়েছে তখন। আমার সামনে বসা জলজ্যান্ত ফুলটার দিকে। হেসে তোমার পাশে গিয়ে বসলাম। তোমাকে দেখলাম প্রাণ ভরে। তোমার দুচোখ, তোমার মুখের প্রতিটা অভিব্যক্তি, তোমার কানের দুল, তোমার ঠোঁটের প্রতিটা ভাঁজ। তোমার চুলের কাছে মুখ নিয়ে গন্ধ নিতে লাগলাম। আবেশিত করে দেয় আমাকে তোমার চুলের এই সুগন্ধটা। এক সময় তোমার কোলে মাথা রেখে শুইয়ে পড়লাম। চেরী ফুলগুলো তখনো ঝরছে একটা একটা করে। কখনো তোমার উপর। কখনো আমার। তোমার দিকে চেয়ে রইলাম নিষ্পলক নেত্রে। মনে হচ্ছিল জগতে শুধু তুমি, আমি আর এই চেরী গাছটি। এক সময় মুখটা আস্তে করে অল্প একটু তুললাম। তুমিও মাথাটা নুয়ালে...
এর পর...এর পর না হয় তুমিই কল্পনা করে নাও।
:-) হাসিটা তোমার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:১৯