মাননীয় সরকার বাহাদুর,
সারাদেশ জুড়ে কয়েক মাস ধরে চলমান নাশকতার পরিকল্পনাকারী জামাত-শিবিরের ফেসবুক প্রোপাগাণ্ডা পেজ "বাঁশের কেল্লা" ও "ইসলামী ছাত্রী সংস্থা" বহাল তবিয়তে আছে। রাষ্ট্রের গোয়েন্দা পুলিশ ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণকারী কমিশন তাদের কিছুই করেনি, করতে পারেওনি।
পরিষ্কার ভাষায় রেললাইন উপড়ে ফেলার বা পুলিশ হত্যার আহ্বান জানানো এই পেজগুলোর সফলতা আজকের খবরের কাগজের অনলাইন সংস্করণে দেখতে পাবেন। রেল বিচ্যুত হয়ে হতাহত যাত্রী নিয়ে ধানক্ষেতে পড়ে আছে তূর্ণা নিশীথা, ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় আছেন রাজশাহীতে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার।এই পেজ যারা চালায়, আপনারা তাদের গুপ্তকেশটাও ছিঁড়তে পারেন নাই।
আপনারা ধরেছেন তিনজন ব্লগারকে। তাদের অপরাধ, তারা একটি ধর্ম সম্পর্কে নিজেদের মত প্রকাশ করেছে। তাদের এই মত প্রকাশের জন্য কোনো ট্রেন লাইনচ্যুত হয়নি, কোনো মানুষও আহত বা নিহত হননি। তারা কোনো ধরনের নাশকতার ডাকও দেননি। আপনারা যদি এতই ধর্মবিশ্বাসী হবেন, তাহলে ধর্মের ঈশ্বরের হাতে পরকালে এদের বিচারের ভার কেন ন্যস্ত করেন না?
জামাতশিবির নিষিদ্ধের দাবিতে সারা দেশে যখন শান্তিপূর্ণ অনশন পালিত হয়, আপনারা সাড়া দেন না, আর যখন অশান্তির হুমকি আসে হেফাজতে ইসলামের পাণ্ডাদের কাছ থেকে, তখন আপনারা নিরীহ তিনজন লোককে তুলে নিয়ে পিটিয়ে তাদের ছবি ছাপিয়ে দেন মোল্লাদের আশ্বস্ত করার জন্য।ভোটের জন্য? মোল্লাদের ভোট আপনারা পাবেন না। তাদের জুতা জিহ্বা দিয়ে চেটে সাফ করলেও পাবেন না।
বরং যারা জামাতশিবিরের রাজনীতির মোকাবেলা করার জন্য আপনাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে, তাদের ভোট হারানো শুরু করবেন। তিনটা ভোট এর মধ্যেই হারিয়েছেন, হয়তো কয়েকদিনের মধ্যে তিন মিলিয়ন ভোটের সংকল্পের গন্তব্য পাল্টে যাবে।
যে তিনজন ব্লগারকে আটক করেছেন, তাদের মুক্তি চাই না। তাদের আপনারা আটকে রাখুন। কারণ আপনারা তাদের নামধামছবি সব প্রকাশ করে দিয়েছেন। মুক্ত বাংলাদেশে এখন তাদের পিছু নেবে আততায়ীরা, যারা আপনাদের কল্যাণেই এদের চিনে নিয়েছে এবং যাদের দমন করার ব্যাপারে আপনাদের কোনো সদিচ্ছা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
এই তিন ব্লগারকে আটকে রাখুন। যে দেশে ঈশ্বরের প্রতি অনাস্থার শাস্তি ঘাতকেরা বাড়ি এসে বুঝিয়ে দিয়ে যায়, সে দেশে পুলিশের হাত থেকে "মুক্তি"র কোনো অর্থ নাই। এদের আটকে রাখুন, বাঁচিয়ে রাখুন। আর মোল্লাদের স্যান্ডেল আইসক্রিম জ্ঞান করে লেহন করে যান।