ফিরিয়ে দিলে , তারপর ফিরে গেলে নিজেও।আমিও ফিরে এলাম সেই আগের ঠিকানায়,যেখানে বার বার স্বপ্নের মাঝে হানা দেয় বিভত্স কষ্টগুলো ।যেখানে বেচেঁ থাকা মানেই অসহ্য যন্ত্রনা।যেখানে দুঃসহ স্মৃতি গুলো কাল শত্রুর মত পিছনে লেগে থাকে ২৪টি ঘন্টা।
যাক এসব, তোমাকে আমার গল্পটি বলা হয়নি না?তবে শোনো.......তুমি তো জানোই বাবা মায়ের খুব আদরের একমাত্র মেয়ে আমি।তাদের অবাধ্য হতে মনটা কখনও সায় দেয় নি আমার। তাই একদিন বাবার দেয়া "ভালো ছেলে"র বিশেষন টাকে পূঁজি করে তার নামে দু'হাতে মেহেদী পরি।সেই ভালো ছেলেটিকে ভালোও বেসেছিলাম অনেক।জ্বর ছিল আমার শরীরে সেদিন, তবু ক্লান্তি ছিল না একটুও।কি জানি এক অজানা শিহরনে কেপেঁ উঠছিলাম বারবার।যখন আমার হাতটি অন্য আরেকজনের হাতের উপর রেখে বাবা কেদেঁ উঠলো তখনই বুঝেছিলাম আমি আর আমার একা নই।কোথা থেকে যেন অজস্র স্বপ্ন,অপরিমেয় আস্থা আর নিশ্চিন্ত ভরসা এসে আমার এতদিনকার একান্ত নিজস্ব মন আর শরীর টাকে দখল করে দিব্যি সওদা শুরু করলো।ভরা শীতেও কোথায় যেন একটা কোকিল "কুহু কুহু"ডেকে উঠেছিল সেই বিকেলে।বিদায়ের সময় বাবা খুব কাঁদলো,আমিও।ব্যাস এতটুকুই,তার পর খুব স্বার্থপর হয়ে গেলাম আমি।বাবাকে ছেড়ে থাকতেই পারতাম না।পরে ছেড়ে না থাকতে পারার মানুষটি বদলে হয়ে গেল নতুন ঐ মানুষটি । কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম কোথায় যেন এক মস্ত শুভঙ্করের ফাঁকি আছে।নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে নতুন পরিবারের কেউই আমাকে সাহায্য করেনি।মাস না ঘুরতেই অপমান আর আঘাতে আমার সব স্বপ্ন গুলা পালিয়ে গেল।প্রথম রাতেই বুঝেছিলাম ওর কাছে মনের চেয়ে কাঁচা মাংসের স্বাদ বেশি প্রিয়।তাই আত্মসমর্পনের স্বপ্ন আমার আত্মবিসর্জনের রুপ নিল।যাকে ভালবাসি তার জন্য বিসর্জনেই সুখ খুঁজে নিল মন।ওর মা আমার বাবা মাকে অপমান করলো মেনে নিলাম,সবার সামনে আমাকে অপদস্ত করলো মেনে নিলাম,কারন আমার ভালবাসা।ভালবাসা ব্যাপারটা তানপুরার মত।আঘাত করলে সুর ছড়ায়।তবে আঘাত করারও সীমা থাকে।তাই সীমাহীন আঘাতে একদিন তানপুরার সব তার ছিড়ে গেল।ফিরে এসে দেখি ফেলে আসা "দেড় টি বছর"আমার জীবনের সব হাসি,সব সুখ,সব চাওয়া পাওয়া কেড়ে নিয়ে গেছে। হাজার মুখের ভিড়ে খুঁজে ফিরি একটি মুখ।রোজ বিকেলে অফিস ফেরৎ মানুষ গুলার মাঝে খুজতে থাকি একজন কে।যদি ভুল করে ভুলে চলে আসে আমার ঠিকানায়!বোবা দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি আকাশের দিকে।আনমনে অদৃশ্য কাউকে জিঙ্গেস করি "কেন এমন হল?"।কি যে তৃষ্ণা !!! একটি বার দেখার,একটু কথা শোনার,একটু ছুঁয়ে দেখার।কতওওওওওওওওদিন দেখিনা!!এত অসহায়ও মানুষ হ্য়?
এভাবেই চলছিল আমার দিন-নিঃসঙ্গ,নীরস ,নীরব।এর মাঝে একদিন তুমি এলে।সেই স্নিগ্ধতা,সেই স্নেহ নিয়ে যা আমি চেয়েও পাইনি।হঠাৎ মনে হল আমি বাঁচতে চাই।আর দশজনের মত সংসার,সুখ,গৃহস্থলি নিয়ে।তাই কাঙালের মত ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে হাত পেতেছিলাম তোমার কাছে।এও বলেছিলাম আমাকে গ্রহন না কর একটি বার বল "ভালবাসি"।স্রেফ স্বীকৃতি।এতটুকু নিয়েই বাকি জীবন টা দিব্যি চালিয়ে নেব।তুমি কত সুন্দর করেই বুঝিয়ে দিলে আমি শুধু করুনাই পেতে পারি,ভালবাসা নয়!! তোমার পাশে সেদিন দেখলাম নীল পরী (নাম জানিনা তাই এই নামে ডাকলাম)খুব ভালো লাগলো।ভালো থেকো।আর কেউ না বুঝুক আমি জানি তুমি বুঝবে এত টুকু লিখতে আমার হৃদপিন্ডের সব রক্ত কনিকা আমার আঙ্গুল দিয়ে ঝরেছে!!আমার শাস্তি পাওয়া দরকার ছিল।কাউকে ভালবাসার অধিকার আমার নেই।তবুও ভালবেসেছি,শাস্তি তো পেতেই হবে।তুমি জানো,কাঁদছি আমি?!!আর ভাবছি-
"তোমায় আমায় মিলেছি প্রিয়,শুধু চোখের জলের ব্যবধান টুকু রয়ে গেল"
বিঃদ্রঃ লেখাটি নিছক কল্পনা বা সত্য যার যা মনে হবে সেটাই ঠিক!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১০ রাত ১১:১০