পাবলিক ভার্সিটিতে বা ভাল কোথাও চান্স
পাওয়ার পর কতিপয় অহংকারী (!) ছেলেমেয়ের
মধ্যে যেসব মনোভাব আর আচরন পরিলক্ষিত হয়-
.
• পাইয়া গেছি চান্স, আমারে আর ঠেকায় কে?
একমাত্র আমিই দেশের সম্পদ, বাকিরা সব বোঝা।
.
• কারণে-অকারণে, ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে, অপ্রাসংগিক
হলেও নিজের ভার্সিটির নামটা সবার সামনে
বলতে চায়। উদ্দেশ্য হল সবাইকে শোনানো যে
আমি অমুক জায়গায় পড়ি।
.
• শুধু ভার্সিটি নিয়েও শান্তি নাই, নিজের
ভার্সিটির মধ্যেই আবার কমদামি-বেশীদামি
ডিপার্টমেন্ট নিয়ে আলোচনা আর নিজের চেয়ে
নিচের ডিপার্টমেন্ট গুলোকে তাচ্ছিল্য করা।
.
• পাবলিক ভার্সিটিগুলোর মধ্যেও কোন ভার্সিটির
কয়টা ফুটা, কার কোন জিনিস নিয়া সমালোচনা
করা যাবে এসব নিয়ে ব্যাস্ত থাকা।
.
• ভাবটা এমন যেন আমিই দুনিয়ার একমাত্র মেধাবী
স্টুডেন্ট, বাকিরা ঘাস খাইয়া বড় হইছে।
.
• প্রাইভেট বা ন্যাশনাল ভার্সিটির নাম শুনলেই
তাচ্ছিল্যের সাথে ওইসব জায়গায় স্টুডেন্টদের
নিয়ে এমনভাবে কটুক্তি করা যেন ওরা কেউ
এসএসসি-এইচএসসি পাশ করে ভার্সিটিতে ভর্তি
হয়নি, ওরা কেউ স্টুডেন্টই না।
.
• কেউ কেউ তো আবার ওইসব ভার্সিটির সামনে
দিয়ে যাওয়ার সময় অহংকারে মাটির দুই ইঞ্চি
উপর দিয়ে হাঁটে আর ওদের টিজ করতেও ছাড়ে না।
.
• দুইদিন আগেও যার কাছ থেকে পড়া বুঝে নিত,
চান্স পাওয়ার পর উনারেই মুর্খ ভাবা শুরু করে।
.
• সবজায়গায় নিজেকে বড় মনে করে। ভাবটা এমন
আমি চান্স পাইছি তার মানে দুনিয়ার সব জ্ঞান
অর্জন করে ফেলছি, এখন আমি যা জানি বা বলি
সেটাই সঠিক অন্যদেরটা ভুল। অন্যরা কিছুই জানে
না।
.
• দুইদিন আগেও যেই বন্ধুদের সাথে সারাদিন
আড্ডা দিত চান্স পাওয়ার পর তাদের সাথে আড্ডা
দিতে ইজ্জতে লাগে।
.
• ফ্রেন্ডদের মধ্যে ক্লাস ভাগ করে। যার তার
সাথে মিশে না, এই ক্লাস ভাগ করার চোটে অনেক
কাছের বন্ধুরেই পর করে।
.
• যদি কখন কোন পাবলিক প্রোগ্রামে যায় তখন
সারাক্ষণ নিজেকে সবার চেয়ে আলাদা আর
বিশেষ হিসেবে প্রকাশ করার আকুলতা থাকে, অথচ
ওর পাশেই হয়তো আরো ভাল কেউ থাকতে পারে
এটা ভাবেই না।
.
• বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে এমন পার্ট দেখায়
যেন অপর ব্যাক্তিটি তার ভার্সিটির নামের জন্যই
তার সাথে প্রেম করার জন্য দেওয়ানা।
.
• কোন সাধারণ প্রতিষ্ঠানের সিনিয়রকে কোন
চাকুরীর জন্য আবেদন করতে দেখলে এমন ভাব
দেখায় যেন ভাই ওই চাকুরীর জন্য আবেদন করে আর
এইসব চাকুরী তো আমারে জামাই আদর করে নিবে।
এটা পুরাই একটা বোগাস চিন্তাভাবনা।
.
• বাসে উঠলে এমন ভাব দেখায় যেন ভার্সিটিতে
চান্স পাইছে বলে ভার্সিটির সরকারী বাসের
সাথে সাথে বাইরের লোকাল বাসগুলাও পৈতৃক
সম্পত্তি হয়ে গেছে আর খারাপ ব্যাবহার তো
কখনো লিমিট ছাড়িয়ে যায়।
এটা অবশ্য সব প্রতিষ্ঠানেরই কিছু স্টুডেন্ট করে।
.
...এসব ম্যাধাবীদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলবো,
তুমি চান্স পাইছো এটা তোমার ব্যাপার। তোমার
ভাব তোমার কাছে, অন্যের সাথে না। অন্যরা চান্স
পায়নি বলে যে তোমারে ''স্যার'' ভাবা লাগবে
এমন আশা না করাই ভাল।
.
''ক্যারিয়ার'' আর ''ক্যারেক্টার'' এক জিনিস না।
সবার আগে তোমার পরিচয় তুমি 'মানুষ' তাই নিজের
এই পরিচয়কেই আগে চিন্তা কর।
.
...তুমি ভাল প্রতিষ্ঠানে পড় মানেই এই না যে তুমিই
সব জায়গায় বস আর বাকিরা তোমার কর্মচারী,
বরং এমন হতে পারে খুব সাধারণ বা অর্ধশিক্ষিত
কারো তোষামোদ করেই তুমি চাকুরী করবে।
.
সর্বোপরি মানুষকে মানুষ ভাবার মানসিকতা তৈরী
কর কারন, বিনয় এমন একটি সম্পদ যা স্বর্ণ রৌপ্যের
চেয়ে অধিকতর মুল্যবান।
.
নিজের গর্ব করার মত অর্জন নিয়ে গর্ব কর কিন্তু
এটাকে অহংকারে রুপান্তরিত কর না।
.
নিজের ভাব দেখানোর মত জিনিস আছে বলে ভাব
দেখাবেন, তাইতো? দেখান তাও সমস্যা নাই, কিন্তু
ভাবের চেয়ে ভংগী বেশী হয়ে গেলেই একটু
খারাপ দেখা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৭