somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আব্দুল গাফফার চৌধুরী সত্য বলেছেন।

০৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এক চাচার নাম আজিজ, দাদার নাম ময়েয, আরেক প্রতিবেশি চাচার নাম রহিম, গ্রাম সম্পর্কে দাদার নাম রহমান। প্রতিবেশি দাদার নাম সাত্তার, মামার নাম গাফফার।। এভাবে হাজারও নাম আছে।
বহুদিন এগুলো মানুষের নামই জেনে আসছিলাম। বড় হয়ে আরবি কায়দা শিখতে গিয়ে আল্লাহর ৯৯ নামের ঘর পড়তে গিয়ে দেখিলাম, না ঐগুলো শুধু আমার দাদা চাচার নাম না। আল্লাহরও পবিত্র নাম। তখন হুজুরকে বললাম, হুজুর এইযে আল্লাহর নামে আমরা মানুষ কে ডাকি এতে পাপ হয়না? আল্লাহর সাথে কারও শিরিক চলবেনা তবে ছেলেদের নাম কেন আল্লাহর নামে রাখে। সহজ প্রশ্নের উত্তর দিতে হুজুরের দেরি হল না। বললেন, সন্তানের নাম যদি আল্লাহর নামের সাথে মিলে রাখে তবে সেটার আগে আব্দুল যুক্ত করতে হয়! আমি বললাম লিখার সময় আব্দুল লিখলেও ডাকার সময় কেউ তার সন্তান বা পরশীকে আব্দুল অমক বলে ডাকেনা। হুজুর বললেন সেটাতে কঠিন পাপ হবে!
আমি যেমন জানতাম না রহিম করিম খালেক মালেক আল্লাহর নাম। তেমনি প্রাক ইসলামের যুগে আরবের লোকেরাও জানত না যে এগুলো একজন প্রভূরই নাম। তাই তারা বিভিন্ন দেব দেবতাদেরকে এইসব এক এক নাম দিয়ে ডেকে পূজা করত। কিন্তু কোরয়ান শিখিয়েছে যে এগুলির সকল কিছুর বা গুনের একমাত্র মালিক আল্লাহ সুতুরাং নাম ভেদে রুপ দিয়ে পুজা কর না। তিনি এক ও ওয়াহিদ। এগুলো তারই গুনবাচক নাম।
আর সেটিই বলেছেন গাফফার চৌধুরী, যে আল্লাহর সকল নাম প্রাক ইসলামের কাফের তাদের দেব দেবীদের নাম ছিল পরে ইসলাম সকলকে এই বিষয়ে মোডিফাই করেছে এক আল্লাহর নামে।
ভাইজানেরা দোষ কোথায় তার?
আরবি ভাষা আগে এসেছে নাকি ইসলাম? যদি ধরি আরবি ভাষা আগে তবে কত আগে? উত্তর হবে বহু হাজার বছর আগে। আমি বলব কোরান? ১৪০০ বছর আগে। তাহলে আরবি ভাষাতে যদি খালেক মালেক শব্দ না থাকত তবে কোরান নাজিলের সময় কেমনে বুঝল আল্লাহ খালেক মানে সৃষ্টকারী, মালেক মানে সত্তাধীকারী।? / এগুলি শব্দ যেহেতু কোরানে স্থান পেয়েছে তা বোঝার জন্যই শব্দ আগে এসেছে। শব্দ হল ভাষার জন্মদাতা, আর সেই ভাষার অলংকার হল সাহিত্য বা কিতাব। বলুন, ভাষার শব্দ আগে নাকি গ্রন্থ??
যদি ধরেও নিই এটি বেহেস্তি ভাষা বাবা আদমের জুবান আর ইব্রাহিমের বুলি। তবে বলুন আরবের পিতা কে? নিশ্চয় ইসমাইল? কারণ হযরত ইসমাইল হলেন জাজিয়াতুল আরবের পুর্বপূরুষ। আর তার ভাই হযরত ইশাক হলেন ইসরাইল জাতির পিতা। তাহলে বুঝুন, ইসমাইল বংশে ইসলাইলের পর প্রথম ও শেষ নবী হলেন মুহাম্মাদ। অর্থাৎ ৫ হাজার বছর আরবী ভাষী কোন নবী পায়নি, অথচ তাদের মুখের ভাষা ছিল বেহেস্তি ভাষা। আর ফেরেস্তা, অন্য মাখলুক আল্লাহকে ৯৯ গুনবাচক নাম ধরে ডাকতেন যা আরবের লোক জানতেন না, তারা ছিলেন কাফের!
আবারও বলতে হবে আমি কায়দা সিফারা পড়ার আগে যেমন জানতাম না এগুলি আল্লাহর নাম, তেমনি আল্লাহর ৯৯ নাম আরবি ভাষার লোকের কাছে পরিচিত চিলনা যে এগুলো আল্লাহ্‌র নাম, বরং এই শব্দ গুনবাচক হওয়ায় তারা পূজারী হিসেবে বিভিন্ন দেবদেবি প্রতিষ্ঠা করে পূজা করা কেন অসাভাবিক হবে??
তারা কি কোরান নাজিলের আগে জানত যে এই নামগুলি পবিত্র লাওহে মাহফুজে আল্লাহ দুনিয়া সৃষ্টির আগে থেকেই নিজের হিসেবে পাক কালামে সংরক্ষণ করেছেন?
একটি কথা মনে রাখতে হবে, আরবি যদি রসুল (সা) আজ পর্যন্ত ১৪০০ বছর মুসলিমদের দখলের হয় তবে রসুল (সা) আবির্ভাবের ৫ হাজার বছর হতে তার জন্ম পর্যন্ত আরবি ভাষা ছিল কাফেরদের জবান।
ইসলাম কি বলে তা দেখুন।
ইসলাম বলে সকল নবীর মুজেজা ছিল, আর মুহাম্মাদ (সা) মুজেজা কোরান, কারণ আরব নাকি সে সময়ে কবি সাহিত্যিকে পরিপূর্ণ ছিল। ছন্দময় কবিতা রচনা করে কবিতা আবৃতি করে সাহিত্য রচনা করে ভাষার ভান্ডার গড়ে ছিল, আর তাদের সে সব কাফেরী কবিতার জবাব দিতেই সেই ভাষায় সাহিত্য সম্বলিত কিতাব নাজিল হল নবীর উপর যা দেখে তারা ঘাবড়ে গেল যে মুহাম্মাদের মত উম্মি মানুষ কি করে সাহিত্য নিয়ে এল? আর কুরান ছিল তাদের সাহিত্যকে তাদের কবিতা ছন্দকে ধ্বংসকারী কিতাব।
তাহলে আর আব্দুল গাফফারের কি দোষ যিনি বলেছেন যে আল্লাহর নিরানব্বই নামের প্রত্যেকটিই কাফেরদের দেবদেবী দের নামেই ছিল??
তারা সাহিত্যে এত ধনী ছিল আর গুনবাচক বা বিশেষণ শব্দ তারা অজানা ছিল তা কি করে হয়?
** এখন বাঁকি থাকল যে তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন ' রাসুল হিসেবে তাকে এককভাবে ডাকা যাবেনা কারণ তিনি একাই রসুল নোন।'
আবদুল গাফফার চৌধুরীরর এই বাক্যই প্রমাণ করে যে তিনি নাস্তিক নোন। তিনি রসুল নবী মানেন।
আরবের ইহুদীরা মুসা (আ) কে শ্রেষ্ঠ নবী মানতেন আর তার পর কোরানের আয়াত দ্বারা মুসলিম জাতিকে নবী ও রসুলদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতা নির্ধারণ করাকে নিষেধ করেছেন। নবীদের মান সমান।
তাহলে গাফফার চৌধুরী আর কি ভুল বলেছেন?
আব্দুল গাফফার চৌধুরী মিথ্যা কিছু বলেন নাই।
কুরানের ৯৯ আল্লাহর নামগুলো প্রাক ইসলামের যুগে কাফেরদের দেবতাদেরও একই নাম ছিল। যা ড. জাকির নায়েক বহুভাবেই বুঝিয়েছেন।
যেমন, হিন্দুদের (হিন্দুদের কাফের বলছিনা, শুধু উদাহরণ) ব্রম্মা অর্থ সৃষ্টিকর্তা, যার আরবী হয় খালিক, মানে আল্লাহর নাম। বিষ্ণু মানে পালনকারী যার আরবি হল রব, মানে আল্লাহর নাম। এমনকি আল্লাহ শব্দটিও ইসলাম আসার কয়েক হাজার বছর আগে থেকে ব্যবহার হয়ে আসছিল, কোরানে আল্লাহ শব্দটিও প্রথম নয়, উদাহরণ: রসূল (সা:) এর পিতার নাম আবদুল্লাহ, মানে আব্দুল + আল্লাহ। রসুলের জন্মেরও আগে তার মৃত্যু হয়। সুতুরাং জনাব গাফফার চৌধুরী এমনকিছু বলেননি যাতে ইসলামে আঘাত আসে। তিনি মাদ্রাসাতে আরবি সাহিত্যেও পড়ালেখা করেছেন তাই উনি অনেক ভাল বোঝেন।
আমি তাকে সমর্থন জানাই এবং সবাইকে জনাব গাফফার সাহেবের কথা না বুঝে কুতর্ক করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪
১৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×