somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাতৃত্বের স্বাধ

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূর্যের আলো এসে পরছে সিমির ঠিক মুখে। সকালের সূর্য টা বেশ ভাললাগলেও ঘুম থেকে ওঠার আগে মুখে এসে পরলে কিছুটা বিরক্তি লাগে। ডান হাতটা চোখের উপর রেখে আরমোরা ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ফুলে ওঠা পেটটার দিকে একটু খেয়াল করে। কষ্ট করে উঠে বসে দুহাতে আলত করে স্পর্শ করে পেটটি। অনুভব করে সাত মাস হল তিল তিল করে বেড়ে ওঠা তার শরীর এরই অংশ আর একটি জীবন তার সন্তান কে। একটু যেন নড়ে ওঠে। আঘাত টা লাগলেও সিমির মুখে হাসি বিস্তৃত হয়। পেটের উপরই আলত করে হাত বোলাতে থাকে আদর করার মত করে। হাত বোলাতে বোলাতে বলে,
- কি রে , ঘুমিয়ে ছিলি? ভালই ঘুমাচ্ছিস দেখি।
আবার যেন একটু নড়ে ওঠে।
মুখে হাসি রেখেই একটু আহ করে ওঠে সিমি। পেটের দিকে তাকিয়ে বলে,
- এত দুষ্টু কেন তুই? আমাকে শুধু কষ্ট দিস। তোকে আগে হাতে পাই, দেখিস কি করি।
এবার যেন নড়াচড়া টা একটু বেশিই হয়। সকালে খালি পেটে এমন নড়াচড়ায় , বমি বমি ভাবটা তীব্র হয়। পেটটা চেপে ধরে বাথরুম এর পাশে বেসিনে গিয়ে কিছুটা হালকা হয়।

পেটটা ধরেই গায়ে চাদর জড়িয়ে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে যায়। সকাল সাতটা বাজে। তার ছোট ছেলে শিখর বেশ ভোরেই ঘুম থেকে উঠে পড়ছে। ছেলেটি ক্লাশ ৯ এ পড়ে। ওর দরজার কাছে গিয়ে একটু উকি দিয়ে দেখে। চাদর জড়িয়ে টেবিলে বসে পড়ছে। কেমন এক শিহরণ খেলে যায়। চোখ বন্ধকরে ভাবতে থাকে প্রায় কিশোরী বয়সে বিয়ে হয়েছিল তার, সেটাও ত দেখতে দেখতে ২২বছর হতে চলল। তার বড় মেয়ে আজ বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ছে। মা মেয়ে দাড়ালে অনেক সময় ই অপরিচিত জন দুই বোন বলে ভুল করে। ছেলেটাও দেখতে দেখতে এত লম্বা হয়েছে যে অনেক বড় বড় লাগে। কিন্তু তার মনে হয় এইত সেদিন ই ছেলেটা হল। কত যন্ত্রনা তাকে নিয়ে। ছিল ত দুষ্টের শিরমনি , কত অভিযোগ তাকে ঘিরে। অথচ কয়েকদিনেই ছেলেটি যেন বড় হয়ে গেল। স্কুলে যাওয়ার আগে মা কে যোর করে দিয়ে যায়। আবার ক্লাশের ফাকে ফোন করে। এ বয়সে নতুন করে বাচ্চা নেয়র কথা ভাবেই নি যদিও বয়স তার বেশি না কিন্তু কিছুটা বেমানানই। প্রথম যেদিন বুঝতে পারল সেদিন কিছুটা ভয়ই পেয়েছিল। কিন্তু সবাই যখন বেশ আনন্দিত হল সাহস দিল তখন ভয় টা উবে গিয়েছিল। সবচেয়ে খুশি যেন হয়েছিল তার স্বামী, কেমন বেহায়ার মত সবাই কে এখবর বলে বেড়াত। লোকটার কি লজ্জা শরম কোন দিনও হবে না?

এসব কথা ভাবতে ভাবতে কিছুটা আনমনা হয়ে গিয়েছিল। এর মাঝেই পেটের মাঝে নড়াচড়া তাকে সম্বিত ফিরিয়ে দেয়। পেটটা ধরে রাখে এক হাতে আর এক হাতে দরজা ধরে ছেলে কে ডাকে ,
- শিখর, পড়ছিস না ঘুমাচ্ছিস?
শিখর উত্তর দেয় পড়ছি মা।
সিমি বলে ,
- ১৫ মিনিট পর খেতে এস।
শিখর মাথা নাড়ে।
চাদর টি ঠিক করতে করতে খাবার টেবিলের চেয়ারে আলত করে বসে। একজন কাজের মেয়ে আছে তাকে ডিম কিভাবে ভাজতে হবে সে নির্দেশনা দেয়।
- সালমা, কুসুম যেন ভেঙ্গে ফেলিস না। চুলা এত বাড়িয়েছিস কেন? এ জন্যই ত এক পাশ পুড়ে যায় প্রতিদিন।
এসব যাবতিয় নির্দেশনা শেষে পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,
- কি ঠান্ডা লাগছে তোকে? এত কাপছিস ক্যান? এই দেখ তোর জন্য কত গুলো কাঁথা বুনেছি।
এ কথা বলে পেটের দিকে তাকিয়ে চোখটা একটু তিক্ষন করে।
- কি বললি? জিন্স প্যান্ট পড়বি বড় ভাইয়ার মত? ইহহহহহহ, সাধ কত? সারাদিন ত হাগু মুতু নিয়েই ব্যাস্ত থাকবি। এ কাপড় গুলো তোর কে ধোবে? আসতে না আসতেই স্টাইল শিখছে?
আবার একটু নড়ে ওঠে যেন। সামনের দিকে তাকিয়ে মনে মনেই বলে,
- তোর বড় আপুকে, বলিস। তুই বড় হলে তোকে জিন্স প্যান্ট কিনে দেবে ঢাকা থেকে। আচ্ছা? এখন খুশি? এখন একটু থাম তোর বড় আপুর সাথে কথা বলি।
ফোন টা নিয়ে মেয়ের নাম্বার টি বের করে ফোন করে সিমি। দুবার রিং না হতেই অন্যপাশে কন্ঠ শোনা যায়।
- এত সকালে উঠছ ঘুম থেকে? রান্না ঘরে গেছ আবার আবার না? তোমাকে নিয়ে যে কি করি আমি?
শিমি একটু হেসে উত্তর দেয়,
- আমি ভাল আছি মা। এত চিন্তা করতে হবে না। তুই সকালে কিছু খাইছিস?
ওপাশ থেকে একটু থেমে উত্তর আসে,
- হ্যা খাইছি। তুমি কোন কাজ করবে না বলে দিলাম। শিখর পাজি টা কৈ? ঘুমাচ্ছে না কি এখন? আর বাবা ত কলেজে যচ্ছে বলল।
একটু হেসে উত্তর দেয় শিমি,
- হ্যা মা ও উঠছে। পড়ছে। তুমি চিন্তা কর না। ক্লাশে যাওয়ার আগে কিছু খেয়ে যেয়ো, রাখি মা এখন?
ওপাশ থেকে উত্তর আসে,
- আচ্ছা রাখো। আর ফোন টা তোমাকে যে গলায় ঝুলে রাখার ব্যাগ দিছি তার মদ্ধে রাখবা, ভুল হয় না যেন।
ফোনটা রেখে, নিজের মনেই হাসে সে। এই সেদিনও এই বাচ্চাদের নিয়ে কত দৌড়া দৌড়ি, স্কুল কলেজ, এটা সেটা। অথচ এরাই কত বড় হয়ে গেল। এখন যেন এরাই গার্জেন হয়ে গেছে। ব্যাপার টা বেশ উপভোগ করে শিমি। এ অসময়ে এ ব্যাপার টা না হলে হয়ত এটা বোঝাই হত না। প্রথম বার মা হওয়ার সময় তার মা বেচেঁ ছিল। বাচ্চার কাথা ত্যানা থেকে শুরু করে সবকিছু সে তৈরি করেছিল নিজের তত্বাবধানে। এখন মা নেই তাই সেগুলো তাকেই ম্যানেজ করতে হচ্ছে।
আবার যেন নড়ে ওঠে পেটের মাঝে। চেয়ার এর একদিকে একটু পাশ ফিরে বসে সে।
পেটে হাত রাখতে রাখতে বলে,
- না রে বাবা রাগ করিস না। তোকে আমি এ বয়সে পাব ভাবিনি ঠিকই কিন্তু যিনি দেয়ার মালিক তিনি যে দিয়েছেন। তুই আমার কলিজার টুকরা রে। তোর নানি থাকলে দেখতি কত কি করত তোকে নিয়ে। নাই তবে তোর যে বড় বোন আছে ভাই আছে আর মামাত খালাত যত জনই আছে এরা তোকে এত আদর করবে যে তুই খুশি রাখতেই পারবি না।
মা র কথা মনে হতেই কিছুটা মন খারাপ হয় শিমির্।
একটু দাড়িয়ে শিখর কে রেডি হয়ে খেতে আসতে বলে। শিখর আসতে আসতে সে টেবিলে খাবার সাজিয়ে ফেলে।
স্কুল ইউনিফর্ম পরে শিখর টেবিলে এসেই জিজ্ঞেস করে,
- তোমার খাবার কৈ?
শিমি বলে,
- তুমি খেয়ে তুই খেয়ে যা আমি পরে খাব।
শিখর উত্তর দেয়,
- মা , তুমি না খেলে আমি খাব না বলে দিলাম।
শিমি যানে কিছুটা একরোখা এ ছেলে। সেও একটা প্লেট নিয়ে খেতে বসে। কাজের মেয়ে সালমা কেও বলে খাবার নিতে। সে জানে তার ছেলে খাবে না তার পরও প্রতিদিন এমন আব্দার শুনতে তার ভালই লাগে।
খাবার গুলো কেন যেন খেতে ইচ্ছে করে না। বমি বমি একটা ভাব থাকে সবসময়, কিন্তু পেটের দিকে তাকিয়ে ভাবে এটা ত তার কলিজার টুকরারও খাবার্। সেই ভেবে প্রায় নাক মুখ বন্ধ করে কিছু টা খায়।
আবার পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,
- কি পেট ভরেছে তোর? ওহ খেয়ে মনে হচ্ছে শক্তি পেলি আরও। ঘুতো ঘুতি বেশি করছিস। একটু থাম তোর বড় ভাই স্কুলে যাবে ওকে বিদায় জানাই।
শিখর এর খাওয়া হলে সে ব্যাগ হাতে নিয়ে দরজার দিকে যায়। আর মা র দিকে তাকিয়ে বলে
- খবরদার , কোন কাজ করবে না। আর ফোন টা গলার সাথেই রেখ। আমি কিন্তু ফোন করব।
শিমি হেসে উত্তর দেয়,
- আচ্ছা রে বাবা আচ্ছা। সাবধানে সাইকেল চালিয়ে যাস। জোরে চালাস না কিন্তু।
শিখর চলে গেলে দরজা টা লাগিয়ে দিতে দিতে বলে,
- কি, তুইও স্কুলে যাবি? শখ কত? যখন যাওয়ার সময় হবে তখন ত যেতেই চাবি না।
অনাগত সন্তানের স্কুলের কথা ভেবে বেশ ভাল লাগে। মনে মনে শিমি চিন্তা করে যাক একা একা থাকার থেকে এ সন্তানের পিছে তার সময় টা ভাল কাটবে। আবার দু হাত পেটের উপর বোলাতে থাকে। অনুভব করে সন্তানের নড়াচড়া।
চোখ সরু করে পেটের দিকে তাকিয়ে বলে,
- কি, তোকে স্কুলে যাওয়ার জন্য সাইকেল কিনে দিতে হবে? এখনই এত শখ। তোকে আমি সাইকেল দেবনা, শেষে পা ভেঙ্গে বিছানায় পড়বি আর আমার যত জালা বারাবি। উহু, আমার সাথে যেদ করে কোন লাভ হবে না।

এমন করে কথা বলতে বলতে সময় গুলো কেমন করে যেন কেটে যায়। কাজ না করলেও অভ্যাস মত রান্না ঘরে যাওয়া, এটা ওটা বানানো বাচ্চার জন্য এ

সবই চলতে থাকে।
এ অনুভূতি প্রথম বার মা হওয়ার অনুভূতি থেকে কোন অংশেই কম না। বরং আরও তীব্র বলেই মনে হচ্ছে।
সংসারে ছেলে মেয়ে বড় হয়েছে, তাই হয়ত স্বামী স্ত্রী র সম্পর্ক কিছুটা আনুষ্ঠানিক কাজের মত গত বাধা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে শিমি র স্বামীও কেমন যেন একটু বেশিই কেয়ারিং হয়ে গেছে। নানা কাজে সারাদিন ব্যাস্ত থাকার পরও যখনই সময় পায় ফোন করে। সময় মত ডাঃ এর কাছে নিয়ে যায় আবার রাতে খেতে বসে জোর করে খাওয়ায় সব কেমন যেন নতুন নতুন লাগছে।

সেদিন শনিবার, প্রচন্ড শীত পরেছে বাইরে। শিমি শুয়েই আছে সকাল থেকে। সকালের ঝরঝরে রোদ টা নেই , কেমন এক মন খারাপ করা যেন সকাল। জানালার কাঁচ ভেদ করে সামনে যতটুকু দেখা যায় সবই যেনো ধুসর, নিশ্চুপ। কম্বল টি ভালো করে গায়ে জড়িয়ে পেটের উপর হাত রাখে, কথা বলার মত করে বলে,
- কি রে ঠান্ডা লাগছে খুব? একেবারে শান্ত হয়ে আছিস। কথা নেই কেন?
এ কথা বলে আবার সে কিছুটা আনমনা হয়ে যায়। শিখর এর স্কুল আজ বন্ধ। ঘরেই আছে ও। মেয়েটা কে আজ সকালে ফোন করা হয় নি। বেশ কিছু হাতের কাজও বাকি। কিন্তু কোন কিছুতেই যেন মন বসছে না তার্। একবার মনে মনেই বলল , কি হল আজ?
কিছুক্ষন পর আবার অনুভব করার চেষ্টা করে বাচ্চার নরাচরা কিন্তু কোন কিছুই পাচ্ছে না। ভয়ের শীতল স্রোত বইতে থাকে শরীর দিয়ে। কি হল?েে
অনেক্ষন পর একবার সে একটা মুভমেন্ট পায়। যেন বুকে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু স্বস্তি টা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আগের মত নরাচরা নেই বাচ্চার্। সে বুঝতে চেষ্টা করে কি হল? কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। শিখর কে ডেকে বলে ,
- বড় বুবু কে ফোন করে আসতে বল ত। আর বাবা কে ফোন করে বল আমি ডাঃ এর কাছে যাচ্ছি।
এর দশমিনিট এর মাঝে সে তৈরি হয়ে শিখর কে নিয়ে ডাঃ এর চেম্বার এ হাজির হয়। ঐ দিক থেকে বড় বুবু ও চলে এএসেছেন। ডাঃ বেশ তারাতারি সব চেকআপ এর ব্যাবস্থা করে। কিন্তু ডাঃ এর মুখে শঙ্কা ফুটে ওঠে। অজানতেই মুখ ফসকে ডাঃ কে বলে,
- কি হয়েছে ডাঃ. ?
ডাঃ উত্তর দেয় না। সে রুম থেকে বেরিয়ে গিয়ে বড় বুবুর সাথে আলাপ করে। এর মাঝেই আরো কয়েক জন এসে গেছে হাসপাতালে। তাকে বেশ তারাতারি একটা কেবিনে নিয়ে অক্সিজেন দেয়া হল। এছাড়াও আরো কিছু ব্যাবস্থা নেয়া হল। একটু একটু করে সে শুনতে পেলে তার কলিজার টুকরার হৃদপিণ্ডের মাঝে একটি ফুটো দেখা যাচ্ছে সেই সাথে মেজর নিউমনিয়া। শ্বাস প্রশ্বাস খুবই কম।
শিমি একা ঘরে শুয়ে আছে। মনে মনে কথা বলছে,
- খুব কষ্ট হচ্ছে সোনা তোর? তোর হৃদপিণ্ড পাল্টে আমি আমার টা দেব। তখন আর কষ্ট হবে না। তুই সাইকেল চালিয়ে স্কুল যাবি। বড় ভাই কে দেখেছিস তোর জন্য কি করছে? ওর সাথে গেমস খেলবি।

এসব কথা ভাবতে ভাবতে শিমির গাল বেয়ে অশ্রু ঝড়ে পরে। খোদার কাছে ছেলেকে ভিক্ষে চায়।
বড় বুবু ঘরে ঢুকলে তাকে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। কছুই বলতে পারেনা সে মুখে। যে ভালবাসা তার মাঝে তিল তিল করে জমেছে সেটা পৃথিবীর আর কাউকে বুঝানো যায় না।

এরপর রাতেই সিদ্ধান্ত হয় অপারেশন এর্। তাছাড়া মা র অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন হতে পারে। অপারেশন এ মৃত অবস্থায় বাচ্চা টি আসে পৃথিবী তে। তাকে দেখে কেউ সেভাবে চোখের পানি ফেলেনি। বাবা একবার বাচ্চা কে দেখে চোখ মুছেছে। ভাইও ঠিক না বোঝার এক অবস্থায়। তার দাদা দাদি নজেদের বংশের ছেলে বলে তাকে লোকালয় থেকে দূরে তাদের এক কবরস্থানে মাটি দেয়ার কথা বলছে। যে সবার মাঝে আসেই নি তাকে নিয়ে আর কি বা কাজ করতে পারে সবার মনে। সে ত কোন কিছু শূন্য করেনি।

এর মাঝেই শিমির জ্ঞান ফেরে। সে আকুল হয়ে তার ছেলেকে দেখতে চায়। তখন তাকে দেখানো হয় না। তবে খবর টি সে পায়। কিছুক্ষন খুব কান্নাকাটি করে। কিন্তু এ কান্না যেন শুধু তার একার্। আশেপাশে মানুষ শুধু সান্তনা দিচ্ছে। কিন্তু এ কষ্টের সান্তনার কি কোন ভাষা আছে? ধীরে ধীরে সে চুপ করে। দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকে শূন্য দৃষ্টি তে। ক্ষতবিক্ষত শরীর, মন টা যেন অসঙ্খ্য ছুরির ফলা দিয়ে বিদ্ধ করা হয়েছে। এ মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে সে জ্ঞান হারায়।
এর পর তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই সন্তানের মুখ। ঐ ত কাঁদছে তার বুকের মানিক। কল্পনায় হাত বাড়িয়ে সে বলে,
- দাও। আমার বুকের ধন কে আমার বুকে দাও।
কিন্তু কেউ দেয় না। কে যেন ধীরে ধীরে তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কোন এক ঐশী আলোর দিকে।
জ্ঞান ফিরে আবার সে কাঁদতে থাকে। তাকে সান্তনা দিচ্ছে কেউ কেউ। কেউ একজন বলল,
- শিমি, তোমার এ নিস্পাপ সন্তান এর সাথে তোমার দেখা হবে স্বর্গে। দুঃখ কোর না।
সাথে সাথে সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে তার দিকে চায়। সে কি জানে যে স্বর্গ তার থেকে চলে গেল। এ কদিন সে যে সুখ পেয়েছে তা কি স্বর্গ সুখ নয়? যে স্বপ্ন বুনেছিল মনের মাঝে এ সন্তান কে ঘিরে তা কি স্বর্গ সুখ ছিল না? সেই কলিজার টুকরো কে মাটিতে শুইয়ে দেবে সে কষ্ট কি নরক যন্ত্রনার থেকেও বেশি?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:১২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×