গত সপ্তাহে ব্রান্চের ম্যানেজার ছুটিতে থাকায় ম্যানেজারের রুম পাহারার দায়িত্বে ছিলাম (ব্রান্চের ইনচার্জ আরকি)। বুধবার সকালের দিকে ব্রান্চের এক অফিসার একজন ভদ্রলোককে তার স্ত্রী সহ নিয়ে এলেন আমার কাছে। উনি বললেন বিদেশ থেকে উনার বন্ধু কিছু টাকা পাঠাবেন, নিয়ম কানুন গুলো যদি বলি..। আমি গৎ বাঁধা নিয়ম কানুন বলে জিজ্গাস করলাম, কত টাকা পাঠাবে? সে বলল তিন লাখ পাচ হাজার ডলার। আমি নড়েচড়ে বসলাম। বললাম কেন পাঠাবে? ..সে বলল, এম্নি বন্ধুকে খুশি হয়ে দেবে। বুঝলাম কেস ঘোলাটে মনে করে আমার অফিসার আমার কাছে নিয়ে এসেছে।
বন্ধুকি বাংলাদেশী ?.. না, সেনেগাল। কতদিনের পরিচয়? ..তিনমাসের অনলাইন বন্ধু। বোঝা হয়ে গেল আমার যা বোঝার। বললাম, কেন দেব এতগুলো টাকা?.. সে যা বলল তা সেই পুরান কাহিনী, সেনেগালে থাকে বন্ধু, তার পিতা ইংল্যান্ডের এক ব্যাংকে অনেক ডলার রেখে মারা গেছে... অনলাইনে কিছু পরামর্শ দিয়ে তাকে সে টাকা পেতে সাহায্য করেছে তাই খুশি হয়ে তিন লাখ পাচ হাজার ডলার দেবে উনাকে। আমি তাকে বললাম এই রকম মেইল আমিও পেয়েছি বহু.. প্রতারণার একটা কৌশল এটা। লোকটা বিশ্বাস করে না আমার কথা। বললাম ঐ ব্যাংকে যোগাযোগ করেছিলেন? সে বলল হ্যা, ইংল্যান্ডের ঐ ব্যাংক তাকে কনফার্ম করেছে ঘটনা। বললাম, ব্যাংকের মেইল আ্যড্রস কে দিছে? সে বলল, তার বন্ধু। তাকে অনেক কস্টে বোঝালাম যে ঘটনা ফেইক আর খুব শীগগির টাকা চাইবে সে, পারসোনাল ইনফর্মেশন গুলোও শেয়ার না করতে সাবধান করে দিলাম। লোকটা আর তার স্ত্রী যখন বুঝল আসলেই ফেইক হওয়ার সম্ভাবনা তখন তারা আশাহত আর কিছুটা শংকিত হয়ে বিদায় নিল।
ঘটনা দুই : বছর দুই আগে একবার ইয়াহুর ইউজার আইডি আর পাসওয়ার্ডগুলো হ্যাক করার খবর এসেছিল পেপারে, সেই সময় একদিন ঢাবির ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্টের খান স্যারের মেইল পেলাম... স্যার ইংল্যান্ডে বেড়াতে গিয়ে হটাৎ করে টাকার সমস্যায় পড়েছেন কিছু ডলার পাঠাতে বলছেন। আমি দ্র্রত ফোন দিলাম ডিপার্টমেন্টে.. শুনলাম স্যার দেশেই আছেন.. হ্যাক হয়েছে স্যারের ইমেইল.. পরিচিত অনেকেই এই মেইল পেয়েছেন।
প্রতারনার নানান কিছু নতুন কৌশল শুনলাম সম্প্রতি। আজ আর লিখবনা। অনেকদিন পর ব্লগ লিখছি, ফোনেটিক লিখতে হাত ব্যাথা হয়ে গেছে। আরাকদিন নতুন কৌশল নিয়ে লিখব। সবাই সাবধানে অনলাইনে ব্যবহার করুন, বিশেষ করে অনলাইন ব্যাংকিং আর ক্রেডিট কার্ডের ব্যাপারে সাবধান।