somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিমির হননের রাত

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১...
বাদশা হাতি চড়ে রাজ্য ভ্রমণে বের হয়েছেন।পথমধ্যে এক নগ্ন পাগল বসে আছে।বাদশা ব্যথিত হলেন, তার রাজ্যে কোন গরীব লোক, অসুস্থ লোক থাকবে কেন! তিনি পাগলকে বললেন,"তুমি পোশাক পরছো না কেন?তোমার পাশেইতো কম্বল দেখা যাচ্ছে, গায়ে জড়িয়ে নাও।তোমার লজ্জা ঢাকা পরুক।"
পাগল হেসে বললো,"লেংটো হয়ে আমার লজ্জা লাগছে না।দুনিয়ায় এসেছি লেংটা, ছেড়ে যাবো লেংটা!এতে লজ্জার কি আছে?মহামান্য বাদশার যেহেতু লজ্জা লাগছে, বাদশা নিজেই আমাকে কম্বল দিয়ে জড়িয়ে দিন।"

বাদশা এই পাগলের বুদ্ধিদীপ্ত আধ্যাত্মিক কথায় মোহিত হয়ে নিজেই তাকে কাপড় জড়িয়ে দিতে এলেন।পাশে রাখা কম্বল টান দিতেই বেড়িয়ে এল কিছু তাজা কাটা-মাথা।মাথাগুলোর রক্ত এখনো শুকায়নি, শুকাবে কি করে?এদের বাদশা নিজেই ভোরবেলা গর্দান নিয়েছেন, এরা সবাই বাদশার আত্মীয়, সিংহাসনের হকদার ছিল।এই অপরাধেই সবাইকে খুন করা হয়েছে।
এবার পাগল মুচকি হেসে বললো,"মহামান্য বাদশাহ, আপনি এবার কি ঢাকবেন?আমার লজ্জা, না আপনার পাপ!"

সন্ধ্যার পর থেকেই সাত্তার মিয়ার মাথায় এই গল্প ঘুরপাক খাচ্ছে।তিনি কিছুতেই মনে করতে পারছেন না ঐ বাদশাহ আর পাগলের নাম।অথচ এই গল্প তিনি এক সময় আগ্রহ নিয়ে সবাইকে শোনাতেন।
তবে কি তার স্মৃতি শক্তি দিন দিন কমে যাচ্ছে? যারা মিথ্যা কথা বলে, তাসের স্মৃতি শক্তি দিন দিন কমতে থাকে!তিনি কখনো মিথ্যা বলেননি। এই জন্য ছেলেমেয়েরা তাকে ভয় পায়, স্ত্রী ভয় পেত; তার সাথে মিশতে পারে না।তার কোন বন্ধু নেই।
হতে পারে তার মন কিছুটা বিক্ষিপ্ত, এজন্য মনে আসছে না।

যারা এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতো, তারা কেউ বাসায় নেই। রুবি বান্ধবীর বাড়ি বেড়াতে গেছে, কোহিনূর গেছে কলেজে আর আকিক'কে তিনি বকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন।

২...
আকিক'কে তিনি বকেছেন সামান্য কারণে। এখন মনে হচ্ছে, না মেরে বোঝালেও পারতেন। মা মরা পুলাপানকে মারা অন্যায়। অথচ না মারলে পুলাপান মানুষ করাও অসম্ভব। পুলাপান মানুষ করার জন্য এখনো হিটলারী পদ্ধতি ১০০% কার্যকর।

আজ আকিকের মধ্যপর্ব পরিক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। ও অংকে পেয়েছে মাত্র ৪০। তুই পরিক্ষায় খারাপ করেছিস, আজ বাদে কাল তোর জেএসসি পরিক্ষা তুই মন দিয়ে অংক করবি।তা না, তুই হয়েছিস প্রকৃতি প্রেমিক!তোকে চাঁদ দেখতে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে যেতে হবে? বালুতে শুয়ে চাঁদ দেখতে হবে, এই কথা শুনে কোন বাবার রাগ উঠবে না!
নদীর পাড় হল পায়খানার জায়গা, ওখানে চাঁদ দেখার কি আছে।শুধুশুধু পা কাঁচা গুতে মাখামাখি হবে।
তিনি আকিককে কান ধরে গেটের বাইরে নিয়ে গেলেন। চিৎকার করে চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন,"নাকে চাপ দিলে এখনো দুধ বের হবে, উনি হয়েছেন প্রকৃতি প্রেমিক!অংকে ফেল মাইরা সে নদীর পাড়ে যাবে চাঁদ দেখতে!তুই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যা, আর আসবি না।আমি তোরে ত্যাজ্যপুত্র করলাম।যা ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে গিয়ে গায়ে গু মেখে শুয়ে থাক,মন ভরে চাঁদ দেখ।"

ভালো মানুষগুলো অসম্ভব রাগী হয়।অমায়িক চরিত্রের অধিকারী হয় স্বার্থবাদী,চোর টাইপের লোকজন। তাদের পাছায় লাত্থি দিলেও হেসে বলে, ভাইসাব, বিরাট উপকার করেছেন।বাতের ব্যথা ছিল, আরামবোধ করছি।
এই যেমন, আকিক'কে মেরে তাড়িয়ে দেবার পর থেকেই সাত্তার মিয়ার খারাপ লাগছে।এই মেঘের দিনে ছেলেটা কোথায় যাবে, কে জানে?

উনি একটু পরেই ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে গেলেন। গিয়ে দেখেন আশেপাশে লোকজনের ভীড় এখনো আছে, কিন্তু আকিক নেই।তার কাউকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হল না।

৩...
রুবির মা মারা গেছেন অনেক আগে।সেদিন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিল, আষাঢ় মাসের প্রথম বৃষ্টি। থামার কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছিল না। তিনি গিয়েছেন রুবিকে স্কুল থেকে আনতে।আকিক তখনো বুকের দুধ খাওয়া ছাড়েনি, আকিককে বুকে জড়িয়ে বেড়িয়ে গেলেন।
স্কুলের গেটে কেউ ছিল না,কেবল রুবি দাঁড়িয়ে ছিল।কোহিনূর সেদিন স্কুলে যায়নি।উনি রুবিকে দাঁড়িয়েই থাকতে বললেন, তিনি রাস্তা পাড় হয়ে আসছেন।রুবি দাঁড়িয়েই রইলো, কেবল তিনি চলে গেলেন।
মাথা থেকে বুকের দিকটা ট্রাকের জোড়া চাকায় পিচের সাথে মিশে গিয়েছে। রুবি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো, আকিক কখন ওর কাছে হামাগুড়ি দিয়ে চলে এসেছিল, ওর মনে নেই।

এরপর থেকেই রুবি বৃষ্টি সহ্য করতে পারে না।চারপাশ কালো করে ঐ দৃশ্য চোখে ভাসে, কয়েকদিন অজ্ঞান হয়ে যায়, এপিলেপ্টিক সিজার হয়।
তিনি দেশের সব বড়বড় ডাক্তার দেখিয়েছেন, কোন সমাধান হয়নি।সাত্তার মিয়া রুবিকে ভারত নিয়ে গেছেন, কোন সমাধান পাওয়া যায়নি।এরচেয়ে বেশি সাধ্য স্কুল মাস্টার সাত্তার মিয়ার নেই।
তবে ডাক্তার বলেছেন, যদি ওকে মেঘের ডাক শোনা, বৃষ্টি দেখা থেকে বিরত রাখা যায়, তবে সমস্যা হবে না।
ইদানীং বৃষ্টি নামলে রুবি দরজা-জানালা বন্ধ করে, কানে আঙুল গুজে বসে থাকে।সাত্তার মিয়া দুরেই চেয়ারে বসে থাকেন।মেয়েটা বাজ পড়ার শব্দের সাথে কাঁপতে থাকে, এক সময় বাবার দিকে তাকিয়ে অজ্ঞান হয়ে পরে।

সাত্তার মিয়ার খুব ইচ্ছে করে মেয়ের হাত ধরে বসে থাকে, বলে,"মা,আমি আছি।দেখ, কিছুই হবে না।আমি আছি, ভয় কিসের!চল সবাই মিলে ভিজি।"
বলা হয় না।ছেলেমেয়েদের তার দূরত্ব অনেক।
উনার খারাপ লাগে, মেয়েটি কোন দিন ঝুম বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দ পাবে না!

তিনি রুবির বিয়ে ঠিক করেছেন ডাক্তারের সাথে।ছেলে নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশী, লন্ডন থাকে।উনি সব খুলে বলেছেন, তবুও তারা রাজি।ছেলে বলেছে,লন্ডনে ঝুম বৃষ্টি হয় না, বাজ পরে না।অতএব ভয় নেই।আর ওরা বড় ডাক্তার দেখাবে।

আসলে রাজি না হয়ে উপায় নেই!
তার তিনটা ছেলেমেয়েই দেখতে অসম্ভব ভালো। ওদের মায়ের নাম ছিল অপরূপা, নামেই আচ করা যায় তিনি কেমন রূপবতী ছিলেন। তিনটা ছেলেমেয়ে মায়ের রুপ পেয়েছে।
আকিক তখন খুব ছোট, কেবল স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে।স্কুলে ওর ক্লাসের ছেলেগুলো ওর সাথে মিশতো না, মনে করতো ও মেয়ে।
ও চেইন খুলে দেখালেই কেবল বিশ্বাস করেছে!

৪...
"মন আমার যেন শুকনো নদী
লাগেনা নাও, পাড় হয়ে যাও
ইচ্ছে থাকে যদি....."
কোহিনূর এই গানটা দারুণ গায়।অতটুকু মেয়ে কষ্টের গান গাইবে কেন?
আকিক, কোহিনূর, রুবি একসাথে বসে গান গায়।তিনি দূরে বসে শোনেন। ঐ আসরে তার জায়গা নেই!
তিনটা ছেলেমেয়ে নামই দুস্পাপ্য পাথরের নামে। তাই এদের নিজেদের মধ্যে দারুণ মিল।
সাত্তার মিয়া ওদের সাথে মিশে যাবার চেষ্টা করেছেন, পারেননি!

ওরা বারান্দায় পাটি বিছিয়ে চা খেতে খেতে গান গাইছে।চাঁদের আলোয় তিনটা ছেলেমেয়ের রূপ কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।
তিনি গিয়ে বলেছেন,"মা, আমাকে এক কাপ চা দে।কোহিনূর, একটা গান গা।তুই যা দারুণ গান করিস।তোকে গানের মাষ্টার রেখে দিব।"
মেয়ে গান করেনি,বলেছে,"কোথায় গান করছি, বাবা?"
রুবি চা দিয়ে চলে গেছে, পিছনে চলে গেছে আকিক, কোহিনূর।
তিনি মেয়ের জন্য গানের মাস্টার রেখেছেন, মেয়ে গান করেনি!

ওরা "বহুব্রীহি" নাটক দেখে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে।উনি গিয়ে বসে বললেন,"কি নিয়ে হাসছিস তোরা।দারুণ নাটক নিশ্চয়ই!"
সবার মুখ অন্ধকার হয়ে যায়।আকিকের কাল পরীক্ষা, রুবি বাংলা নাটক দেখে না আর কোহিনূরের কাল ভোরে কলেজ আছে বলে সবাই চলে যায়।

মেয়েদুটো চাইনিজ খেতে পছন্দ করে। আগে তারা একসাথে চাইনিজ খেতে যেতেন, মেয়েরা সব কাড়াকাড়ি করে খেয়ে ফেলতো, তিনি অভিমান করে বলতেন,"তোদের নিয়ে আর আসবো না।আমি কিছুই খেতে পারিনা।"
অপরূপা আর রুবি,কোহিনূর হেসে তাকে জড়িয়ে ধরতো।
তিনি ছেলেমেয়েদের নিয়ে চাইনিজেও গিয়েছেন।কাজ হয়নি!
আকিক যখন ছোট, তখন আগ্রহ করে খেত।এখন ওরা কেউ কিছুই খায় না, খাবার নাড়াচাড়া করে। মুখ ভার করে থাকে।
অপরূপা হাসির গল্প বলে মেয়েদের খুব হাসাতো, তিনি হাসির গল্প জানেন না।জানেন অংকের সব কঠিন সুত্র!ছেলেমেয়েরা তার কাছে অংকও শিখতে চায় না।

এখন ছেলেমেয়েরা একা একাই চাইনিজ খেতে যায়।তিনি গেটে অপেক্ষা করেন।আকিকটা হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে গল্প করতে করতে ফেরে, ঠিক গেটের কাছে এসেই ওদের গল্প শেষ।

ওদের মা চলে সাথে সাথে ওদের সাথে সাত্তার মিয়ার ভালোবাসার সূতোটা কেটে গিয়েছে, তিনি আর জুড়ে নিতে পারেননি। যতই চেষ্টা করেছেন, আরও দূরে সরে গেছেন!

৫....
সন্ধ্যা পেড়িয়ে যেতেই সাত্তার মিয়া অস্থির হয়ে পড়লেন। কোহিনূরকে ডেকে বললেন,"মা, আমার প্যান্ট শার্ট দে।আমি আকিককে খুঁজে আনি।তোর বুবুকেও নিয়ে আসি।"
"বাবা, বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।ঝুম বৃষ্টি নামবে, তুমি বাইরে গেলেই ভিজে একাকার হবে।আর তুমি রাতে ভালো দেখতেও পাওনা।তুমি বিশ্রাম নাও, বারান্দায় শুয়ে থাকো।বুবু ঠিক সামলে নেবে, আর আকিক ফিরে আসবে।"
সাত্তার মিয়া রেগে গেলেন। বললেন,"আশ্চর্য!আমার শিশু ছেলে বাড়ি নেই, রাগ করে কোথায় গেছে জানি না। রাত হয়ে গেল, তোর বুবু এখনো ফিরলো না।আর আমি শুয়ে থাকবো?বৃষ্টিতে মেয়েটা কোথায় আটকে পরবে কে জানে?আমি নাকি বারান্দায় শুয়ে থাকবো!"

উনি রেগে ছাতা ছাড়াই বেড়িয়ে গেলেন। হাঁটতে হাঁটতে সিদ্ধান্ত নিলেন, আগে রুবিকে বাড়ি নিয়ে আসবেন।মেয়েটা বাজ-বৃষ্টি একদম সহ্য করতে পারে না।পরে যাবেন আকিককে খুজতে।
তিনি রুবিকে আনতে মিমদের বাসায় গেলেন। ও নাকি ওদের বাসায় আসেইনি!
উনি চিন্তিত হয়ে পরলেন।
এখনি ঝুম বৃষ্টি শুরু হবে, মেয়েটা গেল কোথায়?

উনি হেঁটে জয়নুল আবেদীন পার্কে চলে এলেন। অপরূপাও মন খারাপ হলে এইখানেই চলে আসতো।হয়তো একটা বেলীফুলের মালা, সিনেমা দেখা, একসাথে চাইনিজ খেতে যাওয়া এইসব নিয়ে কেঁদে একাকার করতো।
কখনো বুঝতে চাইত না, স্কুলের মাস্টার চাইলেই হলে সিনেমা দেখতে পারে না, পার্কে বৌ নিয়ে ফুচকা খেতে পারে না, নদীর পাড়ে বৌয়ের হাত ধরে বসে থাকতে পারে না; এইসব সুখ তাদের জন্য নিষেধ!
তারা বাসায় বসে অংকের সুত্র, ইংরেজির ভার্ব মুখস্থ করবে।এটাই নিয়ম!
অপরুপা রাগ করে পার্কের একদম শেষে জয়নুল আবেদীন জাদুঘরের পাশে বটগাছটার নিচে বসে থাকতো।এখান থেকে নদী ভালো করে দেখা যায়!

রুবি ঠিক বটগাছটার নিচেই একটা ছেলের কাধে মাথা রেখে বসে আছে।বিদ্যুতের চমকে ওর মুখ স্পষ্ট হচ্ছে বারবার। আকাশ ভেঙে ঝুম বৃষ্টি শুরু হল।রুবি কানে আঙুল গুজে দিল, হয়তো চোখ বন্ধ করে ফেললো।
ছেলেটা রুবিকে জড়িয়ে ধরলো। তিনি স্পষ্ট শুনতে পেলেন, ছেলেটা বলছে,"ভয় নেই, রুবি।আমি আছিতো।তুমি চোখ খোলো, ভয় নেই।কোন ভয় নেই।"
কতক্ষণ কেটে গেল, বোঝা গেল না।তিনি দেখলেন রুবি আর ছেলেটা জাত ধরে বৃষ্টিতে ঘুরতে লাগলো।বিদ্যুতের চমকে ওর মুখ দেখা যাচ্ছে, মুখে কোন ভয় নেই।আছে মুক্তির আনন্দ! একদল মানুষ ওদের দিকে তাকিয়ে আছে, সেদিকে খেয়াল নেই।
তিনি সারাজীবন যা কর‍তে পারেননি,ছেলেটা এক নিমিষে তা করে দিয়েছে। এই ছেলে ভালো না হয়ে যায় না!

৬...
আকিক বাবার মাথায় ছাতা ধরে বললো,"বাবা, ভিজছো কেন?চল বাসায় চল।তাড়াতাড়ি চল, বুবুকেও আনতে যেতে হবে।বুবু মনে হয় খুব ভয় পাচ্ছে।এ সময় তুমি সাথে না থাকলে বুবু বেশি ভয় পায়।"
"তোর বুবু আর কোনদিন ভয় পাবে না রে!খাঁচায় বন্দি পাখি একবার মুক্ত হলে সে আকাশে ডানা মেলে, আর কিছুই ভয় পায় না।"

আকিক ফ্যালফ্যাল করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল।বললো,"বাসায় চল, বাবা।"
সাত্তার মিয়া ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন,"আমি বিকালে তোকে শুধুশুধু মেরেছি আব্বা!সবার সামনে লজ্জা দিয়েছি, আমায় মাফ করে দে।"
"আমি কিছু মনে করিনি,বাবা। বাসায় চল, বাবা।আপা ইলিশ-পোলাও রান্না করেছে।সবাই একসাথে খাবো।"

তিনি চোখ মুছলেন।ভাগ্যিস!ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে, নইলে সবাই দেখতে একজন মধ্যবয়সী পিতা আর শিশুপুত্র জড়াজড়ি করে কাঁদছে।নিশ্চয়ই সুখকর কিছু হবার কথা না।
"আকিক আব্বা, আজকে আর বাসায় যাবো না।চল বাপ-বেটা নদীর পাড়ে বালুতে শুয়ে চাঁদ দেখবো। দেখিস, মেঘ ভাঙা চাঁদ কেমন আলো দেয়!এই আলোতে পেপার পড়া যায়।"
আকিকের চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।
"সত্যি বলছো বাবা! তুমি একটু দাড়াও, আমি বুবু, আপাকে নিয়ে আসি।আপা গান গাইবে, বুবু হাসির গল্প বলে হাসিয়ে মারবে।তুমি আমি বালুতে শুয়ে থাকবো, দারুণ হবে!"
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:২৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×