somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গঃ কৃত্রিম জিনোম – কৃত্রিম জীবনের পূর্বাভাস ?

২৯ শে মে, ২০১০ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সূত্রঃ Click This Link

‘‘মাত্র কয়েকদিন আগেই আমেরিকার কিছু বিজ্ঞানী অভূতপূর্ব সাফল্যের ঘোষণা দিয়ে বসল। বিবিসি সংবাদের শিরোনামটি ছিলো এরকম Artificial life break trough announced by scientist। কিছু বিজ্ঞানী কৃত্রিম জিনোম (genome) সৃষ্টির মাধ্যমে কৃত্রিম জীবন সৃষ্টির কাছাকাছি পৌঁছাব আভাস দিলো। এই সংবাদ পরিবেশন হওয়ার সাথে সাথে বিশ্ব ব্যাপি বিজ্ঞান জগতে এক তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বের বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী “সায়েন্স এক্সপ্রেস (Science express)”– এর ২০শে মে সংখ্যায় একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ক্রেইগ ভেন্টার (Craig Venter), একুশ শতকের একজন অন্যতম জিনোম বিজ্ঞানী, এই কৃত্রিম জিনোম আবিস্কারের জনক। ...
ব্যাকটেরিয়া খুবই সহজ এবং মাত্র একটি জিনোম বহন করে। সেক্ষেত্রে মানুষ বহন করে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম, যা খুবই দীর্ঘ এবং জটিল। মানুষের জিনোমে এত বেশী তথ্য আছে যা কৃত্রিম ভাবে তৈরী করা আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব মনে হচ্ছে। কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষের কাছে একসময় হয়তো হার মানতে হবে।
ক্রেইগ ভেন্টার দল অবশ্য দাবী করেছে, এই প্রযুক্তি বায়োফুয়েল, বিভিন্ন রোগের টিকা, ফার্মাসিউটিক্যাল সামগ্রী, পরিস্কার পানি তৈরী এবং খাদ্য সামগ্রী তৈরীর ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন করে দিবে। কিন্তু এর পাশাপাশি অনেক অনৈতিক আবিস্কারের পথ খুলে যাবে। অনেক সমালোচক বলেছেন ক্রেইগ ভেন্টার এবং তার সহযোগীরা স্রষ্টার সাথে খেলছে (Playing God) এবং মানুষের উচিত হবে না নতুন জীবন সৃষ্টি করার কোনো প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকলাম এর শেষ কোথায় সেটি দেখার জন্য ’’

বিষয়টি খুব সম্ভবতঃ আপনারা আগেই পত্রিকাতে দেখেছেন। দর্শনের ছাত্র হওয়া সত্বেও আমি প্রায়ই অকপটে স্বীকার করি, একুশ শতক হলো জীব বিজ্ঞানের বিশেষ করে মাইক্রোবায়োলজী, বায়োকেমিস্ট্রি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর যুগ।

এসব আবিষ্কারের সাথে ইসলামকে সাংঘর্ষিক করে তোলার দরকার নাই। প্রকৃতিই হচ্ছে সকল আবিষ্কারের মূল ভিত্তি। মানুষের আবিষ্কারের মাধ্যমে স্রষ্টার ভূমিকা ম্লান হওয়ার কোন কারন নাই।

আমাদের দেখার বিষয়, মানুষকে আল্লাহ কতটুকু এখতিয়ার দিয়েছেন। নবতর আবিষকারের মাধ্যমেই জানা যাবে মানুষের ক্ষমতা কতটুকো। মানুষের ক্ষমতা যতটুকুই হোক না কেন, তা আল্লাহর দেয়া (অ-আস্তিকদের মতে ‘প্রকৃতি’র)।

মানুষ যে যন্ত্র বানায় মানে অজৈব যা কিছু বানায় তাতো ‘প্রাণ’ আবিষ্কারের মতোই। কোরআন শরীফে জায়গায় জায়গায় বলা হয়েছে, ইসলামী দর্শন মোতাবেক ‘সব’ কিছুরই প্রাণ আছে। সব কিছু আল্লাহর তাসবীহ করে। এমনকি অ-পদার্থ যা তা-ও সত্ত্বাসম্পন্ন জীবন্ত। যেমন মানুষের ‘আমল’ কিয়ামতের মাঠে স্বাক্ষ্য দেবে।

সাধারনভাবে বলা যায়, মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টির ক্ষমতা দিয়েছেন। এর ক্ষেত্র ও সীমা হলো নির্ধারণ করার বিষয়। আমার পেশাগত বিষয় ‘দর্শনে’র দিক হতে কৃত্রিম জিনোম সৃষ্টিকে আমি যৌক্তিকভাবে সম্ভবপর হিসাবে পাই। খৃষ্টবাদের মতো সবকিছুতে ‘গেল গেল রব’ তোলা, ‘অনুমোদন নাই’ বলে খামাকা চিৎকার তোলা অর্থহীন। যা কিছুর প্রতিবাদ করা হবে, তাকে কী বলা হচ্ছে তা আগে বুঝতে হবে।

অবুঝদের অর্থহীন ধর্ম রক্ষার জিহাদে আমি নাই।

আর সায়েন্স ফিকশান মুভিগুলোতে এ সম্পর্কে যা কিছু দেখায় সেগুলো নিছক গল্প মাত্র নয়। আর্টইফিসিয়্যাল ইনটেলিজেন্স-এর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দূর্বল এ.আই. বনাম সবল এ. আই.। সায়েন্স ফিকশান মুভিতে যা কিছু দেখানো হয় তা সব সবল অর্থএ এ.আই.। বাস্তবে বিজ্ঞান এখনো সবল এ. আই. -এ পৌঁছতে না পারলেও অদূর ভবিষ্যতে তা পারবে - এ কথা মানতে আমার দ্বিধা নাই।

সর্বশেষে আমাদের এ কথা মানতেই হবে যে, ইসলাম ও বিজ্ঞানের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব দেখা দিলে প্রথমেই আমাদের সংশ্লিষ্ট ‘বিজ্ঞান’ ভাল করে অবজেক্টলি বুঝতে হবে। এতেই দ্বন্দ্ব না মিটলে ‘দ্বীন’কেও যথাযথভাবে অধ্যয়ন করতে হবে। কারন, নীতিগতভাবে বিজ্ঞানের সাথে ইসলামের বেমিল হতে পারে না। কারন এতদুভয়ের উৎস একই - আর তাহলো প্রত্যাদেশ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×