somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় জঙ্গীবাদ ও নাস্তিকতা সম্পর্কিত দুটি প্রশ্ন ও উত্তর

৩১ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রশ্নঃ তথাকথিত সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গীবাদকে ইসলাম থেকে হঠাবেন কেমনে? তারাও তো টেক্সট ধরে এগুলারে জায়েজ করছে। আর কোন ধর্মকে কে কিভাবে গ্রহন করবে তার সাথে স্থান-কাল ইতিহাসের সম্পর্ক বিদ্যমান। উত্তরঃ বিষয়টি মিস-কোটেশান বা কোটেশান আউট অব কন্টেকস্ট সম্পর্কিত। ইসলামকে যদি ‘‘পুরো-ইসলামের আলোকে না দেখা হয় তাহলে বিভ্রান্তি হবেই। পুরো-ইসলাম বা বাস্তব-ইসলাম হলো সেই ব্যক্তির জীবন, যার কাছ হতে মানুষ ইসলাম জেনেছেন। বলা বাহুল্য তিনি হচেছন মুহাম্মদ (সঃ)। তিনি কিভাবে এই টেকস্ট বাস্তবায়ন করেছেন, তাঁর অনুসারীরা কিভাবে সেগুলো বুঝেছেন- সেটি জানতে ও বুঝতে হবে। ইসলামকে অনুসরণ করতে হবে নবী’র আচরিত পন্থায়। তাই, কোন কাজের রেফারেন্স কোরআনে থাকলেই হবেনা, রাসূল এ ব্যাপারে কি করেছেন সেটি আমাদের জানতে হবে। কোরআন হলো হেদায়াত তথা অনুপ্রেরণার উৎস। ইসলামের কাঠামো হলো মুহাম্মদ (সঃ)এর নবুওতী জীবন তথা হাদীসে রাসূল। কোন বিষয়ে তৎসংক্রান্ত সকল প্রাসঙ্গিক রেফারেন্স-এর প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অতএব, কোন রেফারেন্স সঠিক হলেই সেই কাজ করা বৈধ হতে পারেনা। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রেফারেন্সসমূহকে এবং মুহাম্মদ (সঃ)্র নবুওয়তী জিন্দেগীর ধারাবাহিকতার প্রেক্ষিতকে অবশ্যই বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে। ইক্বমতে দ্বীনের অন্তর্গত ধারাবাহিকতা বা লাইন অব কন্সিসটেন্সীকে বাদ দিয়ে পড়লে সমগ্র কোরআন (নাউজু বিল্লাহ) পরস্পর বিরোধী কিছু কথা-বার্তা ছাড়া আর কিছু মনে হতে পারে না। আবার কনট্কেস্ট-এর ধূয়া তুলে ইসলামের যেসব বিষয় সুবিধাজনক মনে হচ্ছেনা সেগুলোকে তৎকালীন আরব সংস্কৃতির বিষয় বলে ব্যবহারিকভাবে বাতিল করে দেয়াটাও সমর্থনযোগ্য নয়। নিছক তৎকালীন আরব সংস্কৃতির অংশ হিসাবে রাসূল যা কিছু করেছেন তা সুন্নাতে রাসূল(সঃ) হিসাবে পরিগণিত নয়। হাদীস শাস্ত্রে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে।
জঙ্গীবাদের আদি গোষ্ঠী হলো খারেজী সম্প্রদায়। ড. আবদুল্লাহ জাহাঙগীরের এতদসংক্রান্ত ভাল একটি বই আছে। বাংলায়। আমার পড়া বইগুলোর মধ্যে ড. ইউসুফ কারযাভি’র ইসলামিক এওয়েকেনিং বিটুইন রিজেকশান এন্ড এক্সট্রিমিজম খুব ভাল একটি বই।

প্রশ্নঃ ‘‘দর্শনের যুক্তি প্রমান যে কনচেপচুয়াল খোদার কথা বলে সে কি ধর্মের খোদা। না আলাদা?
উত্তরঃ দর্শনের যুক্তি প্রমান যে কনচেপচুয়াল খোদার কথা বলে তা ধর্মীয় অর্থে খোদা বলতে যা বোঝায় তা নয়। আলাদা। ধর্মী য় ঈশ্বর ব্যক্তিগত ঈশ্বর। ব্যক্তিমানুষ ও তার জীবন এই ঈশ্বরের উপর নির্ভরশীল ও ব্যক্তি এই ঈশ্বরের কাছে দায়বদ্ধবোধ করে। আর দার্শনিক খোদা হচ্ছেন তার বাইরে। তিনি জগতের অতিবর্তী, সৃষ্টিকর্তা। মানুষ সাধারনভাবে চরম, পরম, অসীম ধরনের গুণাবলী এই সত্ত্বার প্রতি প্রয়োগ করে। গড, ঈশ্বর, খোদা এই ধরনের শব্দাবলী এই চরম, পরম ও অসীম সত্ত্বার বোঝাতে ব্যবহার করেনা। মানুষের বাস্তব, বিশেষকরে ব্যক্তিজীবন এই দার্শনিক ঈশ্বরের সাথে কোনভাবেই সংশ্লিষ্ট নয়। এই ঈশ্বর প্রকৃতঃই কনছেপচুয়্যাল গড, যাকে আমি বলেছি ফিলোসফিক্যাল গড। সমাজে নাস্তিক হিসাবে নিজেদের পরিচয় দানকারীরা একে বলে প্রকৃতি। বৈশিষ্ট্যগতভাবে এই ফিলোসফিক্যাল বা কনছেপচুয়্যাল গডের সাথে প্রকৃতি’র কোন পার্থক্য নাই। তাই নাস্তিক হলো তাঁরা যারা ব্যক্তি-ঈশ্বরে বিশ্বাস করেনা।
ইসলামের খোদা বিশ্বাসে ব্যক্তিগত ও ফিলোসফিক্যাল উভয় অর্থ প্রযোজ্য।
ইসলাম প্রচলিত অর্থে ধর্ম নয়। তৎকালীন প্রচলিত ধর্মের অনেক কিছুকে ইসলামে বাতিল করা হয়েছে। ইসলামে ধর্মের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে তবে ইসলাম ধর্ম নয়। এটি একটি মতাদর্শ। জীবনাদর্শ। যদিও বর্তমানে কেউ কেউ না বুঝে কেউ কেউ ইনটেনশনালি ইসলামকে ধর্ম হিসাবে ট্রিট করছে, বলছে, লিখছে ...। ইসলাম প্রচলিত অর্থে ধর্মের কি কি বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করেছে; কেন ইসলামকে ধর্ম বলাটা যুক্তিসংগত নয় - এ বিষয়ে স্বতন্ত্রভাবে লেখার ইচ্ছা আছে।
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×