সকাল নিরাবরণ। কিন্তু আমার যাত্রা মোটেই নিরাবরণ নয়। সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ ও সংবাদকর্মীদের সমাজের বিবেক বলা হয়। আমি বলতে চাই- সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ বলা হলেও ইদানিং সমাজের এই দর্পণে সমাজের প্রতিচ্ছবি যথাযথ ভেসে উঠছে না। যথেষ্ট কাদা ময়লা ও স্টীকারের নিচে চাপা পড়ে গেছে সমাজের দর্পণস্বরূপ অধিকাংশ সংবাদপত্র।
আর সংবাদকর্মীদের সমাজের বিবেকক বলা হলেও ইদানিং বাক্যটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সূচনা হয়েছে। আমি চাই বাক্যটির যথার্থ মূল্যায়ন। এছাড়া আমাদের সংবিধান সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার যে নিশ্চয়তা দিয়েছে তার উপকার শুধু গণমাধ্যম নয়, সব মানুষই পাবে।
আমি জানি যাত্রালগ্নের এই স্বপ্ন পূরণ সহজসাধ্য নয়।
আজ নিষ্ঠুর বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ অসহায়, কিংককর্তব্যবিমূঢ়। দূর্নীতির বিষবৃক্ষ ডালপালা বিস্তার করে চোখের সামনে মহীরুহ হয়ে উঠেছিল। নির্লজ্জ স্বজনপ্রীতি কোনো সীমারেখা মানেনি। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উন্নয়নের নামে পর্যটন নগরীর মূল্যবান সম্পদ লুটপাট এবং ভাগভাটোয়ারা করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে কক্সবাজারে যত সংসদ সদস্য এবং জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছে, বলতে দ্বিধা নেই কেউ পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রকৃত উন্নয়নে এগিয়ে আসেনি, সবাই কক্সবাজারের উন্নয়নের নামে মূল্যবান সম্পদ ভাগভাটোয়ারা করেছে। অনেক প্রতিক্ষার পর যে একজন প্রতমন্ত্রী কক্সবাজার পেয়েছিল তার দূর্নীতির কাহিনীতো ইতোমধ্যে দেশবাসীর কাছে রূপকথার গল্পের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। এসব কারণে ভাল মানুষ রাজনীতি থেকে ক্রমশ নিরাপদ দূরত্বে চলে যাচ্ছিল। ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মানুষ দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে রেখেছিল বুকের গভীরে। দুষ্টু রাজনীতির যাতাকলে অসহায় হয়ে পড়েছিল মানুষ। আর সেই অসহায়ত্ব এখন ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। অপরাধী রাজনীতিবিদের পরিণতি দেখে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলছে সাধারণ মানুষ।
সত্যি বলতে কী আমরা সময়ে সময়ে এমন কালপর্ব অতিক্রম করি, যখন ভুল করে হলেও ভাবতে বসি, আমরা কোথায় ছিলাম এবং কোথায় যাচ্ছি?
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই অনেক সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। রাজনীতির চাবুক হাতে যারা পাগলা ঘোড়া ছোটাতে পারেন, তারা ও তাদের দোসররা বিত্ব-বৈভবে ঐশ্বর্যের বরপুত্র হয়ে গেছে। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে, সেরা দূর্নীতিবাজদের তালিকায় অতীতে যারা দেশ পরিচালনা করেছেন তাদের নাম শোভা পাচ্ছে। সারা দেশে ৫০০ জন ক্লীনম্যান পাওয়া যাচ্ছে না।
এ দেশে কোনো সরকার দূর্নীতিমুক্ত ছিল না। সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিযোগিতা চলতো। প্রতিযোগিতায় বার বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেও।
আমি মনে করি- অন্ধকার রাত পেরিয়ে আজকের সূর্যোদয়ের এই ফুটন্ত সকালটির মতো দুর্যোগপূর্ণ সময়টি থেকেও বেরিয়ে আসা সম্ভব।
আর এই সম্ভাবনার জন্যই হয়তো বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের কামনা ছিল। দ্রব্যমূল্যের লাগাম শক্ত হাতে ধরতে না পারলেও স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলছে। সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদদের ভোটার ভোলানোর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি এবং দেশ ও জাতীর প্রতি প্রতারণার পরিবর্তন চায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০০৭ রাত ২:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




