একটা বালতিতে পানি নিয়ে তাতে আস্তে করে হাতের আঙ্গুলটা ডুবিয়ে দিন। পানির ফ্ল্যাট সারফেস উচু-নিচু হয়ে ঢেউ তৈরি করবে। বিজ্ঞানে একে ওয়েভ বলে। ঢেউয়ের একটা উচু পয়েন্ট থেকে পরের উচু পয়েন্ট পর্যন্ত দূরত্বকে বলা হয় ওয়েভ লেন্থ।
বিভিন্ন ওয়েভের ওয়েভলেন্থ সমান না। যেমন, বালতির পানিতে যে ওয়েভ তৈরি হয় তার ওয়েভলেন্থ আর সমুদ্রে পানিতে তৈরি হওয়া ওয়েভের ওয়েভলেন্থ সমান হবে না।
আলোও এক রকমের ওয়েভ। দৃশ্যমান আলো- অর্থাৎ যে আলো আমাদের দেখতে সাহায্য করে তার ওয়েভলেন্থ অনেক ছোট। আমাদের চোখ মোটামুটি ৪০০ ন্যানো মিটার থেকে ৭০০ ন্যানো মিটার এই রেঞ্জে সংবেদনশীল। অর্থাৎ এই রেঞ্জের ওয়েভলেন্থের আলো আমাদের চোখে প্রবেশ করলে তা আমাদের দেখতে সাহায্য করে। ইভোলিউশনের একটা পর্যায়ে আমরা দিবাচর অর্থাৎ দিনের আলোর প্রানি হবার সিদ্ধান্ত নেই। সূর্য্যের অালোর মধ্যে ৪০০ ন্যানো মিটার থেকে ৭০০ ন্যানো মিটার অংশ প্রমিনেন্ট বলে অামাদের চোখ সে ভাবে অ্যাডাপ্ট করেছে। নিশাচর প্রানিদের চোখ অন্য ওয়েভলেন্থে বেশি সংবেদনশীল।
১ ন্যানো মিটার কত বড়? ১ মিটারের ১০০ কোটি ভাগের একভাগকে এক ন্যানো মিটার বলা হয়। সাধারণ ভাবে বলা যায়, আমাদের চোখ যে ওয়েভলেন্থে সংবেদনশীল তা আমাদের চুলের চেয়ে প্রায় ৭০ ভাগ সরু।
সূর্য্যের আলোতে বিভিন্ন ওয়েভলেন্থের ওয়েভ আছে। এদের মধ্যে শুধু ৪০০ ন্যানো মিটার থেকে ৭০০ ন্যানো মিটার ওয়েভলেন্থের ওয়েভ আমাদের দেখতে সাহায্য করে।
আমরা যে বিভিন্ন রং দেখতে পাই তা আলোর ওয়েভলেন্থের কারনে হয়ে থাকে। যেমন ৭০০ ন্যানোমিটারের কাছাকাছি ওয়েভলেন্থের আলোকে আমরা লাল আলো হিসাবে দেখি, আবার প্রায় ৫৫০ ন্যানোমিটার ওয়েভলেন্থের আলোকে আমরা সবুজ আলো হিসাবে দেখি। সুস্থ চোখ ২ ন্যানোমিটার ওয়েভলেন্থের পার্থক্য ধরতে পারে। যেমন, ৫৫০ ন্যানোমিটার আর ৫৫২ ন্যানোমিটার ওয়েভলেন্থের আলোর ক্ষেত্রে চোখ দুটো আলোকেই সবুজ শেড হিসাবে দেখবে কিন্তু দুটো সবুজ যে এক রকম না তাও ধরতে পারবে।
এটা পরিষ্কার যে সূর্য্যের আলো মিশ্র আলো , অর্থাৎ এখানে অনেক গুলো ওয়েভলেন্থের আলো আছে। কখনো কখনো এরকমো হয় যে কোন কোন আলোতে শুধু একটা ওয়েভলেন্থের আলো থাকে। এটাকে মোনোক্রোমাটিক আলো বলা হয় । (বিজ্ঞানের সূত্র অনুসারে পার্ফেক্ট মোনোক্রোমাটিক আলো পাওয়া সম্ভব না, তবে ওয়েভলেন্থের স্প্রেড খুব কম থাকলে তাকে প্রাকটিকালি মোনোক্রোমাটিক আলো বলা যেতে পারে। যেমন, একটা ভাল রুবি লেজারের জন্য ওয়েভলেন্থ ৬৯৪ ন্যানোমিটার থেকে ৬৯৪.৫ ন্যানো মিটারেরে মধ্যে থাকবে। ) উদাহরন হিসাবে বলা যায় সোডিয়াম অালো একটা মোনোক্রোমাটিক আলো। সূর্য্যের আলো, নরমাল বাল্ব বা টিউব লাইটের আলো, মার্কারি ল্যাম্পের আলো- সবই মিশ্র আলো।
মিশ্র আলো থেকে কি মোনোক্রোমাটিক আলো পাওয়া সম্ভব?
হ্যাঁ সম্ভব।
কিভাবে?
ফিল্টার ব্যবহার করে।
ফিল্টার কি?
রঙ্গিন কাঁচ বা রঙ্গিন প্লাস্টিক ফিল্ম।
আগেই বলেছি, সূর্য্যের আলো মিশ্র আলো। এর মধ্যে লাল, নীল, সবুজ, হলুদ- সব রং আছে। যদি সূর্য্যের আলোর সামনে লাল ফিল্টার রাখি, তাহলে এই লাল ফিল্টার শুধু লাল আলো যেতে দেবে,অন্য আলো যেতে দেবে না। কাজেই ফিল্টার দিয়ে দেখলে সব কিছু লাল লাগবে। অনুরূপ নীল ফিল্টার শুধু নীল আলো যেতে দেবে, অন্য আলো যেতে দেবে না। কাজেই ফিল্টার দিয়ে দেখলে সব কিছু নীল লাগবে। সমস্যা হবে লাল ফিল্টার দিয়ে লাল ছাড়া অন্য মোনোক্রোমাটিকা আলোর দিকে তাকালে বা এমন মিশ্র আলোর দিকে তাকালে যাতে লাল আলো নাই। যেমন লাল ফিল্টার দিয়ে যদি সোডিয়াম আলোর দিকে তাকনো হয় বা সোডিয়াম আলো পড়েছে এমন কিছুর দিকে তাকানো হয়। যেহেতু সোডিয়াম আলোতে লাল রঙের ওয়েভলেন্থের ওয়েভ অনুপস্থিত, কাজেই লাল ফিল্টারের মধ্যে দিয়ে কোন আলো যেতে পারবে না এবং সব কিছু কালো দেখাবে। একই ঘটবে যদি সোডিয়াম আলোর সাথে নীল ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। যদি হলুদ ফিল্টার ব্যবহার করি তবে এর মধ্যে দিয়ে হলুদ আলো যেতে পারবে এবং সাদা বা হলুদ জিনিস সব হলুদ দেখাবে, কিন্তু লাল বা নীল রঙের জিনিস কালো দেখাবে।
আমাদের দেশে একটি গোষ্ঠি আছে যারা মুক্তিযুদ্ধের ফিল্টার লাগানো চশমা পরে থাকেন। এই একই রঙের চশমা যারা পরেন তারা এদের চোখে মুক্তিযোদ্ধা, যারা এই ব্রান্ডের চশমা পরেন না তার সবাই রাজাকার।
এদের চশমা অনুসারে খসড়া মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকার লিস্ট দেয়া গেল। পাঠক চাইলে পরে লিস্ট আপডেট করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধা লিস্ট:
১) বিকল্প ধারা মহাসচিব মেজর (অবঃ) আব্দুল মান্নান
২) জনাব বদরুদ্দোজা চৌধুরী
৩) মাহী চৌধুরী
৪)হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ
৫) হাজী সেলিম
৬)জনাব বদি (টেকনাফ)
৭) মিসেস বদি (শাহিনা আক্তার চৌধুরী )
রাজাকার লিস্ট:
১) আব্দুল কাদের সিদ্দিকী
২)ডঃ কামাল হোসেন
৩)কর্নেল ওলি
৪)জাফরুল্লাহ চৌধুরী
৫) আ স ম আব্দুর রব
৬) রেজা কিবরিয়া
৭)মাহমুদুর রহমান মান্না
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৬