১৯৪৭ সালের মে মাসে তিনি জন্ম লাভ করেন। এসএসসি পরীক্ষায় ১৯৬৩ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে রাজশাহী বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে মেধা তালিকায় ১১তম স্থান লাভ করেন । এইচএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪র্থ স্থান লাভ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণ রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন । তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন শহীদ আব্দুল মালেক ।
১৯৬৯ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক সরকার একটি শিক্ষানীতি ঘোষণার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে । শহীদ আব্দুল মালেকে এবং তার সঙ্গীরা ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে জনমত গঠন করতে থাকলেন । ২রা আগষ্ট একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হল । সেই সভায় ক্ষুরধার যুক্তি ও বলিষ্ঠ ভাষণ মিলনায়তনে উপস্থিত শ্রোতাদের মুগ্ধ করল । ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার বিরোধীরাও মরিয়া হয়ে উঠেছিল । ১২ই আগষ্ট ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে প্রস্তাব পাস করার জন্য তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করলো । ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার পক্ষের কয়েক জন ছাত্র আলোচনায় অংশ গ্রহণ করতে চাইল । কিন্তু তাদেরকে সে সুযোগ দেয়া হল না । সভার এক পর্যায়ে শ্রোতাদের পক্ষ থেকে এক আপত্তিকর উক্তির প্রতিবাদ করা হলো । সঙ্গে সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্রীদের রাগ গিয়ে পড়লো ইসলামী আন্দোলনের তরুণ কর্মীদের ওপর এবং স্বাভাবিকভাবেই সর্বাধিক আক্রোশ গিয়ে পড়ল বুদ্ধিদীপ্ত, অকুতোভয়, আপসহীন নেতা আব্দুল মালেকের ওপর । ছাত্র নামধারী ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্রী সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আব্দুল মালেক ও তার সঙ্গীদের তাড়া করলো । তার সঙ্গীরা তখন ছিল মাত্র ২/৩ জন । তার সঙ্গীরা নিরাপদে চলে যেতে পারলেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঝখানে তাকে ঘিরে ফেললো । ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীরা রড, হকিস্টিক, বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুল মালেককে ক্ষতবিক্ষত করে ফেললো । তার মাথার আঘাত এতটাই মারাত্মক ছিল যে অপরেশন করার পরও তাকে বাঁচানো গেলো না। ১৫ই আগষ্ট সন্ধ্যায় তিনি শাহাদত বরণ করেন ।
এভাবেই সন্ত্রাসীদের তান্ডবে ঝরে পড়ল অফুরন্ত সম্ভাবনাময়ী একটি প্রাণ, একজন আদর্শবাদী নেতা, ইসলামের এক অকুতোভয় সৈনিক - শহীদ আব্দুল মালেক ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




