টেমস থেকে সুরমা। হিথ্রো থেকে জিয়া বিমান বন্দর। গাঢ় নীল জলরাশি থেকে সবুজ সারি সারি চা পাতা। কখনো জলে উঠেছে তরঙ্গ আবার সবুজ পাতা শুকিয়ে হয়েছে কাঠ। তবুও সময় চলেছে নিজ গতিধারায়।
আমাদের জীবন থেকে চলে গেছে সতের বছর আট মাস। আশার নীলাচলে ভেসে ভেসে পাড় করেছি সুদীর্ঘ এই সময়। বছরগুলো কেটেছে কখনো চৈত্রের খরতাপে পোঁড়া মাঠির মতো আবার কখনো অমানিষার ঘোর অন্ধকার পথের মতো। তবুও জীবনের শেষ বিকেলে তুমি এলে। শুভ হউক থাকলো ···তোমার আগমনী সব আয়োজন ফুলেল হয়ে উঠুক।
তুমি· · মানে সেই সুন্দর মনের মানুষ যার কাছে আমার আজন্ম অনেক ঋণ। আজ বড় বেশী মনে পড়ছে তোমার চলে যাবার বেলায় আমার প্রতি উচ্চারিত কটি শব্দ··তোমাকে অনেক বড় হতে হবে, আমি যেন সূদূর পরবাসে থেকেও জানতে পারি তোমার কর্ম সমাজ আর জীবনের কথা বলে। তোমার ত্যাগ যেনো হয় আমার জীবনের অহংকার· · আরো অনেক কথা বলেছিলে তুমি। এত বছর পর সব কথা কি মনে আছে।
তোমার যাবার বেলায় আমাকে দেয়া সব প্রতিশ্রুতির রাখতে পেরেছি কিনা জানি না। বিগত দিনগুলোতে তোমার কথা রাখতে গিয়ে হারিয়েছে অনেক কিছু। আবার যা পেয়েছি ··তার সব কৃতিত্ব উৎসর্গ করেছি অদেখা তোমার নামে।
কতকাল দেখিনি তোমায়। তোমাকে দেখবো বলে জীবনের এতগুলো বসন্ত পাড় করেছি।
অবশেষে আজ ( বুধবার ) তুমি এলে। বার্তা বাহক জানালো বিকেল চারটায় নাকি তুমি হিথ্রো থেকে সিলেট বিমান বন্দরে নেমেছো। সাথে সংসার নামের সব আয়োজন। স্বামী, ছেলে,মেয়ে। শুনেছি তোমার মেয়েটা নাকি অনেক বড় হয়েছে। দেখতে কি তোমার মতো নাকি ওর বাবার মতো। ভদ্র লোককে অবশ্য দেখেনি কখনো। শুনেছি খুব ভালো মানুষ।
আর তুমি····আগের মতো কি কবিতা পছন্দ করো। পুরনো দিনের গানগুলো খুব মজা করে শুনতে। এখনো কি শুনো। নাকি সংসারের ভেড়াজালে আটকে ভুলে গেছো গান শুনা। বিদেশ বিভুর ব্যস্ত জীবনে অনেক কিছু ভূলে যেতে হয়। যেমন মাঝে মধ্যে অবলীলায় ভূলে যাও আমাকে।
পরিশেষে বলতে হচ্ছে ...বেলা শেষে তোমাকে একটি বার দেখবো বলে আজো বেঁচে আছি।