গতকাল স্কুলে যাইনি ; মিথ্যে কথা বলে ছুটি নিয়েছিলাম। ফাইনাল খেলার একটা বলও মিস করতে চাইনি। খেলা শুরু হওয়ার আধ ঘণ্টা আগেই টেলিভিশন খুলে বসি। খেলার শুরু থেকেই স্ক্রিনে চোখ গেঁথে বসেছিলাম। পাকিস্তানের এক একটা উইকেট পতনে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করেছি, এক একটা বাউন্ডারিতে নিজের চুল খামচে ধরে আক্ষেপ করেছি। তারপরও উনপঞ্চাশ নাম্বার ওভার পর্যন্ত আমাদের বোলারদের উপর মেজাজ খারাপ হয়নি; মাঝেমধ্যে সামান্য বিরক্ত হয়েছি- এতটুকুই। কিন্তু পঞ্চাশ নাম্বার ওভারে শাহাদতকে দেখেই মেজাজটা খিঁচড়ে গেল, স্পষ্ট বুঝতে পারলাম খারাপ কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। আমার আশংকাই ঠিক হল। ৬ বলে ১৯ রান! শাহাদত রাস্তার বোলারদের চাইতেও নিম্নমানের বল করল। তখনই মনে আশংকা জেগেছিল এই ১৯ রানই হয়ত খেলার সমীকরণ পাল্টে দেবে; তা-ই হয়েছে। এশিয়া কাপ ফাইনালে আমরা পাকিস্তানের কাছে হারলাম মাত্র ২ রানে! স্বপ্নের শিরোপা একটুর জন্য ফস্কে গেল।
আমাদের এই পরাজয় আমাদের কাঁদিয়েছে, আমরা আকুল হয়ে কেঁদেছি। কিন্তু খেলোয়াড়দের উপর আমরা অসন্তুষ্ট হইনি (শাহাদত ছাড়া)। যারা ভারত শ্রীলংকার মত দেশকে হারিয়ে আমাদের দেশকে এশিয়া কাপের ফাইনালে নিয়ে গেছে, পাকিস্তানের মত দলের সাথে বাঘের মত লড়ে হেরেছে তাদের প্রতি আমাদের শুধু গর্ব, শ্রদ্ধা আর ভালবাসা আছে- অসন্তুষ্টি নয়।
কিন্তু এসবের ব্যতিক্রম শাহাদত। আর কারও কথা জানিনা, শাহাদতের শেষের ঐ ওভারের জন্য ওকে আমি কখনই ক্ষমা করব না। খেলা শেষ হওয়ার পর আমার বন্ধু সুমন দাঁতে দাঁত ঘষে বলেছিল, শাহাদতরে একটু জুতাইলে শান্তি পাইতাম!
এমন পরিস্থিতিতে কেউ যদি এরকম কথা বলে তাকে কী দোষ দেয়া যায়?