somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাকরুদ্ধ স্বাধীনতা

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটথেকই অনেকের মুখেই আমার দ্বায়িত্বহীনতার জন্য "কেয়ারলেস ছেলে" শব্দটা শুনতে হয়েছে।নিজেও গর্ববোধ করি এই শব্দটার জন্য।কুকুরের লেজ কি আর সহজে সোজা হয়!

সকালে ঘুম থেকে ওঠে দেশ ট্রাভেলস্ এর কাউন্টারে গেলাম।আমার এক ভাইয়ার টিকিট কাটতে।সাথে আমার এক বন্ধু ছিলো।
আসার সময় টিকিট পকেটে রাখায় ঘামে ভিজে ছিঁড়ে গেছে প্রায়।তাই মনটা একটু খারাপই হলো নিজেকে আরেকবার দ্বায়িত্ব জ্ঞানহীন প্রমাণ করে।
তো ওকে বাসায় নামায় দিয়ে আসার জন্য গ্রেটার রোডের দিকে যাচ্ছিলাম।বিভিন্ন রকম কথা বলতে বলতে যেমন:রাজনীতি,কোথায় ভর্তি হবো এইচ.এস.সি পাশ করে,ভবিষ্যত পরিকল্পনা ইত্যাদি।

তারপর সিটি কর্পোরেশন চত্তরটা পার হওয়ার পর দেখছি একজন বৃদ্ধ প্রায় মানুষ ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছে।শুধু ভ্যান চালালে হতো।ভ্যান এ ওভারলোডে খুব ভারি হয়ে ছিলো স্টিলের পাতগগুলোয়।তিনি ঘামে এতটাই ভিজে গেছেন যেন একজন মানুষ গোসল করলেও এতটা ভিজে যায়না।
আমি কিছুটা বাকশূন্যই হয়ে গেলাম।কি ভাববো কি যে করি!বাস্তবতা এই চোঁখের মৃদু জলের কোন দাম দেয়না।তিনি দেখলাম আর না পেরে রাস্তার ফুটপাতের উপর বসলেন।

একটু দূরেই বন্ধুর বাসা।ওকে নামিয় দূর থেকে আমি স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ দেখছিলাম।
আমার বিবেক বলছিলো কিছু একটা করতে।তা করেছি।সেইটা এখানে লেখার প্রয়োজন মনে করছিনা।অল্প সামর্থে যা করা সম্ভব ছিলো তাই করছি।তবে এইরকম ক্ষণস্থায়ী কিছু করে আমি জানি কোন লাভ নেই।
তার সাথে কিছুক্ষণ কথাও বললাম।সকালে নাস্তা করতে ভুলে গিয়েছিলাম একসাথেই নাস্তা করলাম।একটু দোয়াও চেয়ে আসলাম।মিষ্টি একটা হাসি।সন্তানরা যে যার মতো ব্যস্ত যার জন্য আজও তার এই পেষায় দিন চলে কোন রকমে।
চলার পথে এ রকম।কয়েকজনের সাথেই দেখা হয়েছে।আমার স্বভাবের জন্য।হয়তো দ্বায়িত্বহীন ছেলেটার এটাও একটা বদ অভ্যাস।হয়তো আবার কোন একদিন দেখা হয়ে যাবে।
তারপর দেশ ট্রাভেলস এর কাউন্টারে কথা বলে।টিকিটটা রিপ্লেসমেন্ট করে নিয়ে আসলাম।

মনটা খুব খারাপ।আচ্ছা রাস্তা দিয়ে উনার পাশে দিয়ে এত মানুষ যাচ্ছে কারো কি চোখে পড়েনা!কাঁচ ঢাকা গাড়িগুলোর ভেতর থেকেও কি কিছু দেখা যায়না!

মুক্তিযোদ্ধায় শহীদ আত্মা কি আজ শান্তি পাবে!তাদের সোনার দেশ গড়ার স্বপ্ন কি এভাবেই ধূলিসাৎ হয়ে যাবে!নতুন করে বলার কিছু নাই দেশের জন্য কিছু করার প্রাপ্য প্রাই সবাই এইরকমই পায়।

আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।জানিনা জীবনে কখনো কিছু করা সম্ভব হবে কিনা।

দারিদ্রতার একটা সীমা আছে।যেই দেশে দারিদ্রতার সীমার নিচে মানবেতর জীবনযাপন করে হাজারো মানুষ।সেই দেশে আমি বুঝিনা যে দেশ পরিচালনার অংশে যারা দ্বায়িত্ব নিয়েছেন।তারা কিভাবে তিনবেলা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ,ডিনার,বের্কফাস্ট করতে পার!
দিনে তিনবার করে এই সাধারণ মানুষগুলোর কাছে মাফ চেয়ে গেলেও তারা অপরাধী হয়ে থাকবে।

সবাই এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় ব্যস্ত।কিন্তু এই ডিজিতালতার জালে শুধু এইসব মানুষগুলো ধরা পড়েনা।
কি হবে কি ডিজিটাল দিয়ে যদি মানুষের পেটে একমুঠো ভাতই না জোটে!

একটি কোনায় ছোট্ট একটা দেশ এই বাংলাদেশ।কিন্তু এর ইতিহাস ও সৌন্দয্য অন্যান্য বড় রাষ্ট্রগুলোকেও হার মানিয় দেয়।

আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা মাথা উচুঁ করে গর্ব করতে পারি যে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।অথচ স্বাধীনতা রক্ষায় একদম ব্যর্থ।
মুক্তিযোদ্ধাদের শহীদ ও গাজীদের চমৎকার উপহার এই দেশের পক্ষ থেকে।
হায়দার আলির একটা গানের কথা মনে পড়ছে "ত্রিশ বছর পড়েও আমি স্বাধীনতাকে খুঁজছি"
আজ ৪২বছর পরেও তারা গানের সেই স্বাধীনতাকেই খুঁজে চলেছে।পাশ্বে দাড়ানোর মতো কেউ নেই!

আচ্ছা আজতো সেই ইংরেজ পাকিস্তান এই দেশে নেই।তবুও কেন আমাদের এইরকম স্বাধীনতাটাকে দেখতে হলো!
অভিজাতকে জাত হিসেবে দেখতে চাই।
১৬ই ডিসেম্বরে রঙিন লাল সূর্য আবার কবে দেখবো!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×