ছোট থাকা সময় ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা ছিলো।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।আরেকটু বড় হওয়ার পর ভাবতাম এ নিয়ে ডিগ্রিধারী হবো।
.........
বাজারে আব্বুর সাথে যখন যেতাম কোন খেলনা দেখলে সেইটা আমার চায়ই চায়।আর পেতামো সাথে সাথেই।
তবে যতদূর মনে পড়ে সব খেলনাই চাইতাম না।যেগুলো একটু আকর্ষণীয় বা বিজ্ঞানের মার প্যাচ আছে সেইগুলোই চাইতাম।
আমার আসলে খেলনাটার উপর আগ্রহ ছিলোনা, আমার আগ্রহ ছিলো জানার যে ওটার ভেতরে কি আছে!! আর তাই বাসায় আনার পর ওটা খুলে দেখার চেষ্টা করতাম যে ওটার মধ্যে কি আছে!কিভাবে তৈরি?
খুলে যখন সম্পূর্ণ রিপ্লেস করতে পারতামনা তখন যদি ওটার মটর বা লাইট থাকতো তাহলে ওগুলো খুলে রাখতাম।এইটা ছিলো আমার স্বভাব।
............
যাইহোক ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কথায় আসি।
ক্লাস ফোরে পড়ি সম্ভবত।তা টিভির রিমোটে Mute নামে একটা বাটন আছে।আর ঐ বাটনে লাল চিহ্ন দিয়ে টিভির চিহ্নের উপর ক্রস চিহ্ন দেওয়া আছে।আমি Mute শব্দের অর্থ যা জানতাম। অর্থগতদিক দিয়ে আর চিহ্নের দিক থেকে আমি ভাবতাম বাটনটা চাপ দিলে বুঝি টিভি ব্লাস্ট হয়ে যাবে।(কার্টুন দেখে কল্পনার এই অবস্থা)
টিভি কেনার পর প্রায় ৬-৭মাস ঐ বাটনে ভয়ে হাতই দিইনি।
একদিন বাসায় কেউ ছিলোনা।আমি মেইন দরজাটা খোলা রেখে(যেন দৌড়ে পালাতে পাড়ি) সাহস করে বাটনটায় চাপ দিলাম কানে আঙুল দিয়ে।দেখি টিভির সাউন্ড হচ্ছেনা।আমারতো ভয়ে প্যান্ট ভিজে যায় অবস্থা হয়ে গিয়েছিলো।তা সেইদিন থেকে সম্ভবত আমার ইলেকট্রেনিক ব্যাপারগুলো থেকে ভয় প্রায় উঠে গিয়েছিলো।
..........
আমাকে কম্পিউটার বিষয়ক 'ক' কেউ হাতে কলমে শিখিয়েছে এমন মানুষ দুই একজন ছাড়া সংখ্যাটা খুব কম।মনে পড়ে।
এমনকি কম্পিটারটা যেইদিন কিনে আনি (সত্যিবলতে আমি কম্পিউটার কখনো খোলা লাগানো করিনি)সেইদিন নিজেই কম্পিটারটা সব সেটিংস করেছিলাম।
অনেকেই বলতো আমাকে ডাকিস লাগিয়ে দিবো।জানি নিজে লাগিয়ে দূসাহসিকতার কোন কাজ করিনি।
তবে আমি জানতাম কম্পিটারটা এমনভাবে তৈরী নয় যে আমার কোন ভুল হলে একেবারে ব্লাস্ট হয়ে যাবে।যেইটা আমি Mute শব্দটা থেকে জেনেছি। :-)
তবে এইপর্যন্ত পিসির চোদ্দটা বেজেছে অসংখ্যবার কখনো processor সমস্যা,কোনদিন Ram এ কোনদিন Power Cord পুড়ে গেছে।আবার কোনদিন বা মনিটরের Resolution কমে বা বেড়ে গেছে কখনো রোলেট হয়ে গেছে।কখনো Windows সমস্যা ইত্যাদি.....
কিন্তু এইসব সমস্যাগুলো এমনি হয়নি।দোষ সম্পূর্ণ আমার।নিজে নিজে ঘাটাঘাটি করেছি আবার যখন শিখেছি খুটিনাটি ব্যাপারগুলো তখন কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো ভুল হয়নি আর।
........
সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে ঘটনা ভিন্ন নয়।বারবার পড়ে যেতাম আর সবাই হাসতো।তো আমিকি সাইকের চালানো শিখিনি!
অনেক কাজ ভয়ের মধ্যেই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।বাস্তব জীবনেও আমি যদি ভয়ে ব্যাপারগুলো কখনো ঘেটেই না দেখতাম।তাহলে হয়তো কখনো জানা হতোনা যেকোন ছোট বিষয়গুলোও।(এখনো কিছুই জানিনা)
বিজ্ঞানে ভালোনা তাই বাধ্য হয়ে কমার্স নেওয়া।বিজ্ঞান মানে সাধারণ বিজ্ঞান।জগা খিচুরি মার্কা বই।পড়ালেখা মানে তুমি যদি ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাও তাহলে তোমাকে সব বিষয়ে ভালো হতে হবে ফিজিক্স কেমেস্ট্রিতেও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত।
আর যদি বায়োলজিতে ভালো করে ফিজিক্সে বা সমাজে ফেল করে বসো তাহলো তোমার সব ইচ্ছা স্বপ্ন ভেজতে গেলো।
দেখুন একটা বিষয় কি একজন ফার্মেসির দোকানদারও না জানে কোন রোগে কি ঔষধ লাগবে।কিন্তু সমস্যাটা হলো তার প্র্যাক্টিকালি ধারণা থাকলেও তার যেহেতু সার্টিফিকেট নাই সুতরাং সে ডাক্তার না।তবে এইটা স্বীকার করছি কিছুটা ব্যাবধান তো অবশ্যই আছে।
..........
আমার ব্যাপারটাও তাই আমি কম্পিটারের যা জানি তা ঔ ফার্মেসির দোকানদারের মতো করে শিখতে আছি ধীরে ধীরে।আমি যদি কম্পিটার ইঞ্জিনিয়ারের থেকেও বেশি জেনে ফেলি এইভাবে আমার যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি নাই তাই আমি মোটেও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বলে বিবেচিত হবোনা।কিন্তু তাতে কি হয়েছে!
..............
কম্পিউটারে ইন্টারনেটে এই কাজ ঐ কাজের মতো বাস্তব জীবনেও বিভিন্ন কাজে কখনো একাই উদ্দ্যোগ নিয়েছি আবার কখনো কাউকে সঙ্গে নিয়ে।
তবে শতকরায় ৯৯.৯ বারই ব্যার্থ হয়েছি।কিন্তু একটা বিষয় কি ঠুক ঠুক যে যে কাজগুলো করেছি সবকিছুরই সামান্য অভিজ্ঞতাটুকু হয়েছে।অভিজ্ঞতা জীবনে অনেক বড় জিনিস।
আমি বলতে চাইছি অনেকে ভয়ের কারণে পারেনা বিল গেটস্ কে কল্পনা না পারে জুকারবার্গের মতো কিছু করতে।
আমি না পারি কিন্তু নিজের মতো চেষ্টা করতেতো সমস্যা নাই।আর আশে পাশে দুই একটা পশুতো চিল্লাবেই।আর আপনিও কি তাদের কথামতো চিলে কান নিয়ে গেছের মতো দৌড়াবেন?!!!!
আর এই যে রেজাল্ট সিট্ A+ পাওয়া না পাওয়া ক্ষণিকের আনন্দের বিষয়।বা ভার্সিটিতে চান্স না পেয়ে আবেগপ্রলুদ্ধ হয়ে কারো জীবন থেমে যায়না।
জীবনটা এমন নয় যেন অংকের মতো পজেটিভ নেগেটিভে নেগেটিভই হবে।
জীবনে সব কিছুই সম্ভব।কারণ দেখুন আপনি মাটিতে দাড়িয়ে আকাশের দিকে একটু লাফ দিয়ে ছোয়ার চেষ্টা করুণ।পারবেনা তা কখনোই সম্ভব না।
উড়োজাহাজ বা রকেট আবিস্কারকরা কি আপনার মতো লাফ দিয়েই সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলো?চেষ্টা করেছেন বারবার হাজারো ব্যার্থতার মাঝে থেকে।
একবার টমাস আলভা এডিসনের কথাই ভাবুন যে মানুষটা ১০হাজার বার ব্যার্থ হয়েই আজ তার আবিস্কারের বৈদ্যুতিক বাতির আলো দেখতে পারছি আমরা।
আমি ইতিবাচক চিন্তা খুব কমই করতে পারি।তবে আমি এইটা জানি যে পৃথীবিতে সব কিছুরই পজেটিভ ও নেগেটিভ দিক আছে।আমি পজেটিভ চিন্তা খুব কমই করতে পারি।
কিন্তু ধৈর্য্যের সহিত ইতিবাচক চিন্তা করার চেষ্টা করছি বা করছি এটাই আমার কাছে পজেটিভ বা বড় কিছু পাওয়া নিজের কাছে থেকে।