একদিন বিজ্ঞান ক্লাসে স্যার বললেন-
‘তোমরা যে প্রায়ই রাতেরবেলা আকাশ থেকে আলো ঝরে পড়তে দ্যাখো
লোকে যাকে তারা খসে পড়া বলে, আসলে তা উল্কাপিণ্ড।
উল্কাপিণ্ড হচ্ছে গ্রহাণু কিংবা ধুমকেতুর অংশ, যা মহাকাশে পরিভ্রমণ করতে করতে
হঠাৎ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, আর বায়ুর সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে আলো জ্বলে ওঠে।’
অতীন মনোযোগ সহকারে স্যারের কথা শুনলো
পরীক্ষায় লিখলোও ভালো, নম্বর পেল দশে দশ।
দীপাবলির দিন অতীনের বাবা-মায়ের দীক্ষাগুরু এলেন বাড়িতে
রাত্রে সারাবাড়িতে প্রদীপ জ্বালানো হলো
খাওয়া-দাওয়ার পর উঠোনে পাটি বিছিয়ে গুরুদেবের তত্ত্বকথা শুনতে বসলো সকলে,
হঠাৎ একটা আলোকোজ্জ্বল উল্কাপিণ্ড নিচের দিকে পড়তে দেখে গুরুদেব বললেন-
‘দ্যাখো, দ্যাখো, দীপাবলির রাতে ঈশ্বর পৃথিবীতে আলো দিলেন!’
এই বলে তিনি উল্কাপিণ্ডের দিকে প্রণাম করলেন করজোড়ে
শিষ্যরা সবাই তাকে অনুসরণ করলো, অতীনও।
কিছুদিন বাদে অতীনদের বাড়িতে পদধূলি দেওয়া একজন জটাধারী সাধু বললেন-
‘রাতেরবেলা তোমরা যে তারা খসে পড়তে দ্যাখো, আসলে তারা দেবতা
স্বর্গ থেকে দেবতারা পৃথিবীতে আসেন মানুষের গর্ভে জন্ম নিতে,
দেবতাদের পৃথিবীতে আগমনকালে যদি ভক্ত ভক্তিভরে কিছু চায়
তবে দেবতারা ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন!’
অতীন অন্তত তিনবার নিন্মগামী উল্কাপিণ্ডকে দেবতাজ্ঞান করে
ভক্তিভরে সুলেখাকে প্রেমিকা হিসেবে প্রার্থনা করেছিল,
সুলেখা এখন দুলাল মহুরীর সংসারে দুই সন্তানের জননী,
আবার গর্ভবতী।
ঢাকা
১১.০২.২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৪৫